পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

X ૨8 প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড --۔۔م۔م۔م۔۔-- স্থচীরেখা— প্রথম ভাগ ) ঐ লেখা দেবী প্রণীত এবং ১৫ কলেজ স্কোয়ার হইতে এম-সি-সরকার এও সন্স কর্তৃক প্রকাশিত । দাম আট আন । সুচী-শিল্পের এই হন্দয়; বইখানি দেখিয়া মহিলাগণ বিশেষ আনন্দ লাভ করিবেন। ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করিয়া ত্যাজ ঘরে ঘরে এ শিল্পের চর্চা হইতেছে। শ্ৰীমতী স্থলেখা দেবীর পুস্তকখানি সত্যই কালোপযোগী হইয়াছে। হুটী-শিল্পে হাত থাকিলেও অনেক মেয়েকে ডিজাইন ও প্যাটার্ণ লইয়া গোলে পড়িতে হয়। "চীরেথী’ সে বিপত্তি হইতে উগ্ৰহাদের উদ্ধার করিবে । ব্লাউসের সকল প্যাটার্ণ ই খুচয়িত্রীর পরিকল্পিত । ডিজাইনগুলি সুচিত্রিত । ইহাতে ব্লাউসের ডিজাইন ছাড়া ছোট ছোট ফুল লতা-পাতা ও অন্যান্য নানা রকম স্বল্পর ডিজাইন আছে। কাপড়ে ছবি তুলিবার নিয়ম, বর্ণবিন্যাস প্রভৃতি সম্বন্ধে সংক্ষেপে উপদেশ দেওয়া হইয়াছে। বইখানির আদর হইবে । শ্রীশৈলেন্দ্রকৃষ্ণ লাহ। পারিবারিক চিকিৎসা—কবিরাজ ইন্দুভূষণ দেন শ্ৰেণীত । প্রাপ্তিস্থান-২০নং বলরাম ঘোষ ষ্ট্রট, কলিকাতা । মুল্য ০% । পুস্তকখানি সমালোচনার জন্য সম্প্রতি প্রাপ্ত হইলেও ইহা প্রকাশিত হইয়াছে ১৩৩৪ সালে । গ্রন্থকার নিবেদনে" লিথিয়াছেন,— “আয়ুৰ্ব্বেদীয় চিকিৎসার বহুল প্রচার উদ্দেশ্বে ইহা লিখিত "—উদেষ্ঠ সাধু, সন্দেহ নাই। তবে দুঃখ এই যে, ঐ উদ্দেশু-সাধনের উপযোগ কোনও গুণের পরিচয় গ্রস্থে পাইলাম ন} } কতকগুলি রোগের লক্ষণ ও সেই সঙ্গে তাহদের প্রতিকারকল্পে কতকগুলি পাচন ও মুষ্টিযোগের প্রয়োগ-বিধি ইহাতে লিপিবদ্ধ হইয়াছে বটে, কিন্তু পাচন ও মুষ্টিযোগ বলিতে কি বুঝায় পাচনাদির জন্য কোন দেশ-জাত উদ্ভিদের কোন অংশ কোন সময়ে সংগ্ৰহ করিতে হয়, এবং কিরূপ স্থানের ও কিরূপ অবস্থার উদ্ভিজ্জ গ্রহণযোগ্য নয়,—এ সব কথার কিছুই ইহাতে নাই । ইহ ছাড়া আরও ক্রট আছে । লেখক ডেঙ্গুত্ত্বর সম্বন্ধে বলিয়াছেন, “এ জরও অনেকটা ইনফ্লুয়েঞ্জার মত ...