পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা । বলি, রামমোহন রায় নিঃস্ব ভিখারীর মত পাশ্চাত্যের স্বারে উপস্থিত হন নাই। তিনি প্রাচ্য, ভারতবর্ষীয় সভ্যতার গৌরবমণ্ডিত উদার ভূমিতে প্রতিষ্ঠিত হইয়া, প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের সমন্বয় ও মিলন সাধন করিয়া ভবিষ্যতের পূর্ণতর মানব-সভ্যতার বিকাশসাধনে প্রয়াসী হইয়াছিলেন। একজন পাদরী এশিয়াবাসীদিগকে নিকৃষ্ট জাতি বলিয়া আক্রমণ করায় তিনি লিখিয়াছিলেন :– “Before ‘A Christian' indulges in a tirade about persons being “degraded by Asiatic effemimacy’ he should have recollected that almost all the ancient prophets and patriarchs venerated by Christians, may even Jesus Christ himself,...... were ASIATICs, so that if a Christian thinks it degrading to be born or to reside in Asia, he directly reflects upon them.” মন্ত এক সময়ে অন্য একজন বিদেশী খৃষ্টিয়ান, ভারতবানীরা বুদ্ধির আলোকের ( ray of intelligence,43 ) জন্য ইংরেজদের নিকট ঋণী, তাহাকে এই কথা বলায়, তিনি উত্তর দিয়াছিলেন :– “If by the “Ray of Intelligence” for which the Christian says we are indebted to the English, he means the introduction of useful mechanical arts, I am ready to express my assent and also my gratitude ; but with respect to Science, Literature, or Religion, I do not acknowledge that we are placed under any obligation. For by a reference to history it may be proved that the World was indebted to our ancestors for the first dawn of knowledge, which sprang up in the East, and thanks to the Goddess of Wisdom, we have still a philosophical and eopious language of our own, which distinguishes us from other nations who cannot express scientific or abstract ideas without the foreigners.” মনে রাখিতে হইবে যে রামমোহন যখন এই কথা লি•িয়াছিলেন, তখন ভারতে প্রত্নতত্ত্বের ও পাশ্চাত্য বিজ্ঞানের শিক্ষা ও আলোচনা প্রবর্তিত হয় নাই । পাশ্চাত্য সভ্যতাকে দূরে ঠেলিয়া না রাখিলে উহ siমাদিগকে গ্রাস করিযে, আমাদের প্রাচ্যত্ব ভারতীয়ত্ব borrowing language of প্রবাসী বাঙালীদিগের প্রতি আমার নিবেদন به سtt b বাঙ্গালীত্ব থাকিবে না, এই ভয় রামমোহনের মনে উদিত হয় নাই। তিনি ইসলামিক ইহুদী থষ্টীয় বৌদ্ধ— প্রাচ্য প্রতীচ্য সব সভ্যতার শ্রেষ্ঠ অংশ গ্রহণ করিয়া তাহী নিজের করিবার সাহস ও শক্তি রাখিতেন। অন্ত দিক দিয়া, রাজেন্দ্র লাল মিত্র, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জগদীশচন্দ্র বস্থ, প্রভৃতি কোন বাঙালী মনস্বীই পাশ্চাত্যের ভয়ে মনের সদর দরজায় হুড়কা অাটিয়া দেন নাই। সব মামুষের যাহা, তাহা আমারও, জ্ঞান ও সত্যে দেশভেদ জাতিভেদ নাই—বাঙ্গালী মনস্বীরা এই মন্ত্র অনুসারেই জীবনকে নিয়মিত করিয়াছেন । সৰ্ব্বদেশের সর্বকালের আত্মিক ঐশ্বৰ্য্য আপনার করিবার সাহস, পৌরুষ ও শক্তি বাঙালী মনস্বীদের বরাবরই দেখা গিয়াছে। মানসিক বদহজমী বাঙালী মনস্বীদের হয় নাই। র্তাহারা যাহা লইয়াছেন, তাহাকে নিজস্ব করিয়া বাঙালীত্ব ভারতীয়ত্ব প্রাচ্যত্ব দিয়াছেন । এই যে গ্রহণ করিয়া নিজের করিবার ক্ষমতা, ইহা বাঙালীর আছে। এই কারণেই দেখিতে পাই, বাঙালী অন্য ভারতীয় জাতিদের চেয়ে মানসী স্থষ্টি বেশী করিয়াছেন ; যদিও উহা বিদেশী সভ্য জাতিদের স্বাক্টর তুলনায় সামান্ত । বাঙালীর সাহিত্যে শিল্পে বিজ্ঞানে পাশ্চাত্যের প্রভাব আছে । ইহাতে কোনই লজ্জা নাই। ইংরেজী, ফ্রেঞ্চ, জামেৰ্ন, কোন সাহিত্য শিল্প প্রভৃতির উপর বিদেশী প্রভাব নাই ? ভারতবর্ষের আধুনিক সাহিত্য বিজ্ঞান শিল্প যে বহুপরিমাণে বাঙালীর সাহিত্য বিজ্ঞান শিল্প—এখানেই বাঞ্জালীর কৃতিত্ব ও গৌরব । বাঙালীর মানসিক আতিথেয়তা আছে । নানা দেশের জাতির যুগের ভাব চিস্তা আদর্শ বাঙালী গ্রহণ করিতে পারে ; কিন্তু যেমন আমরা সকলেই পোষাকে অল্প বা বেশী বহুরূপী সাজিলেও মোটের উপর বাঙালীর চেহারার ও পরিচ্ছদের বিশেষত্ব আছে, তেমনি নানা দেশ ও কাল হইতে আহত ভাব চিস্তা আদশের ধারার মধ্যেও বাঙ্গালীর অন্তরের চেহারা বুঝা যায়। আমরা পাশ্চাত্য অনেক দেশের লোকের মত, যেমন নৃত্তন ধাচের পোষাক পরা মানুষকে ঢ়িল ছুড়ি না, তেমনি