পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬২৬ প্রদ্যুম্ন দেখলে কুটীরে কেউ নেই, জিজ্ঞাসা করলে, “আপনি কি এখানে এক থাকেন ?” দেবী বললেন, “না। এক সন্যাসী আমায় এখানে সঙ্গে করে’ এনেছেন, তিনি কি করেন জানিনে, কিন্তু মাঝে মাঝে এখান থেকে চলে’ যান, ৫।৬ দিন পরে আসেন । তুমি এখানে বসে।” দেবী মাটির ঘট পূর্ণ করে তাকে স্বাগৃ পান করতে দিলেন, স্বাদ অমৃতের মতে, এমন স্বস্বাদু যুবাথু সে পূৰ্ব্বে কখনো পান করেনি । প্রদ্যুম্নের মনে হ’ল যদি আচাৰ্য্য পুর্ণবৰ্দ্ধনের কথা সত্য হয় আর যদি সে স্বচক্ষে যা দেখেচে তা ইন্দ্ৰজাল না হয় তবে এই ত দেবী সরস্বতী তার সাম্নে । তার জানুবার কৌতুহল হ’ল, ইনি নিজের সম্বন্ধে কি বলেন । সে জিজ্ঞাসা করলে, “আপনার এর আগে কোথায় ছিলেন ? আপনার দেশ কোথা ?” দেবী কাঠের বড় পাত্রে সযত্বে সুপ ও অন্ন পরিবেষণে ব্যস্ত ছিলেন, প্রশ্ন শুনে বিস্ময়পূর্ণ দৃষ্টিতে তিনি প্রভূমের দিকে চেয়ে বললেন, “আমার কথা বলছ ? আমার দেশ কোথায় জানিনে। আমি নাকি বিদিশার পথের ধীরে এক ভাঙা মন্দিরে অচেতন অবস্থায় পড়ে ছিলাম, সন্ন্যাসী আমায় এখানে উঠিয়ে এনেছেন । সেই থেকে এখানেই আছি--তার আগে কোথায় ছিলাম তা আমার মনে পড়ে না ।” : তিনি অন্যমনস্কভাবে বাইরে সাঝের রক্তিম আকাশে যেখানে উরুবিম্ব গ্রামের প্রাস্তের বনরেখার মাথায় সূর্য্য হেলে পড়েছেন, সেই চিকে চেয়ে রইলেন– চেয়ে চেয়ে কি মনে আনবার চেষ্টা করলেন, বোধ হয় মনে এল না। হঠাৎ কি ভেবে তার পদ্মের পাপড়ীর মত চোখদুটি বেয়ে ঝরঝর করে জল ঝরে পড়ল । তাড়াতাড়ি আঁচলে চোখ মুছে তিনি প্রহ্লামের সামনে অন্নে পূর্ণ কাঠের থালা রাখলেন। বললেন,"খাবার জিনিস কিছুই নেই। তুমি রাত্রে এখানে থাকে, আমি পদ্মের বীজ শুকিয়ে রেখেছি, তাই দিয়ে রাত্রে পায়স তৈরী করে খেতে দেব । সকালে যেও।” প্রত্যুম্নের চোখে জল আসছিল ...ওগো বিশ্বের প্রবাসী- ফান্তন, Y ONOe AMJAMeM AA MMAA MAM ieM MAMMMAJAMMAJJMeMeeMMMMAeMMeMMeMeMJMSzeSM ২৩শ ভাগ, ২য় খণ্ড هيمية" هموم আত্মবিস্মৃত সৌন্দর্ধ্যলক্ষ্মী, বিদিশার মহারাজের আর মহাশ্রেষ্ঠার সমবেত রত্নভাণ্ডার তোমার পায়ের এক কণা ধূলারও যোগ্য নয়, সে-দেশের পথের ধুলো এমন কি পুণ্য করেছে, মা, যে তুমি সেখানে পড়ে থাকৃতে যাবে ? খাওয়া শেষ হ’লে প্রদ্যুম্ন বিদায় চাইলে । দেবীর চোখে হতাশার দৃষ্টি ফুটে উঠল, বললেন, “থাকে। না কেন রাত্রে ? আমি বাত্রে পায়স রোধে দেব ।” প্রদ্যুম্ন জিজ্ঞাসা করলে, “আপনার এখানে এক রাত্রে থাকৃতে ভয় করে না ?” “খুব ভয় করে । ওই বেতের বনে অন্ধকারে কি যেন নড়ে, ভয়ে আমি দোর খুলতে পারিনে। ঘুম হয় না, সমস্ত রাত বসেই থাকি।” প্রদ্যুমের হাসি পেলে, ভাবলে রাত্রে একা থাকৃতে ভয় করে বলে’ পায়ুসের লোভ দেখিয়ে দেবী তাকে সঙ্গে রাখতে চান। সে বললে, “আচ্ছা রাত্রে থাকুব ।” দেবীর মুখ আনন্দে উজ্জ্বল হ’ল । সমস্ত রাত লে কুটীরের বাইরে খোলা হাওয়ায় বসে কাটালে। দেবীও কাছে বসে রইলেন। বললেন, “এমন জ্যোৎস্না, আমি কিন্তু ভয়ে বাইরে আসতে পারিনে, ঘরের মধ্যে বসে’ রাত কাটাই ।” দেবীর ব্যাপার দেখে’ প্ৰদ্যুম্ন অবাক হ’য়ে গিয়েছিল । হ'লেই বা মন্ত্রশক্তি, কিন্তু এতটা আত্মবিস্মৃত হওয়া, এ যে তার কল্পনার বাইরের জিনিষ । নানা গল্পে সমস্ত রাত কাটুল, ভোর হ’লে সে বিদায় চাইলে । দেবী বলে’ দিলেন, “সন্নাসী এলে একদিন আবার এস ।” সেইদিন থেকে প্রতিরাত্রে সে দেবীর অলক্ষিতে পাহাড়ের নীচে বসে ফুটরের দিকে চেয়ে পাহার রাখত। তার তরুণ, বীর হৃদয় এক ভীরু নারীকে একা বনের মধ্যে ফেলে’ রাখার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ তুলেছিল । দশ পনর দিন কেটে গেল । এক একদিন প্রত্যুম্ন শুনত, দেবী অনেক রাতে এক গান করছেন—সে গান পৃথিবীর মানুষের গান নয়, সে