কোঠশুদ্ধির প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখিয়া শ্লেষ্মী-জন্ত জর যে সকল ব্যবস্থা বলা হইয়াছে, ডেঙ্গুজরে সেই সকল ব্যবস্থা করা আবশ্বক। কিন্তু ডেঙ্গুত্ত্বর আদৌ শ্লেষ্মাত্মক বাধি নয় ; বায়ু ও পিত্তের মিলিত প্রকোপ-হেতুই উহার উৎপত্তি। স্বতরাং ইনফ্লুয়েঞ্জা বা শ্লেষ্মী-জন্ত জ্বরের ব্যবস্থা ডেঙ্গুজরের পক্ষে যে কুব্যবস্থা, তাহ। বলাই বাহুল্য। লেখক একস্থানে লিথিয়াছেন,— “নবজয়ে এক সপ্তাহ শীত না হইলে পাচন প্রয়োগ করিতে নাই ।” ইহার পর নবজ্ঞর-প্রসঙ্গে অার একস্থানে বলিয়াছেন,—“যদি জ্বর শ্লেষ্ম-প্রধান হয়, তাহা হইলে লক্ষীবিলাস ১ বড়ি ও মকরধ্বজ ১ রতি মিশাইয়া দিন দুই-তিনবার সেবন করাইলে চমৎকার ফল দশে ।” কিন্তু ঐ দুইটা কথাই ঠিক নয় । নবজ্বরের দুইটি অবস্থা - সাম ও নিরাম । নিরাম জ্বরে লঙ্ঘনও বিধেয় নয়, ঔষধ সেবনও দোষের নয়। আর সাম জ্বরে জরস্থ "মধ প্রদম সপ্তাহ মধ্যে প্রয়োগ করিতে নাই বটে, কিন্তু যে-সমস্ত ধধ রসের পরিপাককারক বা উপদ্রব-নিবারক, তাহাদের প্রয়োগ নিধিদ্ধ নয়। লেখক শ্লেষ্মাপ্রধান নবজ্বর লক্ষ্মীবিলাসের যে ব্যবস্থা দিয়াছেন, তাহাও যুক্তি-বিরুদ্ধ। লক্ষীবিলাসে অস্ত্র ও ধুস্তুর বীজ থাছে । কিন্তু শ্লেষ্মা প্রধান নবজ্বরে লেীহ বা অভ্রঘটিত ঔষধ দিতে নাই । আর ঐ জ্বর সপ্তাহ পার না হইলে ধুস্থরঘটিত ঔষধ প্রয়োগ করাও অসঙ্গত । তাহাতে অনেক সময় হিতে বিপরীত হয়। এরূপ ভুল ও ক্রটি গ্রন্থে অনেক আছে, বাহুল্যগুয়ে আয় দেখাইলাম না। লেখক যদি কবিরাজ নগেন্দ্রনাথ সেন গুপ্তের “পাচন ও মুষ্টিযোগ,” কবিরাজ যশোদানন্দন সরকারের “গৃহস্থের মুষ্টিযোগ ও কবিরাজের চিকিৎসা-প্রবেশ" ও দ্বারকণনাথ বিদ্যারত্বের “বিবিধ তীব্র মুষ্টিযোগ” প্রভৃতি উৎকৃষ্ট গ্রন্থগুলি পাঠ করিয়া এ গ্রন্থ লিখিবার চেষ্টা করিতেন, তাহ হইলে ভাল হইত। শ্রীঅমরেন্দ্রনাথ রায় উদিত।--শ্ৰীমতী মৈত্রেী দেবী প্ৰণত। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ লিখিত ভূমিকা সম্বলিত ; প্রকাশক, চক্রবত্তী চাটার্জি এও কোং, কলিকাতা । দাম—২ টাকা। পৃষ্ঠা ১৪৪ ; সুন্দর ছাপা ও বাধাই। বাংলা দেশের যে কয়জম নারী-কবি বাংলা কাব্য-সরস্বতীর গলায় মালা হইয়। দুলিতেছেন, উহাদের সেই মালায় আর একটি সার্থী গাথা পড়িলেন। বয়সে ইনি সৰ্ব্বকনিষ্ঠ। তাহ। সত্ত্বেও ইহার কবিতার মধ্যে পরিণতির যে-সম্ভাবন দেখিতেছি, মনে হয় ইহার দু্যতি একদিন অনেকের সপ্রশংস দৃষ্টি আকৰ্ষণ করিবে । সেদিন ভাদ্র সপ্তদশ জন্মদিনে ইহার প্রথম কাব্য-গ্রন্থ "উদিতা" প্রকাশিত হইয়াছে। “উণিতার ' অনেকগুলি কবিতা গত চার