পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] দেখাবে তার অধিকাংশই বানানো। এ কথা মানতেই হবে, আমার বয়সে আমার মতো শরীর নিয়ে রাশিয়ায় ভ্রমণ দুঃসাহসিকতা । কিন্তু পৃথিবীতে যেখানে সবচেয়ে বড়ো ঐতিহাসিক যজ্ঞের অনুষ্ঠান সেখানে নিমন্ত্রণ পেয়েও না আসা আমার পক্ষে অমার্জনীর হত । তা ছাড়া আমার কানে সেই কোরীক্ষ যুবকের কথাটা বাজ ছিল। মনে মনে ভাবছিলুম ধনশক্তিতে দুর্জয় পাশ্চাত্য সভ্যতার প্রাঙ্গণস্বারে ঐ রাশিয়া আজ নিধনের শক্তি-সাধনার আসন পেতেছে সমস্ত পশ্চিম মহাদেশের ভ্ৰকুটকুটিল কটাক্ষকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে, এটা দেখবার জন্যে আমি যাবো না তো কে যাবে ? ওরা শক্তিশালীর শক্তিকে, ধনশালীর ধনকে বিপৰ্য্যস্ত করে দিতে চায়, তাতে আমরা ভয় করব কিসের, রাগই করব বা কেন ? আমাদের শক্তিই বা কি, ধনই বা কত ? আমরা তো জগতের নিরশ্ন নিঃসহায়দের দলের । যদি কেউ বলে দুৰ্ব্বলের শক্তিকে উদ্বোধিত করবার জন্যেই তারা পণ করেছে তাহ’লে আমরা ফোন মুথে বলব যে, তোমাদের ছায়া মাড়াতে নেই ? তারা হয়ত ভুল করতে পারে— তাদের প্রতিপক্ষেরাও যে ভুল করবে না তা নয় । কিন্তু আমাদের বলবার আজ সময় এসেচে যে, অশক্তের শক্তি এখনই যদি ন জাগে তাহ’লে মামুষের পরিত্রাণ নেই, কারণ শক্তিমানের শক্তিশেল অতিমাত্র প্রবল হয়ে উঠেছে—এতদিন ভূলোক উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল, আজ আকাশকে পর্য্যস্ত পাপে কলুষিত করে তুললে ; নিরুপায় আজ অতিমাত্র নিরুপায় হয়ে উঠচে, সমস্ত স্থযোগ স্ববিধা আজ কেবল মানব সমাজের এক পাশে পুঞ্জীভূত হয়ে উঠল, অন্ত পাশে নিঃসহায়তা অন্তহীন । এরই কিছুদিন পূৰ্ব্বে থেকে ঢাকার অত্যাচারের কাহিনী আমার মনের মধ্যে তোলপাড় করছিল । কী সব অমামুষিক নিষ্ঠুরতা, অথচ ইংলণ্ডের খবরের কাগজে তার খবরই নেই—এখানকার মোটর গাড়ীর দুর্ধ্যোগে দুটো একটা মানুষ মলে তার খবর এদেশের এক প্রাস্ত থেকে অপর এক প্রাস্ত ছড়িয়ে পড়ে, কিন্তু আমাদের ধন প্রাণ মান কি অসম্ভব সস্তা হয়ে গেছে । যারা এত সস্তা তাদের সম্বন্ধে কখনো স্ববিচার হতেই পারে না । আমাদের রাশিয়ায় সকল মানুষের উন্নতির চেষ্টা SAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAAAS వీరి( নালিশ পৃথিবীর কানে উঠবার জো নেই, সমস্ত রাস্তা বন্ধ । অথচ আমাদের বিরুদ্ধ বচন জগতে ব্যাপ্ত করবার সকল প্রকার উপায় এদের হাতে । আজকের দিনে দুৰ্ব্বল জাতির পক্ষে এও একটি প্রবলতম গ্লানির বিষয় । কেননা আজকের দিনের জনশ্রীতি সমস্ত জগতের কাছে ঘোষিত হয়, বাক্যচালনার যন্ত্রগুলো যেসব শক্তিমান জাতির হাতে তারা অখ্যাতির এবং অপযশের আড়ালে অশক্তজাতীয়দের বিলুপ্ত করে রাখতে পারে। পৃথিবীর লোকের কাছে একথা প্রচারিত, যে, আমরা হিন্দু মুসলমানে কাটাকাটি মারামারি করি, অতএব ইত্যাদি । কিন্তু য়ুরোপেও একদা সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে কাটাকাটি মারামারি চলত—গেল কি উপায়ে ? কেবলমাত্র শিক্ষাবিস্তারের দ্বারা । আমাদের দেশেও সেই উপায়েই যেত । কিন্তু শতাধিক বৎসরের ইংরেজ শাসনের পরে দেশে শতকরা পাচজনের কপালে শিক্ষা জুটেছে, সে-শিক্ষাও শিক্ষার বিড়ম্বনা। অবজ্ঞার কারণকে দূর করবার চেষ্টা না করে লোকের কাছে প্রমাণ করা যে আমরা অবজ্ঞার যোগ্য, এইটে হচ্চে আমাদের অশক্তির সবচেয়ে বড়ো ট্যাকসো। মানুষের সকল সমস্ত সমাধানের মূলে হচ্চে তার সুশিক্ষা । আমাদের দেশে তার রাস্ত বন্ধ, কারণ law and order আর কোনো উপকারের জন্যে জামুগ রাখলে না, তহবিল একেবারে ফাকা । আমি দেশের কাজের মধ্যে একটি কাজকেই শ্রেষ্ঠ বলে মেনে নিয়েছিলুম। জনসাধারণকে আত্মশক্তিতে প্রতিষ্ঠা দেবার শিক্ষা দেব ব’লে এতকাল ধরে আমার সমস্ত সামর্থ্য দিয়েচি । এজন্তে কর্তৃপক্ষের আমুকুল্যও আমি প্রত্যাখ্যান করতে চাইনি, প্রত্যাশাও করেছি—কিন্তু তুমি জান কতটা ফল পেয়েছি । বুঝতে পেরেছি হবার নয় । মস্ত আমাদের পাপ, আমরা অশক্ত । তাই যখন শুনলুম রাশিয়াতে জনসাধারণের শিক্ষা প্রায় শূন্ত অঙ্ক থেকে প্রভূত পরিমাণে বেড়ে গেছে, তখন মনে মনে ঠিক করলুম ভাঙা শরীর আরো যদি ভাঙে তো ভাণ্ডক, ওখানে যেতেই হবে। এর জেনেছে অশক্তকে শক্তি দেবার একটি মাত্র উপায় শিক্ষ—অল্প স্বাস্থ্য শান্তি সমস্তই এরই পরে নির্ভর করে। ফাক। law