পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] আজ আমার আচ্ছাদনহীন মাথার উপর মেঘের মাদল বেজে উঠেছে। তার গর্জানিতে ধরণীর মূর্ছাহত বুকটা ছলে দুলে কাপছে। মেঘের বুকের এই যে গর্জন—এর সঙ্গে আমার মনের গর্জানির কিছু মাত্র তফাং নেই! ওর বুকে যে ক্ষুধা থেকে থেকে থরথরিয়ে উঠছে, সে ক্ষুধায় আমার অন্তর ভরে গেছে । ওর ক্ষুধার হাহাকারের আকাশ-ভাঙার কান্নার সুরে দুনিয়ার এক প্রান্ত হ’তে আর-এক প্রান্ত পৰ্য্যন্ত তোলপাড় পড়ে গেছে, কিন্তু আমার এ বুক-ভাঙা কামার হাহাকার বারে কানে পৌছচ্ছে না । অত বড় আকাশের বুকটাতে মেঘের এ ক্ষুধ কে জাগিয়ে দিয়েছে জানিনে, কিন্তু আমার বুকের ক্ষুধা কার চারিপাশ ঘিরে ইiহাকারে ফেটে পড়ছে তা তুমিও জাম – আমিও জানি । ন! গে:-–ন|—ন । আমি ভিক্ষার আজি নিয়ে তোমার কাছে দরবার করতে আসিনি। ক্ষুধ আমার যেমন তীব্র, ভিক্ষ আমার তেমনি অসহ । তাই মাঝামাঝি রফার ধার আমি ধরিনে। আমার পণ—হয় জয় করব, না হয় জয়ের যুদ্ধে মরণকে বরণ ক’রে নেব । জয় করতে পারিনি, তাই ছুটে চলেছি মরণের পথে । এ পথ কোথায় শেষ হবে কেউ তা জানেন। তবুও এই নিরুদেশ যাত্রার পথট। অভিসার-যাত্রার ভয়াকুল অানন্দের মতই আমাকে পেয়ে বসেছে। মৃত্যু-বধূর মুখের ঘোমটা খুলে তার রূপট দেখে’ নেবার জন্যে আমার মনটা আজি মেতে উঠেছে—তোমাকে পাবার জন্তে সেদিন আমার মনট। যেমন ক’রে মেতে উঠেছিল ঠিক তেমনি ক’রে। সমুদ্রের লীল, তরঙ্গের দোলায় দুলে ফেনায় ফেনায় ফুলে উঠে, আমার পায়ের তলায় বেল|-তটের বুকের উপব আছড়ে পড়ছে। সমুদ্র, নীল, ঠিক তোমার নীল চোখদুটোর মত—তেমনি নীল—তেমনি উজ্জ্বল—তেমনি অথই পাথার । তোমার চোখের চেহার। যেমন মুহূৰ্ত্তে মুহূৰ্ত্তে বদলে যা, এর চেহারা ও তেমনি পরিবর্তনের ভিতর দিয়ে ছুটে চলেছে । এই মুহূৰ্ত্তে হাসির তরঙ্গে উচ্ছসিত হ’য়ে উঠছে, পর মুহূৰ্বেই আবার বিদ্রপের অট্টহাস্তে চারিদিকে ফেনার বুদবুদ ছড়িয়ে ফেটে পড়ছে। তোমার খেয়ালী চোখদুটোর" মতই এরও বিদ্রোহী 8 Y খেয়ালের অন্ত নেই। এই মূহূৰ্ত্তে এ যাকে মাথায় তুলে’ নাচাচ্ছে, পর মূহূৰ্ত্তেই নামিয়ে দিচ্ছে কোথায় কোন অন্ধকার অাবৰ্ত্তের অর্জনাদের মাঝখানে । হঠাৎ কেন জানিনে, ঘুরে ঘুরে সেই দিনের কথাই আজ মনে পড়ছে,-যেদিন তোমাকে প্রথম দেখেছিলুম— যে দিনের প্রভাত আমার জীবনে যা বহন ক’রে এনেছে তার চাইতে বড় মুখ ও কেউ আমাকে কখনো দেয়নি, তার চাইতে বড় দুঃখও কেউ আমাকে কখনো দিতে পারবে না । তোমাকে দেখে সেদিন আমার মনের ভিতর কোন প্রশ্নটা অকস্মাৎ আনমনে জেগে উঠেছিল জান ?— “বৃন্থহীন পুপ সম আপনাতে আপনি বিকশি’ কবে তুমি ফুটিলে উৰ্ব্বশী !” তোমার ডান হাতে স্থপাপাত্র আর বাম হাতে যে বিষভাগু সেই প্রথম দেখ|ব দিনে ও অামাব মনের অন্তৰ্য্যামী দেবতার কাছে সে খবরটা ছাপা ছিল না । হয়ত মনের এক কোণে তখনি পিছিয়ে পড়বাব ইচ্ছাও জেগে উঠেছিল। কিন্তু পারিনি গে—ত পাবিনি। তুমি জাম কি ন জানিনে, এক রকমে সাপ আছে যার দৃষ্টির খপ্পরে পড়লে কোন জানোয়ার আপনাকে সবিয়ে আনতে পারে না । তোমার চোখে ও যে সেই সাপের চোখের মায়া কাজল কতট। ঘনীভূত হয়েছিল—আজি তা বুঝতে পারছি, আর তোমাব উপব সুপায় আমব সমস্ত মন বিযিয়ে উঠছে । তোমার স্পৰ্দ্ধ{—তোমার বিদ্রুপ অমিীকে কতবার আঘাত করেছে, আর তাবি সঙ্গেসঙ্গে কালে মেঘেপ ঢেউ কতদিন অমাব মনেব আকাশ নিবিড় ক’রে দিয়ে গেছে । ঐ বুকুটার ভিতর যে উদ্ধতম্পদ্ধ। ফণীর মত ফণা তুলে’ ফেঁ{স ফেঁস করছে তাকে টেনে বের ক’রে এনে কেটে টুক্‌বে। টুক্‌বো ক’রে ফেলবার জন্তে, তাল রক্তাক্ত সংপি গুট। পাযের তলায় র্থেংলিয়ে দেবার জন্যে একটা দারুণ ইচ্ছ। সময়ে সময়ে আমার মাথায় অস্কুশের আঘাত ঠকেছে। কিন্তু তোমার ঐ বিদ্রুপের প্রলয়-ঝঞ্চার পিছনে যে অপরূপ সৌন্দৰ্য্য ছিল, তার মোহ আমি কিছুতেই কাটিয়ে উঠতে পারিনি। তোমীর সেই মায়াবী চোখের আকর্ষণের খঞ্জর হতে আমি যে আমাকে মুক্ত করে আনতে