পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্য। ] অগ্রসর হইল। শ্রীকান্ত যে তাহার জন্য কতখানি ঝক্কি মাথায় করিয়া লইল তাহ ভাবিতে ভাবিতে শৈলজা ভ্রাতাকে অমুসরণ করিল। গাড়ীতে বসিয়া শৈলজা জিজ্ঞাসা করিল—“কোথাকার টিকিট করলে, শ্ৰীকান্ত ;" গিরিডি যাওয়াটা যে এত সহজে হইবে এ কথা বুঝি শৈলজার তখনও বিশ্বাস হইতেছিল না। শ্ৰীকান্ত যেন ভরসা দিয়া কহিল—“গিরিডির ।” লিলুয়া ছাড়িয়া গেলে শ্ৰীকান্ত জিজ্ঞাসা করিল— “সেজদি, তুমি কি করে কিরণ-বাবুর অমুখের খবর পেলে ? তিনি কি চিঠি লিখেছিলেন ?” “বাবাকে একখানি পত্র দিয়েছিলেন । বাবা মাকে পড়ে শোনাচ্ছিলেন, আমি পাশের ঘরে ছিলাম, তাই শুনতে পেয়েছিলাম।” “কি লিখেছিলেন কিরণ-বাৰু?” লিখেছিলেন—ডাক্তার বলেছেন, জীবনের আশ। নেই। গিরিডিতে কিছুদিন থেকে একবার দেখবেন । মেজদির বাসায় উঠবেন ; তার পর সুবিধামত অন্য বাসায় যাবেন । যদি মন ভাল থাকে এবং শরীর কিছুদিন টিকে তা হলে ওখানেই থাকবেন । ভাল না লাগলে ওখান থেকে পুী যাবেন । যাবার পথে কলকাতা হয়ে যাবেন ।” “বাবা বুঝি এই পত্র পেয়ে তোমায় শীগগির পাঠিয়ে দিলেন ?” অনেকখানি লজ্জা পাইয়াই শৈলজা বলিল—“তাই হবে ।” বলিয়া অন্য দিকে মুখ ফিরাইল । শরতের মেঘমুক্ত নিৰ্ম্মল আকাশ। পশ্চিম দিক্‌ তখন অস্তগামী সুৰ্য্যের রক্তিম কিরণে রঞ্জিত হইয়া ছিল। তাহার রঙীন আভা শৈলজার মান মুখের উপর পড়িয়াছিল। সে ভাবিতেছিল ও কল্পনাচক্ষে দেখিতেছিল গিরিডির একটি সুন্দর স্বসজ্জিত ভবনে একজন তাহার সমস্ত গৌরব সমস্ত ক্ষমত দিয়া জীবনের চিত রচনা করিতেছে । সেই ত সেদিন তাহার জীবনের স্বৰ্য্য পূৰ্ব্ব গগনে প্রতিভাত হইতেছিল । ইহারি মধ্যে তাহার পশ্চিম গগনে যাইবার , , সময় হইয়া আসিল ? ভোরের বাতাস TarunnoBot (আলাপ) ১৩:২০, ১২ এপ্রিল ২০১৬ (ইউটিসি)്TarunnoBot (আলাপ) ১৩:২০, ১২ এপ্রিল ২০১৬ (ইউটিসি)്TarunnoBot (আলাপ) ১৩:২০, ১২ এপ্রিল ২০১৬ (ইউটিসি)ാ ৩২৩ . ধীরে ধীরে অন্ধকার নামিয়া আসিতে লাগিল{ আলোকিত গাড়ীর ভিতর হইতে বাহিরের অন্ধকার বড়ই গাঢ় দেখাইতেছিল। রক্তিম মেঘের কোন চিত্র তখন আকাশে কোথাও ছিল না । একটা নিশ্বাস ফেলিয়া শৈলজা ভাবিল—হঠাৎ এমনি করিয়া কি—র্তাহার জীবনের সন্ধ্যা নামিয়া আসিয়াছে ? কথাটা মনে হইতেই শৈলজা শিহরিয়া উঠিল । २ ) সকালে চা-পান-রত স্বামীর সঙ্গে বিরজা গৃহস্থালীত্ব কথাবাৰ্ত্ত কহিতেছিল, এমন সময় বাহিরে চলন্ত ঘোড়ায় গাড়ীর শব্দ তাঁহাদের গেটের সম্মুখে আসিয়া থামিল বলিয়া মনে হইল । • ? বিরজা কান পাতিয়া বলিল—“হুল গী, গাড়ীখানা এখানেই থামূল না ?” * স্বামী ইহা অনুমোদন করিতে না করিতে বিরজী মেয়েকে বলিল—“দেখ তে রাণী, কে এল।” রাণী বলিয়া মেয়েটি ধরের ভিতরের দিক্কার বারানদায় একখণ্ড পাথরের উপর ইট ঘষিয়া ঘষিয়া খেলা' ঘরের রান্নার মস্লা পিষিতেছিল। মায়ের কথা শুনিয়। মসলা পেষ। অসমাপ্ত রাখিয় ছুটিয়া বাহিরের দিকে আসিল । একটু পরেই রাণীর মিষ্ট তীক্ষ্ণ গলা গুন। গেল—“ও (, সেজ মাসিম এসেছেন, ছোট মামা এসেছেন, -8 li !” “সত্যি নাকি ! দেখি”—বলিয়া গৃহস্থালীর প্রসঙ্গ চাপ দিয়া বিরজা তাড়াতাড়ি বাহিরের দিকে আসিলেন । “তুমি যে রাণীর মা তা তোমার হাটনি দেখে স্পষ্ট্র বোঝা গেল”—বলিয়া বিরজার স্বামী অমরনাথ মৃদু হাসিয়া চায়ের বাটিতে একটা বড় গোছের চুমুক দিয়া জানালার দিকে সরিয়া আসিলেন । একটু পরেই রাণী ও বিরজার পশ্চাতে শ্ৰীকান্ত ও শৈলজা আসিয়া অমরনাথকে প্রণাম করিল। অমরনাথ প্রফুল্ল মুখে শৈলজার মাথায় হাত দিয়া আশীৰ্ব্বাদ করিলেন—“অত্যন্ত অতিরিক্তভাবে স্বামীসোহাগিনী হও ; হাতের লোহা এবং সোনা অক্ষ{ হোক ৷”