বৎসর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মাসিক পত্রিকায় ছাপা হইয়াছিল ; ইহ হইতেই বুঝা যাইবে যে, শ্ৰীমতী মৈত্রেয়ীর বার বৎসরের সদ্য উন্মুখ কবি-প্রতিভা ষোলো বৎসর পর্য্যস্ত ধতটুকু পরিণতি লাভ করিয়াছে, তার প্রায় সবটকু পরিচয় এই কবিতাগুলির মধ্যে আছে। বইখানি পড়িলেই একথা সকলের আগে মনে পড়ে যে, কবিতাগুলি কবির বয়সকে অতিক্রম কারয়া গিয়াছে, একটা স্বাভাধিক কবি প্রতিভ} যেন কবিতাগুলির ধ্বনি ও ছন্দের ক্ষীণ গুরুলতাকেও ছাপাইয়। স্বপরিস্ফুট হইয়া উঠিয়াছে । এটা একটু বিস্ময়ের কথা সন্দেহ নাই । ইহা ছাড়াও আর একটি বিস্ময়ের কথ। এই কবিতাগুলির মধ্যে আছে। “উদিত"-র ভূমিক-লেখক কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের কথাতেই তাহা বলা ভাল । “কিছুকাল থেকে তার লেখায় একটা যে লক্ষণ দেখা দিয়েছে সেট। তার এবয়সের পক্ষে একেবারই অনপেক্ষিত । ভাবের ছবি মনে অল্পবয়সেও রচিত হ’তে পারে, কিন্তু তত্ত্বের গাথুনি তো তেমন সহজ নয় । কাব্যের মধ্যে তত্ত্বের উকিঝুকি চলে, কিন্তু তাকে ডাক দিয়ে ভিতরে নিয়ে আসে। প্রায় দেখতে পাওয়া যায় না । যদি বা এমন ঘটে, মৈত্রেয়ীর বয়সে সেটা আশ্চধ্যের কথা। জ্ঞানের পথে যে-উপলব্ধি, সে তে পরিণত বয়সের অপেক্ষ রাখে বলেই জানি ; শুধু চিত্ত করা নয়, চিন্তা করতে রস না পেলে সেটা কাবের বিষয় হতে পারে না । মৈত্রেয়ীর কাব্যে ক্রমে তত্ত্বের আনন্দই যদি প্রধান হয়ে উঠে, এ সম্বন্ধে তার রচনার অনন্তপুৰ্ব্বত। বঙ্গসাহিত্যের একটা বিশেষ স্থান নিতে পারবে ।" কবিগুরুর একখা সত্য, কিন্তু ইহার ফলে "উদিতা"র বেশীর ভাগ কবিতাই একটু heavy হইয়া পড়তে বাধ হইয়াছে, এবং তাহদের সহজ সাধলীল গতি মাঝে মাঝে একটু পঙ্গু হইয়া পড়িয়াছে। কিন্তু সুথের কথা এই যে, তত্ত্বের তাড়ণায় মৈত্রেয়ীর কল্পনা কোথাও জটিল হয় নাই, ভাববেগ কোথাও শিথিল হইয়। বিকৃত রূপ ধারণ করে নাই ; এক কথায় তত্ত্বের আনন্দ কোথাও কাব্যেয় আনন্দকে গুঞ্জ করে নাই । তাহ ছাড়া "উদিতা"র প্রায় প্রত্যেক কবিতাতেই ভাবের এমন একটা গভীরতা, ধ্বনির ও গতির এমন একটা স্তন্ধ গাম্ভীৰ্য্য আছে, যাহা মনকে অভিভূত না করিয়া পারে না। কোন কথা নহে, ’উপহার", "আলো’, ‘অন্তর . পরিণতি, প্রভৃতি কবিতা এই হিসাবে সত্যই উপভোগ্য। শুধু ভাবের গভীরতা, এবং ধ্বনি ও গতির গাম্ভীর্য্যেই