পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা । বিবিধ প্রসঙ্গ—ইঙ্গ-ভারতীয় বৈঠকের আরম্ভ সব দেশেই কনফারেন্স-জাতীয় সভায় এমন লোকের আবির্ভাব হয়, যাহার ঠেলাঠেলি করিয়া সামনে দাড়াইতে ও নিজের মত জাহির করিতে চায়। এক্ষেত্রেও তাহ হইবার সম্ভাবনা আছে । বাংলা দেশে অবরোধ প্রথা থাকায় ও অন্যান্য স্বাভাবিক কারণে নারীদের মধ্যে বিদ্যাবুদ্ধিতে ও চরিত্রগাম্ভীর্য্যে শ্রদ্ধেয়া অনেক মহল আত্মগোপন করেন। সেইরূপ মহিলাদিগকে লাহোরে পঠাইতে পারিলে ভাল হয়। র্তাহারা যদি সংক্ষেপে কিছু লিখিয়াও পড়েন, তাহা হইলে তাহাতে সকলে উপকৃত হইবে । চৈনিক নারী অল্প কয়েক বৎসরে চীন দেশে আশ্চৰ্যা পরিবর্তন ঘটিয়াছে । চৈ নক স্বাঞ্জাতিকতা এই একটা বড় কাজ ক রয়াছে, যে, সমাজে নারীদিগকে পূৰ্ব্বাপেক্ষা উন্নত স্থান দিয়াসে । জীবনের সকল কার্য ক্ষেত্রে তাহারা পুরুষদের মত চিকৎসক, আইনজীবী, শিক্ষক সরকারী কৰ্ম্মচারী, এবং ব্যাঙ্কারের কাজ করে । শাংখাইতে একটি ব্যাঙ্ক আছে, যাহার সমুদয় কাজ কেবলমাত্র নারীদের দ্বারা নিৰ্ব্বাহিত হয় । একজন চৈনিক মহিলা ডাক্তার নিজেই নিজের মোটর চালাইয়। রোগ দেখিয়া বেড়ান । প্যারিসে আইনের উপাধিপ্রাপ্ত ব্যারিষ্টার কুমারী সুম চেং শংঘাই জেলার এমন একজন আইনজীবী র্যাহাকে সমব্যবসায়ীব ভয় করে। অনেক চৈনিক বালিকা খুব ভাল কুস্তিগীর হইতেছে । গত বসন্তকালে হাংচাউয়ে বায়ামপট লোকদের তিন সপ্তাহব্যাপী এক সম্মেলন হয়। তাহাতে চীনের নানা প্রদেশ হইতে দুহাজার বালক ও বালিকা প্রতিযোগিতা করিবার জন্য উপস্থিত হইয়াছিল । ইঙ্গ-ভারতীয় বৈঠকের আরম্ভ গত ২৬শে কান্তিক ( ১২ই নবেম্বর ) গোলটেবিল বৈঠক নামে অভিহিত ইঙ্গ ভারতীয় কনফারেন্সের প্রারম্ভিক অধিবেশন হইয়া গিয়াছে । ভারতবর্মে সমগ্র মানবজাতির প্রায় একপঞ্চমাংশ লোক বাস কৰে । ইহা অনেক হাজার বৎসর ধরিয়৷ সভাদেশ বলিয়। পরিচিত। চিস্ত ও ভাবের রাজ্যে ইহী মানবজাতিকে অনেক শ্রেষ্ঠ বস্তু উপস্থার দিয়াছে। মানবজীবনের এমন কোন বিভাগ নাই, যাহাতে অগ্রগণ্য মটিয এদেশে জন্মগ্রহণ করে নাই । এ পর্য্যন্ত মাতুষের ইতিহাসে শ্ৰেষ্ঠস্থানীয় যে অল্পসংখ্যক লোক জন্মগ্রহণ করিয়াছেন, র্ত্যহাদের মধ্যে কোন একটি দেশ ভারতবর্ষ অপেক্ষ অধিক ব্যক্তির মাতৃভূমি নহে। ভারতবর্ষের পরাধীন অবস্থাতেও, পৃথিবীতে বিখ্যাত ভম যাহার, র্তাহীদের মধ্যে ভারতীয়দের