পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৮ e অচল হয় নাই ; কোথাও মাঠে, কোথাও গাছতলায়, কোথাও রাস্তায় আফিস বসিতেছে । ংগ্রেসের সংবাদপত্ৰসকলও বাহির হইতেছে। বোম্বাই প্রেসিডেন্সীতে সত্যগ্রহের জোর বেশী ; সেখানে ংগ্রেসের আফিস করিবার বাড়ীর অভাব হইতেছে না— বিশেবতঃ বোম্বাই শহরে ও আহমেদাবাদ শহরে। বোম্বাইয়ে পুলিসের সহিত লোকে পরিহাসও করিতেছে । পুলিস সেখানকার একটি বড় বাড়ীতে স্থাপিত কংগ্রেস আফিস থানাতল্লাস করে ও তল্লাসের পর তাহা তালাবন্ধ করে । জিনিষপত্র সেখানে কিছুই ছিল না, কেবল একগাদ পুরাতন জুতা ছিল । বোম্বাইয়ে ও আহমেদাবাদে অনেক গৃহস্থ নিজের নিজের বাড়ীতে “কংগ্রেস আফিস” বলিয়৷ সাইনবোর্ড ঝুলাইয়াছে। সত্য গ্রহকে গবন্মেণ বৈপ্লবিক ব্যাপার বলিতেছেন। যাহাঁদের পার্থিব বিষয়সম্পদ বেশী, তাহারাই বিপ্লবকে সৰ্ব্বাপেক্ষ বেশী ভয় করে । কিন্তু সত্যাগ্রহের জোর বোম্বাইয়ে সকলের চেয়ে বেশী হওয়া সত্ত্বেও তথাকার বিদেশী কাপড়ের বাজার অনিদিষ্ট কালের জন্য বন্ধ আছে, পুলিস খুলাইতে পারে নাই। এবং “ব্যাপারী মহামণ্ডল” নামক সেখানকার সকল বণিকৃসমিতির সংঘ বড়লাটকে তারযোগে নবম অর্ডিন্যান্সের বিরুদ্ধে একটি দীঘ সমালোচনা ও প্রতিবাদ পাঠাইয়াছেন । বিলাতী কাপড় ও অন্যান্য কোন কোন বিলাতী মালের কার্টুতি কিরূপ কমিয়াছে এবং ক্রমশ: কিরূপ কমিতেছে তাহার বৃত্তান্ত খবরের কাগজে বাহির হইয়াছে । গুজরাটে সত্যাগ্ৰহ গুজরাটের বারদোলী এবং অন্যান্য তালুকার অনেক গ্রামের চাষী গুহস্থেরা সরকারী জমীর খাজান না দিয়া ঘরবাড়ী জমী জায়গা ছাড়িয়া অন্যত্র চলিয়া গিয়াছে। তাহাদের সংখ্যা পঞ্চাশ হাজারেরও অধিক। ব্ৰেলস্ফোর্ড সাহেব স্বয়ং এই সকল গ্রাম দেখিয়া তাহাদের অবস্থা বর্ণনা করিয়াছেন । তিনি বলিয়াছেন, হাজার হাজার লোকের এই প্রকারে স্বেচ্ছায় ঘরবাড়ী ছাডিয়া অন্যত্র চলিয়। যাইবার দৃষ্টান্ত কোন দেশের ইতিহাসে পাওয়া যায় না। র্তাহার নিকট গুজরাট গ্রামবাসীরা পুলিসের নূ্যনতম বলপ্রয়োগের যে সকল বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি তাত লিপিবদ্ধ করিয়াছেন । তত্রত্য কমিশনার গ্যারেট সাহেব তাহার নিকট এই সব বৃত্তান্ত শুনিয়া স্বয়ং দেখিবার শুনিবার নিমিত্ত কোন কোন জায়গায় যান। র্তাহাকে প্রবাসী—অগ্রহায়ণ, ১৩৩৭ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড চাষীরা স্পষ্টভাষায় বলিয়াছে, স্বরাজ না পাইলে তাহারা খাজান দিবে না । বলপ্রয়োগের বর্ণনা তিনি অসত্য বলিতে পারেন নাই, অথচ পুলিস কেন প্রহার করিল তাহাও নাকি বুঝিতে পারেন নাই । পুলিসের কোথাও কোথাও লাঠি চালাইবার এই একটা কারণ তিনি অল্পমান করেন যে, সেখানে হয়ত আন্দোলনকারী কোন কোন লোক ছিল । কিন্তু আন্দোলনকারী কোথাও থাকিলে পুলিস তাহাকে ঠেঙাইতে পারে, ইহা কোন আইনে বা অডিন্যান্সে নাই । যে আইন লঙ্ঘন করে, কোন কোন অপরাধের জন্য তাহাকে গ্রেপ্তার করিবার অধিকার পুলিসের অাছে। কিন্তু আন্দোলনকারী মাত্রেই আই-লঙ্ঘক বা ঐ রূপ অপরাধী নহে । দৃষ্টাস্তস্বরূপ বলা যাইতে পারে, ভারতবর্ষের দেশী বিদেশী প্রতোক সম্পাদক কোন না-কোন প্রকার আন্দোলন করে, কিন্তু তাহাদিগকে ঠেঙাইবার ব্যবস্থা কোন আইন বা উপআইনে নাই । গুজরাটের গৃহত্যাগীদিগকে ফেরত চাওয়া গুজরাটের বারদোলী ও অন্যান্য কোন কোন অঞ্চলের অনেক চাষী গৃহস্থ বড়োদ রাজ্যে নিজ নিজ আত্মীয়কুঢ়স্বদের বাড়ীতে আশ্রয় লইয়াছে । খবরের কাগজে বাহির হইয়াছে, যে, বোম্বাইয়ের গবন্মেটি বড়োদা গবন্মণ্টের নিকট এই সব গৃহত্যাগী প্রজাদিগকে ফেরত পাঠাইতে বলিয়াছেন । বড়োদা গন্মের্ণ কি করিবেন জানি না । কিন্তু বড়োদা ভারতীয় করদ ও মিত্ররাজ্যসমুহের অন্তভূক্ত না হইয়। যদি স্বাধীন দেশসমূহের মধ্যে খুব ছোটও হইত, তাহা হইলেও ব্রিটিশ গবন্মেণ তাহার নিকট হইতে গৃহত্যাগী প্রজা ফেরত চাহিতে পারিতেন না। কারণ, এই সকল গুজরাট গৃহস্থ চুরি ডাকাতী জাল জুয়াচুরি খুন লঘু বা গুরুতর আঘাত প্রভৃতি কোন রকমেরই অপরাধ করে নাই । তাহীদের কাহারও কাহারও কাছে বোম্বাই গবন্মেণ্ট যে সামান্ত থাজান পাইবেন, তাহা অপেক্ষ অনেক বেশী মূল্যের ঘরবাড়ী জমী তাহারা রাখিয়া গিয়াছে ; তাহ হইতেই খাজান আদায় হইবে । ভিন্ন ভিন্ন দেশের মধ্যে এন্ধুড়াডিশুনের অর্থাৎ বিদেশ হইতে আগত অপবাধীকে #ষ্টেশর কতৃপক্ষের ইস্তে সমর্পণের যে ব্যবস্থা আছে, তাহাও রাজনৈতিক—বিশেষতঃ অহিংস রাজনৈতিক – অপরাধের জন্য প্রযুক্ত হইতে পারে না ।