পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবিধ প্রসঙ্গ ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভায় স্বরাজ্যদলের কাজ ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভার সভ্যনিৰ্ব্বাচন শেষ না হইয়া গেলে বুঝা যাইবে না, কোন দলের কত লোক ইহার সভ্য হইলেন । স্বরাজ্য দলের নেতারা বলিয়াছেন, র্তাহার প্রথমে গবর্ণমেণ্টের নিকট পূর্ণ স্বরাজ্যের দাবী করিবেন। এই দাবী মঞ্জর হইলে ভাল, নতুবা তাঙ্গর গবর্ণ মেন্টের সকল কাজের বিরোধিত। দ্বারা ব্যবস্থাপক সভাগুলি আচল করিয়া দিবেন। যদি স্বরাজ্য দলের এত বেশী লোক ভারতীয় ব্যবস্তাপক সভার সভ্য নির্বাচিত হন, যে, সরকারী সভ্য, মনোনীত সভ্য এবং মডারেট সভ্যেরা দল বাধিয়াও সংখ্যায় তাহাদের চেয়ে বেশী না হন, তাহা হইলে স্বরাজ্য দল বিরোধিতা দ্বারা ব্যবস্থাপক সভার কাজ আচল করিতে পারিবেন । কিন্তু তখনও গবর্ণমেণ্টেব কাজ আচল হইবে না । গবর্ণর-জেনারেল নিজের ভাবতশাসন-সংস্কার আইন অনুযায়ী ক্ষমতার প্রয়োগ দ্বারা কাজ চালাইতে পারিবেন। কিন্তু ভারতশাসন-সংস্কার আইনের উদ্দেশ্য এই, যে, ব্যবস্থাপক সভার সাহায্যে দেশের শাসনকাৰ্য্য নির্বাহিত হয় । স্বরাজ্যদলের অভিপ্রায় সিদ্ধ হইলে আইনের ঐ উদ্দেশ্য ব্যর্থ হইবে । স্বতরাং ব্যবস্থাপক সভার কাজ আচল করিতে পারিলে স্বরাজ্যদলের ঘোষিত প্রথম উদ্দেশ্য সিদ্ধ হইবে, বলা যাইতে পারে । কিন্তু ব্যবস্থাপক সভা অচল হইলে এবং বড়লাট নিজের আদেশ দ্বার। শাসন-কাৰ্য্য চালাইতে বাধ্য হইলে স্বরাজ্যদলের মুখ্য উদেশ্ব সিদ্ধ হইবে, এমন বলা যায় না । র্তাহাদের মুখ্য উদ্দেশ্য “স্বরাজ" লাভ। ব্যবস্থাপক সভার যতটুকু ক্ষমতা ও অধিকার আছে, তাহাকে স্বরাজ বলা ষায় না ; তাহ সামান্য। দেশের লোকের অধিকাংশেরই প্রতিনিধি নিৰ্ব্বাচনের ক্ষমতা নাই, অতি অল্পসংখ্যক লোকের অাছে । তাহার যে-সব প্রতিনিধি নির্বাচন করেন, তাহদের ক্ষমতাও কম। স্বতরাং ইহা ঠিক, যে, বর্তমান ব্যবস্থাপক সভা গুলির দ্বারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় নাই ৷ পক্ষান্তবে ইহাও ঠিক, যে, ব্যবস্থাপক সভার সভাদের ক্ষমতা যত কমই হউক, কিছু ক্ষমতা তাহদের আছে, এবং গণতন্ত্রেব স্বত্রপাত হইয়াছে। যদি ব্যবস্থাপক সভা আচল হইয়া যায়, তাহা হইলে নিৰ্ব্বাচকদের প্রতিনিধিদের এই ক্ষমতাটুকুও থাকিবে না। ইহার ফল দুই প্রকার হইতে পারে । তাহার আলোচনা করিবার অাগে দেথা যাকৃ, গবর্ণর-জেনারেল স্বরাজ্যদলেৰ স্বরাজের দাবী গ্রাহ করিলে কি ফল হইতে পারে। এই দাবী ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভায় একটি গহীবের আকাবে উপস্থিত করিতে হইবে । প্রস্তাবটির পক্ষে অধিকাংশ সভ্য মত দিলে উই গবর্ণর-জেনারেলের নিকট সাইবে । সকৌন্সিল গবৰ্ণর-জেনারেল উহার অমুমোদন করিতে পারেন, না করিতেও পারেন। কিন্তু তিনি অনুমোদন করিলেই ভারতবর্ষ স্ববাজ পাইবে না। ভারতবর্ষকে আইনে ব দ্বারা স্বরাজ দিবার মালিক ব্রিটিশ পালেমেণ্ট । বড়লাট তাহার অনুমোদন সহ প্রস্তাবটি ভারত-সচিবকে পাঠাইবেন । সকৌন্সিল ভারতসচিবের উহ! পছন্দ হইলে তিনি উক্ত ব্রিটিশ মন্ত্ৰীসভায় উপস্থিত করিবেন । মন্ত্রীসভা উহার অনুমোদন করিলে বর্তমান ভারতশাসন আইন অবিশুক-মত পরিবর্তন করিবার জন্য একটি আইনেব খসড়া প্রস্তুত করিয়া তাহ পালেমেণ্টে উপস্থিত করিবেন । পালে মেণ্টে ঐ খসড়া আইনে পরিণত হইলে তদনুযায়ী স্বরাজ ভারতবর্ষ পাইতে পরিবে । অতএব দেখা যাইতেছে, যে, নুতন ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভায় স্বরাজ্যদল স্বয়ং কিম্ব অন্যান্য দলের অবিলম্বে-স্বরাজপ্রার্থী সভ্যদিগের সহিত মিলিত হইয়া সংখ্যাভূয়িষ্ঠ হইলেও, আরো অনেক অমুকুল অবস্থা ঘটিলে, তবে আইনের পথে স্বরাজ লাভ ভারতবর্ষের পক্ষে সম্ভব হইতে পারে। যাহা এতগুলি “যদির” উপর নির্ভর করে, তাহার বেশী প্রত্যাশ না করাই ভাল ।