পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سeb *6 তাহারই মূল্য আছে। যদি দেখা যাইত, পুরুষ-কেরানীর জায়গায় স্ত্রী-কেরানী রাখিবামাত্র হিসাবে দুই অীর দুইয়ে ছয় লেখা হয়, কিম্বা পুরুষ-ডাক্তারের জায়গায় স্ত্রী-ডাক্তার ডাকিবামাত্র রোগীকে দুধের বদলে কার্বলিক এসিড খাওয়াইয়া দেওয়া হয়, তবে স্ত্রীর কার্য্যকে বৃথা এবং অনিষ্টকর বলিবার অধিকার আমাদের থাকিত । কিন্তু সাধারণ কাজ যখন একই ভাবে চলে, তখন নৈয়ায়িকের লড়াই করিয়া তাহার মূল্য কিছুতেই কমাইয়া দেওয়া যায় না । মানুষের প্রতিভা ও বুদ্ধির মাপ অনুসারেই যদি তাহাকে অধিকার দিতে হয়, তবে বুদ্ধিমতী স্ত্রীলোকের চেয়ে নিৰ্ব্বোধ পুরুষের অধিকার কম হওয়া উচিত । এই মাপ অনুসারেও বহু পুরুষের অধিকার হরণ ও বহু নারীকে অধিকার দান করা চলে । যে দেশে মামুষ যেমন বুদ্ধির পরিচয় দিয়াছে, তাহাকে তেমনি অধিকার দিয়া, কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্কট্ল্যাণ্ড কে ইংলণ্ড, অপেক্ষ অধিক, কি জাৰ্ম্মানীকে ফ্রান্স, অপেক্ষ অধিক অধিকার দিতে হয়। স্ত্রীলোক পুরুষের "সমকক্ষ’ হইতে পারেন না বলায় একটা ভুলও আছে । নারী যদি সকল ক্ষেত্রে ঠিক পুরুষের প্রতিচ্ছবি হইতেন, তাহা হইলে ত তাহারা পুরুষই হইতে পারিতেন। একজন পুরুষও ত ঠিক আর-একজন পুরুষের মত হন না, তাহারা প্রত্যেকে নিজের মত হন ;–ব্যাস বাল্মীকির মত হন নাই, শেক্সপীয়র হোমরের মত হন নাই ; ইহার কেহ কাহারও ঠিক সমকক্ষ হন নাই । ফরাসী বীরাঙ্গন। জোয়ান অব আর্ক, প্রাণ দিয়াছেন স্বাধীনতার জন্ত,স্পার্টান বীর লিওনিডাসের ঠিক সমকক্ষ হইয়া উঠিবার উৎসাহে নয়। মৈত্রেয়ী মৃত্যুকে অতিক্রম করিবার জন্য নারী হইয়াও সংসারসম্পদ দূরে ঠেলিয়া দিয়াছিলেন, যাজ্ঞ্যবন্ধ হইবার দুরাশার বশে নয়। নারীর মনে যদি কোনো কৰ্ম্মপ্রেরণা থাকে, তবে তাহা অপর কাহারও সহিত তুলনায় ওজন না করিয়াও জগতের কার্য্যে লাগিতে পারিবে। নারীর প্রতিভা যদি কাব্য সাহিত্য ও শিল্পে বিকশিত হইতে চায়, তবে তাহা সামান্য হইলেও নারীকে নিজেকে এবং অপরকে কিছু আনন্দ দিবে। তাহা না হইলে, যাহারা বলেন, বাঙালী মেয়ের কাছে “একঘেয়ে প্রবাসী-মাঘ, ১৩৩৯ [ २७° उां★, २ग्न भ७ প্রেমের গল্প ইত্যাদি” ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায় না, র্তাহারাই প্রতিমাসে নানা মাসিক পত্রিকায় “প্রেমের গল্প” লিখিয়া ছাপাইতেন না । বহির্জগতের কোনো কৰ্ম্মক্ষেত্রেই নারী পুরুষের সমান অথবা অধিক উৎকর্ষ দেখাইতে পারে না, ইহা বলা আজকালকার দিনে আর শোভা পায় না। এই ভ্রান্ত মতটিকে পাশ্চাত্যদেশে ত বহুকাল অসত্য বলিয়া প্রমাণ করা হইয়া গিয়াছে, আমাদের দেশেও হইয়াছে । তবু র্যাহার সে বিষয়ে কোনো খোজ না লইয়াই কলিকাতার কলেজে শিক্ষিতা দশ বিশটি বাঙালী মেয়েকে ব্যাস বাল্মীকি নিউটন গ্যালিলিও, কি চাণক্য বিসমার্ক হইতে না দেখিয়। হতাশ হইয়া পড়িয়াছেন, তাহাদের অবগতির জন্য কিছু বলা দরকার। সত্য বটে আমাদের দেশের “তথাকথিত দশবিশ জন উচ্চশিক্ষিত নারী” এবং “প্রকৃত শিক্ষিত হিন্দু নারী"র মধ্যে খুব অল্প দুই একজন মাত্র “একঘেয়ে প্রেমের গল্প কবিতা বা এক আধটা স্বদেশী গান ছাড়া” জগৎকে বেশী কিছু দান করিতে পারেন নাই ; কিন্তু তাহার দ্বারাই কি নারীশক্তির অক্ষমত। প্রমাণ হয় ? আমাদের দেশের দিদিমা ঠাকুরমারা তাহাদের প্রতিভার বিকাশেব সহায়তা করিতে পারেন নাই এবং বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাও গভীর ব্যাপক এবং সৰ্ব্বাঙ্গমুন্দর হয় নাই বলিয়াই আমাদের দেশের মেয়েরা খুব বেশী কিছু করিতে পারেন নাই। কিন্তু এই দেশটি ছাড়াও পৃথিবীর মানচিত্রে অtরো দেশ দেখা যায়, সেখানকার মেয়েরাও মেয়েই । তাহারা নিজেদের প্রতিভার শক্তির ও মৌলিকতfর কিরূপ পরিচয় দিয়াছেন, চোখ মেলিয়া দেখিলেই ত আমাদের ভুল ভাঙিয়া ধাইত । সমগ্র ইউরোপ জুড়িয়া যে সৰ্ব্বগ্রাসী সমরানল কয় বৎসর পূৰ্ব্বে জলিয়াছিল, আমাদের দেশের নারীহিতৈষীরা বোধ হয় তাহার কথা ইতিমধ্যেই ভুলিয়া যান নাই। তথন ঘর সংসার পুত্রকন্যা স্ত্রী ভগ্নী মাতা সকলকে ফেলিয়া, বাণিজ্য ব্যবসায় শিল্প বিজ্ঞান সাহিত্যের চর্চা ভুলিয়া, চিকিৎসা সেবা অন্নসংস্থান বস্তু যোগান দূরে ঠেলিয়া,—-এককথায় সভ্যজগতের সমস্ত কৰ্ত্তব্য দায়িত্ব