পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

"יר . প্রবাসী-আশ্বিন, ১৩ee [ ২৩শ ভাগ, ১ম খণ্ড পারমিশনের বা আজ্ঞার দরকার হয় না। এটনী ও উকীল ৰাবুদের কেরানীগণ ইহার প্রস্পেক্টাস, বারলাইব্রেরী ইহার রেজিষ্টার্ড অফিস। মকদ্দমায় জয়যুক্ত হওয়া ইহার ডিভিডেও, এপ্লিকেশন মনি অগ্নিম দেয়। কল মনি যে কত দিতে হইবে তাহার নিশ্চয়তা নাই । ম্যানেজিং ডিরেক্টরগণ যখন যাহা চাহিবেন তৎক্ষণাৎ তাহা পে করিতে হইবে, নতুবা অমনি শেয়ার ফরফিটেড হইবে। অন্ততঃ অর্ধেক ক্ষেত্রে যে ডিভিডেও পাওয়া যাইবে না তাহা সুনিশ্চিত। তজ্জন্ত ম্যানেজিং ডিরেক্টরদের নিকট কৈফিয়ত চাওয়া ধৃষ্টত বলিয়া বিবেচিত হইবে । শেষ ফল—ম্যানেজিং ডিরেক্টরদের মোটরের ধূলিকণায় ডিভিডেও, প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্ত শেয়ার-হোল্ডারদের চোখের জল মুছিতে মুছিতে মাথায় হাত দিয়া বাড়ী প্রত্যাগমন । আমাদের ছানিপড়া চোখে যদিও এ-সমতাটা বিশেষভাবে লক্ষ্য করিতে পারিতেছি না বটে, কিন্তু তাহাতে আমাদের ক্ষতির কিছুই তারতম্য হইতেছে না। অনেকে বলিবেন দেশে উকীল-বারিষ্টার থাকা নিতান্তই দরকার ; র্তাহার না থাকিলে অনেক নির্দোষী ব্যক্তি শাস্তি পাইত, অনেকের স্তায্য দাবী-দাওয়া আদায় হইত না । কিন্তু চিন্তাশীল ব্যক্তিমাত্রেই চিন্তা করিয়া দেখিবেন যে উকীলবারিষ্টারের কল্যাণে যত নির্দোষী লোক শাস্তি ভোগ করিতেছে, যত দোষী ব্যক্তি অনায়াসে পরিত্রাণ পাইতেছে এবং যত উদোর পিণ্ড বুধের ঘাড়ে পড়িতেছে, শুধু বিচারকের উপর নির্ভর করিলে তাহার ফল ইহা অপেক্ষ কোনও অংশে খারাপ হইত না । অথচ এই পরাসক্ত জীবদের উদর পূর্ণ করিবার জন্য যে কত কোট কোট টাকা অপব্যয় হইতেছে এবং ইহাদের ভোগ-বিলাসের উপকরণ যোগাইবার জন্ত যে কত লক্ষ লক্ষ টাকা বিদেশে এতিবৎসর রপ্তানি হইতেছে তাহার হিসাব নিকাশ করিতে কেহই মাথা ঘামায় না। এমনই মন্ত্ৰমুগ্ধ আমরা ! ওকালতী-বারিটারীর ফঁাদে পড়িয়া শুধু যে আমরা টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হইতেছি তাহ নয়, একদল দেশের রত্ন এাহারা শিল্প-বাণিজ্যের শিক্ষায় শিক্ষিত হইয় অনেক নূতন শিল্পের প্রসারণ করতঃ এই হতভাগ্য দেশের অনেক नि বৃদ্ধি করিতে পারিতেন এবং লক্ষ লক্ষ লোকের জীবিকা অর্জনের রাস্ত প্রশস্ত করিয়া দিয়া দেশকে মৃত্যুমুখ হইতে রক্ষা করিতে পারিতেন, তাহাদিগকেও আমরা হারাইয়াছি। এইসব কোহিন্থর হারাইয়া দেশ যত ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছে রৌপ্যের ক্ষতি তাহার তুলনায় খুবই নগণ্য। এত ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াও কি আমরা ও-ব্যবসায়কে উৎসাহ দিতে নিরস্ত হইয়াছি ? লোকে বলিবে প্রাণের দায়ে । কিন্তু প্রাণের দায় যে কোথায় বেশী তাহ কেহই ভাবিয়া দেখেন না, তাই আমাদের আজ এই দশা। অনাহারে, রোগে সমস্ত দেশ মৃত্যুমুখে ধাবিত হইতেছে। যদি অচিরে ইহার প্রতিবিধান না হয় তবে মৃত্যু অনিবাৰ্য্য। ভারত এক সময় সমৃদ্ধিশালী ছিল এবং তখনই ধন ঐশ্বর্ষ্যে বড় ছিল যখন তাহার শিল্প-বাণিজ্য ছিল। সে-সময়ের ইতিহাসের যদিও আমাদের পাঠ্যপুস্তকের আলমারীতে স্থান নাই, তথাপি সেকালের শিল্প-বাণিজ্যের আদর্শ যে-শ্লোকে বর্ণিত হইয়াছিল –‘বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মীঃ – তাহার ক্ষীণ স্বর এখনও আমাদের নিকট তখনকার লোকের শিল্প-বাণিজ্যের প্রতি ভালবাসার সাক্ষ্য দান করিতেছে। প্রবাদ অাছে যে ঝিনুক দিয়া মাপিয়া খাইলেও রাজার গোল ফুরাইয়া যায়। তাই আয়ের অভাবে দেশের সাধারণের যে পয়সা ছিল ক্রমশঃ তাহা শেষ হইয়া আসিতেছে। অনেকে নিষ্কৰ্ম্ম হইয়া অনাহারে মরিতেছে। শিল্প-বাণিজ্যের প্রসার না করিতে পারিলে তাহাদিগকে বাচান অসম্ভব। তাহাদের মৃত্যুতে জমিদারের মৃত্যু, কে খাজনা দিবে ? উকীল-বারিষ্টারের মৃত্যু, কে মোকদ্দমা করিতে আসিয়া তাহাদের উদর পূর্ণ করিবে ? ডাক্তারের মৃত্যু, কে তাহাদিগকে ডাকিবে ? ইহার স্বচন এখনই আরম্ভ হইয়াছে; যত দিন যাইবে তত বেশী অনুভূত হইবে। তাই এই সমস্যায় কাহারও নিস্তার নাই। ভারাক্রান্ত নৌকা ডুবিতে বসিয়াছে, এখন কোনও আরোহীকেই আমি অত বড় জমীদার, আমি অত বড় হাকিম, আমি অত বড় কৌনসিলী, আমি অত বড় ডাক্তার ভাবিয়া দাড়ি-মাঝির উপর নির্ভর করিয়া নিশ্চিন্ত হইয়া বসিয়া থাকিলে চলিবে না, সকলকেই সেচনী লইয়া জল লেচন করিয়া নৌকা বঁাচাইতে হইবে। নতুবা নৌকা ডুবিল,