পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ? “হায় মা ভারতি, চিরদিন তোর কেন এ কুখ্যাতি ভবে ? যে জন সেবিধে ও রাঙ্গাচরণ, সেই সে দরিদ্র হবে।’ কিন্তু অর্থসম্পদবিহীন হয়েও ত তারা কেউই বাগেীর লেবাস্ত্ৰত ত্যাগ করেন নি। তার হেতু এই যে, মাহব কেবল রুটি খেয়েই বঁাচে না—অন্নময় কোষের স্কুল আবরণের মধ্যে জ্ঞান-বিজ্ঞানের ও আনন্দের সূক্ষ্ম কোষগুলি নিহিত রয়েছে, তারাই আমাদের জীবনী-শক্তির পুষ্টিসাধন করে । অতএব পেটে ভাল করে খেতে না পেলেও এমন একটা রসাস্বাদনের শক্তি অর্জন করা যায় যা মনটাকে সৰ্ব্বদা নবীন, উদ্যমশীল, আশান্বিত, উৎসাহপূর্ণ করে রাখে ; তাকে নীরস, মৃতপ্রায়, নিরুদ্যম ও ভগ্নোৎসাহ হতে দেয় না। এটা কি একটা পরম লাভ নয় ? কঠোপনিবদের ভাষায়, আমাদের মধ্যে অধিকাংশই যখন শ্রেয় অপেক্ষ প্রেয়কে বরণ করে নিয়ে বিত্তময়ী শৃঙ্ক। অর্থাৎ পথে মজ্জমান হয়ে পড়ি, তখন যদি এমন একটা অনুভূত অপূৰ্ব্ব রসের সন্ধান পাওয়া সম্ভবপর হয় “যং লব্ধ, চাপরং লাভং মন্ততে নাধিকং তত: । যস্মিন স্থিতৌ ন দুঃখেন গুরুণাপি বিচাল্যতে”—সেটা কি এতই তুচ্ছ যে তার জন্য তাস পাশা গল্পগুজব ছেড়ে কিঞ্চিৎ সাধনা করতে পারি না ? নচিকেতা ত তার জন্ত সৰ্ব্বস্ব পণ করেছিলেন ; এমাসন প্রভৃতি পাশ্চাত্য স্বধীগণ সেই উপাখ্যান থেকে মানসিক খাদ্য সঞ্চয় করে পুষ্টিলাভ করেছেন। হয়ত কেউ বলে’ বসবেন, এটা ত ধৰ্ম্মের কথা, তত্বের কথা হচ্ছে ; তবে কি আমাদিগকে যৌবনেই যোগী হতে হবে নাকি ? অামার উত্তর এই, আমি আপনাদিগকে তত্ত্বকথা শুনাতে আসিনি, আমি স্বপ্নেও সে যোগ্যতা দাবী করি ন--কিন্তু আমাদের দেশে ‘ধৰ্ম্ম' “লাখন’, ‘যোগ’ এই কথাগুলি যেরূপ সঙ্কীর্ণ অর্থে সাধারণতঃ প্রযুক্ত হয়ে থাকে, আমি আপনাদিগকে সেই সঙ্কীর্ণ পারিভাষিক অর্থ পরিহার করে সেগুলিকে একটু ব্যাপক ভাবে গ্রহণ করতে বলছি মাত্র। আমি এই বলতে চাই যে, কেবল পরাবিদ্যা-বিষয়ে নয়, অপরাবিদ্যা-সম্পর্কেও জামাদের লক্ষ্য శ^్క^్కe^^^ 8૭it AMMMMAMMAMAMMMAMAMAMAMMMMMMAMMAeMAMAAAA আপনাদিগকে যোগী হতে হবে, ‘সাধনা করতে হবে, যার যেটা ‘স্বধৰ্ম্ম—অর্থাৎ যিনি যে-বিষয়ে নিপুণ তাকে সেটায় পারদর্শিতা ও যোগ্যতা অর্জন করার জন্য যত্নশীল হতে হবে । এরূপ করতে পারলেই তবে পরিণত বয়সে আপনাদের সাধনা সিদ্ধিলাভ করবে, ‘স্বধৰ্ম্মে অর্থাৎ নিজ নিজ ক্ষমতার অtয়ত্তাধীন বিষয়ে, আত্মপ্রতিষ্ঠ হয়ে দেশকে সমাজকে জগৎকে যার যেটুকু দেবার তিনি ততটুকু দিতে পারবেন, এবং যতখানি সার্থকতা তার ভগবদ-দত্ত প্রতিভার অধিগম্য, ততখানি সার্থকতা অর্জন করে নিজে কৃতকৃতাৰ্থ হতে পারবেন। নতুবা ব্যর্থতার নিষ্ফল অসুশোচনায় জীবন্মত ভাবে লোকচক্ষুর অন্তরালে আত্মগোপন করে থাকতেই তিনি পছন্দ করবেন। লাটিন ভাষায় একটি কথা আছে tedium vitae এবং ফরাসি ভাষায় আর-একটি কথা আছে joie de vivre । প্রথম কথাটির অর্থ হচ্ছে জীবনে অপ্রীতি এবং দ্বিতীয় বাক্যটির মানে হচ্ছে বেঁচে থাকবার স্ফূৰ্ত্তি। আমাদের জীবনে অবসাদের ভাবটা বড়ই সুস্পষ্ট। সাংখ্যদর্শন-মতে জীবন দুঃখময়-সংসার কুপিতফণিফণাচ্ছায়াতুল্য । আমাদের কবি গাহিয়াছেন, ‘সংসারে শাস্তির আশা মরীচিকায় যথা জল। এই অতি প্রাচীন হিন্দুজাতি যুগযুগান্তরের দুঃখবাদের সাধনায় ও সহস্ৰ বৎসরের পরপদলেহনের ফলে এমনই মৃতপ্রায় নির্জীব হয়ে পড়েছে যে, এর তুহিনশীতল শোণিতে জীবন্ত জাতির তপ্ত রক্তধারা প্রবাহিত করতে চেষ্টা করা আকাশকুস্কমেরই মত স্বপ্ন মাত্র বলে’ মনে হয় । আমরা সৰ্ব্বদ। ত্ৰিবিধ তাপে তাপিত ~-আধ্যাত্মিক, আধিভৌতিক ও আধিদৈবিক বিভীষিকাগুলি নিত্য আমাদের চক্ষের সমক্ষে নৃত্য করছে, হঁচি-টিকৃটিকির ভয়ে আমরা সদা মুহামান, বেঁচে থাকৃবার আমাদের এতই সাধ যে পাজিপুথি না ঘেটে আমরা এক পা নড়ি না। অথচ অদৃষ্টের কি তীব্র পরিহাস যে ওলাওঠা, মহামারী, ম্যালেরিয়া, দুর্ভিক্ষ, বন্যা প্রভৃতি লোকক্ষয়ের যাবতীয় অনুষ্ঠানগুলি আমাদিগকে যেমন পেয়ে বসেছে, জগতের আর কোন জাতিকে এমন সাংঘাতিকভাবে আক্রমণ করতে পারে নি। আমাদের বৈদিক সাহিত্যে সৰ্ব্বদাই এই কথাটি দেখা যায়,—শত্যযুর