পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] বিবিধ প্রসঙ্গ—নবম অর্ডিস্যান্সের ফল ২৭৯ ও চিন্তাশীল লোকেরা জানিতেন, যে, মহাযুদ্ধে এরূপ দুঃখ ও ক্ষতি অনিবাৰ্য্য , কিন্তু তা বলিয়া কি কেহ এরূপ বল সঙ্গত মনে করেন, যে, ইংলগুের গবন্মেণ্ট যুদ্ধ ঘোষণা করিবার সময় ইংলণ্ডের সর্বসাধারণকে ক্ষতিগ্রস্ত করিবার ও দুঃখ দিবার অভিপ্রায় ঘোযণা করিয়াছিলেন, ফ্রান্সের গবন্মে ট যুদ্ধ ঘোযণা করিবার সময় ফ্রান্সের জনসাধারণকে দুঃখ দিবার ও ক্ষতিগ্রস্ত করিবার অভিপ্রায় ঘোষণা করিয়াছিলেন, ইত্যাদি ? তেমনি ইহা সত্য কথা, যে, অহিংস আইনলঙ্ঘন প্রচেষ্ট আর রূ হওয়ায় অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হইতেছে ও দুঃখ পাইতেছে, কিন্তু এইরূপ দুঃখ দেওয়া ও ক্ষতি করা কংগ্রেসের ঘোষিত ( বা অঘোষিত গুপ্ত ) অভিপ্রায় ? কখনই মহে । কংগ্রেসের ঘোষিত উদ্দেশ্য দেশে স্বরাজ প্রতিষ্ঠিত করা । গবন্মেটি কিংবা অন্য কেহ সেই উদ্দেশে বিশ্বাস না করিতে পারেন । কিন্তু অন্য সকল দেশের স্বাধীনতা-সংগ্রামে যে-সকল ক্ষতি ও দুঃখ ইষ্টয়াছে, তাহ যেমন স্বাধীনতা-সংগ্রামের নেতাদের উদেশ্ব ছিল না, কেবল আতুষঙ্গিক ব্যাপার মাত্র ছিল, কংগ্রেসের অহিংস সংগ্রাম সম্বন্ধেও তাহাই মনে করা প্ত বল স্যায়সঙ্গত । অস্ত্রচিকিৎসক দেহের অঙ্গবিশেষে যখন অস্ত্র প্রয়োগ করেন, তখন রোগীর কষ্ট হয়, কিন্তু কষ্ট দেওয়াটাই চিকিৎসকের উদ্দেশ্য ছিল, ইহা কোন বুদ্ধিমান সত্যবাদী ব্যক্তি বলিবেন না। অস্থচিকিৎসককে কখন কখন মাহুযের হাত পা চোখকান কাটিয়া ফেলিতে হয় । তাহাতে তাহার অঙ্গহানি হয় । কিন্তু এইরূপ ক্ষতি করাটাই চিকিৎসকের উদ্দেশু ছিল বলিলে সত্য কথা বলা হয় না। উদেখ, মানুষকে নীরোগ করা, তাহার হিত করা । + --- নবম অর্ডিন্যান্সের ফল নবম অর্ডিন্যান্স জারি করিবার কারণ বর্ণনা করিতে গিল্প বড়লাট বলিয়াছেন, যে, সৰ্ব্বসাধারণের মত অহিংস আইনলান প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে ক্রমশই অধিক পরিমাণে to: হইতেছে, এবং যদি তাহ আরও জোরের সহিত

  1. .