স্থান কাহারও নিম্নে নহে। মরুভূমিতে বনম্পতি জন্মে না, বৃক্ষবহুল স্থানেই জন্মে। ভারতবর্ষে যে পুরাকাল হইতে মহামানবের জন্ম হইয়া আসিতেছে, তাহাতেই প্রমাণ হইতেছে, যে, মধু:i:চি ; গুণ ভারতবর্ষীয় সাধারণ মাকুযদের মধ্যেও বিরল নহে। বৰ্ত্তমান সময়ে ভারতবর্ষে দেশভক্তির, আত্মোৎসর্গের, সাহসের, সহিষ্ণুতার, মানবপ্রকৃতির উৎকর্ষে বিশ্বাসের, আশাশীলতার এবং সাতিশয় উত্তেজনা সত্ত্বেও ক্ষম ও অহিংসার অভূতপূৰ্ব্ব দৃষ্টান্ত লক্ষিত হইতেছে। এমন যে দেশ ও জাতি, তাহার ভাগ্যবিধানের চেষ্ট বিদেশে বিদেশীর আহবানে ও কন্তুত্বে হইতেছে, ইঃ গৌরবের বিষয় নহে। বিদেশীর সহিত সহযোগিতা ও মৈত্রী আমাদের অনভিপ্রেত নহে । কিন্তু তাহ। প্রকৃত সহযোগিতা হওয়া চাই ; তাহ আঠুগত্যের নামা স্তর হইতে পারে না । যাহার দেশের জন্য সৰ্ব্বাপেক্ষা অধিক আত্মোৎসর্গ, সাহস ও দুঃখসহিষ্ণুতার দৃষ্টান্ত দেখাইয়াছেন, তাঙ্গদের অনুপস্থিতিতে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণচেষ্ট ভারতবর্ষের পক্ষে সম্মানকর নহে । ইংলণ্ডেশ্বর পঞ্চম জর্জ বৈঠকের প্রথম অধিবেশনে প্রারম্ভিক বক্তৃত করেন। তিনি সমবেত ভারতীয় সভ্যদিগকে ভারতীয় দেশী রাজ্যসকলের নৃপতি ও প্রধানদের এবং ভারতবর্ষের জনগণের প্রতিনিধি বলিয়৷ স্বাগত সম্ভাষণ করেন । ইংলণ্ডের রাজারা এরূপ সভায় যাহা বলেন, তাহাতে তাহাদের নিজের চিন্তা ও মনের ভাব কিছুই প্রকাশ পায় না, বলা যায় না ; কিন্তু এপ্রকার সভায় রাজার বক্তৃত। মন্ত্রীমণ্ডলের মতানুসারীই হইয়া থাকে । মন্ত্রীমণ্ডল যাহা বলান, রাজা তাহাই বলেন । ভারতীয় সভ্যfদগকে তিনি প্রতিনিধি বটি তে বাধ্য ছিলেন । কারণ, তাহার মন্ত্রীরা, সুতরাং তিনি, জগতের কাছে বলিতে পারেন না, “আমরা ভারতবধ হইতে আগমণদের দুলাল মনোনীত কয়েকজন লোকের সহিত পরামর্শ করিতেছি ।” কেন-না, তাহ হইলে জগৎকে বলা হইবে, যে, ভারতবর্ধকে তাহার ভবিষ্যৎ নিদ্ধারণে নিজের মত জানাইবার কোন সুযোগ দেওয়া হইতেছে না। এইজন্ত প্রকৃত সেলফ ভিটামিনেশুনের ( প্রত্যেক জাতির রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার স্বনিৰ্দ্ধারণের ) পরিবর্ত্তে ব্রিটিশ মস্ত্রীমণ্ডল তাহার একটি মেকী অস্ত্রকরণ জগতের সম্মুখে স্থাপন করিতেছেন । ইংলেণ্ডে শ্বর ও এই অঙ্কুষ্ঠানে যোগ দিয়াছেন । তাহার পদমর্যাদা অতি উচ্চ, এবং ব্রিটিশ রাজনৈতিক প্রথা অনুসারে তিনি