পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

రిశి e আমাদের নির্দিষ্ট তাবুতে রাত্রি দশটা পনর মিনিটের সময় পহুছিলাম। পর দিন অতি প্রত্যুষে আমাদের হাজরী করিতে হইল । ঠিক সময় হাজির না হইলে দণ্ড ভোগ করিতে হয় । ১৩ই জুলাই হইতে আগষ্ট পৰ্য্যস্ত—আমাদের পল্টনকে হংকং থাকিতে হইল । এই অবসরে তথাকার বহুবিধ শিক্ষাপ্রদ ও কৌতুহলজনক বিষয় দেখিয়া শুনিয়া সময় অতিবাহিত করিতে লাগিলাম। ভারতে প্রত্যাবৰ্ত্তন করিবার তারিখ আমাদিগকে পাচ দিন পূৰ্ব্বেই জানান হইয়াছিল। আমাদের জাহাজ ৪ঠা সেপ্টেম্বর, ১৯০১, বেলা এগারটার সময় নিরাপদে খিদিরপুর ডকে পহুছিল । আত্মীয় বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে দেখা করিবার ইচ্ছায় নেতার নিকট দশ দিনের ছুটি চাহিলাম । তাহাতে তিনি আমায় জিজ্ঞাসা করিলেন, ২৫শে సె a প্রবাসী—পৌষ, ১৩৩৭ { ৩eশ ভাগ, ২য় খণ্ড “তুমি মৈনপুরী জিলা-নিবাসী, তোমার কলিকাতায় আত্মীয়স্বজন কে ?’ আমার অভীষ্ট সিদ্ধ হইয়াছিল, আমি যুদ্ধক্ষেত্র দেখিয়াছি। তাই এখন সরলভাবে জানাইলাম, "না মহাশয়, আমি মৈনপুরী-নিবাসী রাজপুত নই। আমি ২৪ পরগণ জিলার বারাসত নিবাসী বাঙ্গালী ।” তাহাতে তিনি কৌতুহলের সহিত আমার মুখের দিকে তাকাইয়া অনুগ্রহ করিয়া ছুটি মঞ্জুর করিলেন । ৫ই হইতে ১৪ই সেপ্টেম্বর পর্যাস্ত আমি ছুটি পাইলাম। ৪ঠা তারিখে আমাদের পল্টন লক্ষ্মেণ যাত্রা করিল। আমি ম: e:১:রাণীকে আমার নির্বিঘ্নে দেশে প্রত্যাবর্তনের বাৰ্ত্তা এবং ছুটি লইবার বিষয় তারযোগে জানাইলাম । মাতাঠাকুরাণী এই সংবাদ পাইয়া দানধ্যান করিলেন ও ৬ সত্যনারায়ণের পূজা দিলেন । টেনের পথে ঐপারুল দেবী “দেখেছ একবার ব্যাপার—যত ভিড় এইদিকে !” কনক জলন্ত দৃষ্টিতে যাত্রীদের দিকে তাকিয়ে রইল, ইচ্ছা যে তার উইলফোসের প্রভাবে কেউ আর সে কামরার দিকে এগুতে সাহস না করে। একটি ধুতিপাঞ্জাবী-পরা ছোকরা গাড়ীর পাদানিতে উঠে উকি মেরে টেনের ভিতরটা একবার দেখে নিল ; তারপর গাড়ীর দরজার সামনে দাড়িয়ে ভিতরে ওঠবার জন্তে দরজা খুলতে গেল । কনক অগ্নিবী দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে রইল, সবুলও না, কথাও বলল না । ছোকরা দরজাট। নাড়া দিয়ে বললে, “সরুন না মশাই, দরজা আটুকান কেন ?” কনক তবু সরে না । ছোকরাও নড়তে চায় না, সে উঠবেই ঐ গাড়ীতে। কনকের ইচ্ছা করছিল দুটাে ঘুষি মেরে লোকটাকে তাড়িয়ে দেয় ; কিন্তু তা না করে গম্ভীরভাবে অত্যন্ত মৃদুস্বরে বলল, “যান্‌ না মশাই অন্য জায়গায়। কেমন ভদ্রলোক ? দেখছেন এ গাড়ীতে মেয়ের রয়েছেন, তবু এ গাড়ীতে ওঠা চাই!” ছোকরা চলে গেল ; বকতে বকৃতে গেল, “মেয়েরা রয়েছেন । মেয়ের রয়েচেন তো গাড়ী রিজার্ত করে নিয়ে যেতে পারেন না ? রিজার্ভ করতে পয়সা লাগে কি না ! চোখ রাঙানি দিয়ে রিজার্ভের কাজ চালাচ্ছেন।” কনক কান দিল না । নীচ যদি উচ্চ ভাষে, স্ববুদ্ধি উড়ায় হেসে । কিন্তু এ ছাই পৃথিবীতে কি বেশীক্ষণ হাসবার জো আছে ? কারু তা সহ্য হয় না । ছোকরাকে তাড়িয়ে কনক একটা তৃপ্তির দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলেছে কি না-ফেলেছে অমনি আবার একটি মাড়োয়ারি বাবুর আবির্ভাব । তিনি তার বিপুল দেহ নিয়ে দরজার হাতল ঘুরিয়ে ভিতরে ওঠ বার চেষ্টা করতেই কনক দরজা খুলে