ইহার বিরুদ্ধে চালিত হয়, তাহ হইলে শীঘ্র দেশে এরূপ &খলা ও শাস্তির অবস্থা পুনঃস্থাপিত হইবে, যাহাতে তনি অভিযান্সের মত রাজবিধি অনাবশ্বক বিবেচনা রিতে সমর্থ হইবেন । লোকমত ক্রমশঃ অধিক রমাণে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে যাইতেছে, বড়লাট সরকারী বর এইরূপ পাইয়াছেন। আমরা সেরূপ খবর পাই নাই । আমরা ভারতীয় বলিয়া এবং সমস্ত দেশ হইতে খবর পাইবার যেরূপ ব্যবস্থা ভারত-গবন্মেণ্টের আছে, আমাদের তাহা নাই বলিয়। আমাদের ভ্রম হইতে পারে । কিন্তু বিলাত হইতে বিখ্যাত সাংবাদিক মি: ব্রেল ফোর্ড স্বয়ং গুজরাট ও বোম্বাই প্রেসিডেন্সীর অন্য কোন কোন অঞ্চল দেখিয়া লিথিয়াছেন, সমগ্র হিন্দু অধিবাসী ংগ্রেসের পশ্চাতে দাড়াইয়া উহার সমর্থন করিতেছে, এবং মুসলমানদের ৪ অৰ্দ্ধেক—বিশেষতঃ শিক্ষিত ও তরুণ মুসলমানেরা-কংগ্রেসের সমর্থক। বড়লাট বা তাহার শাসনপরিষদের কোন সভ্য ব্ৰেলসফোর্ড সাহেবের মত স্বচক্ষে কোন অঞ্চল দেখেন নাই । সুতরাং কাহার কথা অধিকতর ভ্রমশূন্ত হইবার সম্ভাবন, তাহা সহজেই বুঝা যায় । বস্তুতঃ বড়লাটের নিকট থবর প্রাদেশিক লাটদের নিকট হইতে আসে, র্তাহার খবর পান কমিশনার ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটদের নিকট হইতে, এবং শেবোত্ত হাকিমরা পুলিস্ স্বপারিণ্টেণ্ডেণ্টের মারফৎ অধস্তন পুলিস কৰ্ম্মচারীদের নিকট হইতে পান । দেশে শৃঙ্খলা ও শান্তি পুনঃস্থাপনের ভার আছে পুলিসের উপর । তাহারা কি স্বীকার করিবে, যে, তাহাদের চেষ্টা বিফল হইতেছে ? তাহাদের পক্ষে ইহা বলাই স্বাভাবিক, যে, প্রচেষ্টাটার জোর ক্রমশঃ কমিয়া আসিতেছে । উহার জোর কমিবার একটা প্রমাণ এই দেওয়া হয়, যে, সত্যাগ্রহীদের বিরুদ্ধে মোকদ্দমার সংখ্যা কমিতেছে। কিন্তু মোকদম কমান বাড়ান তো সম্পূর্ণরূপে পুলিসের হাতে ; এবং মোকদ্দমার সংখ্যার কোন বিশ্বাসযোগ্য বিবরণ প্রকাশিত হয় নাই । গ্রেপ্তার ও মোকদম না করিয়া পুলিস অধিকতররূপে লাঠি চালান ও “্যনতম বলপ্রয়োগে”র অন্তান্ত স্ববিদিত উপায় অবলম্বন করি ে ৈছে কি না তাহার কোন প্রমাণ নাই । বোম্বাইয়ের খবরের কাগজগুলিতে দেখা যায়, সেখানে লাঠিপ্রয়োগ পূৰ্ব্বাপেক্ষ বাড়িতেছে। সে যাহা হউক, নবম অড়ি দ্যান্সের ফল কিরূপ হইতেছে, তাহাই এখন বিবেচ্য। এই অডিন্যান্স জারি হইবার আগেই পুলিস কলিকাতায় কংগ্রেসের ও তৎসংশ্লিষ্ট কয়েকটি সমিতির আফিসে তাল লাগাইয়াছিল । এখন তাহাই সৰ্ব্বত্র হইতেছে । আগেও পুলিস খানাতল্লাসী করিয়া কাগজপত্র ও অন্যান্য জিনিষ লইয়৷ যাইত, এখনও লইয়া যায় কাৰ্য্যতঃ বেশী তফাৎ হয় নাই । তবে আগে কাহারও মোটরগাড়ী বাজেয়াপ্ত হয় নাই, এখন তাহা হইতেছে । অবশ্ব কংগ্রেসের আফিস পুলিস আগে সৰ্ব্বত্র বন্ধ করে নাই, এখন তাহ করিতেছে । তাহাতে কিন্তু এখনও কংগ্রেসের কাজ