পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SNS বিনয় কহিল, এসেছ ?” দুষ্ট, হাসিয়া চঞ্চল কহিল, এখুনি ? আগে হোক ও ভাল, তারপর ওর চোখের জলে নাকের জলে এক না করি তো নাম বদলে রাখব।” পরিমলের পাশের ঘরের সহপাঠীটি পড়া ফেলিয়৷ তাড়াতাড়ি উঠিয়া আসিল । কহিল, ‘আর জানি ? আমাকে প্রায় একমাস ধরে ও বলে আসছে ষে, ওর একটা কবিতা ‘শিখা'তে ছাপারে বলেছে।’ চঞ্চল কহিল, রাজ্যে জার রাবিশ, নেই, তাই ওর ছড়া নেবে ‘শিখা’তে ? অার কবিতার নাম হচ্ছে প্রেম। হ্যা, প্রেমের রূপ আকৃবার লোক ওই তো বটে । অস্থখ না হ’লে ‘ফুলস্ প্যারাডাইজ’ যে কেমন ক’রে ভাঙে সেটা ওকে বেশ করে বুঝিয়ে দিয়ে আসতাম। তা রোসো না, ভাল হ’লে সভা ডেকে সবাইকে ওর কবিতা জাওড়ে শোনাব।" বিনয় চুপ করিয়া ইহাদের কথাবার্তা শুনিয়া যাইতেছিল । কহিল, ও না কবিতা-লেখা তোদের জালায় ছেড়ে দিয়েছিল রে ?", চঞ্চল কহিল, "আমরা তো তাই ভাবতুম। তারপর একদিন স্বধীর এসে বললে, গভীর রাতে জেগে জানলার ধারে বাতি জালিয়ে বসে বসে রোজই প্রায় ঐ করে। জর কি আর সাধে হয় ? এমন চেহারা, এত যে ঠাট্টা করি তবু লজ্জা হয় না ? অপর ছেলেটি কছিল, ‘কবিতার চোটে একেবারে अन्न ?' তাচ্ছিল্যের স্বরে চঞ্চল কহিল, ‘তাকে কবিতা ব’লে কবিতার মার অপমান করে না। বাজী রাখুন বিমুদ, ছুটিায় আমন এক ডজন কবিতা আমি লিখে দিতে পান্ত্রি । যা-তা খানিকট ছড়া মিলালেই হবে ? ম:তারপর একটু ঢোক গিলিয়া কহিল, ‘সবুরই কর না বাপু কবিতা লিখতে সাধ, বেশ তো বয়স তো আর পার হয়ে যাচ্চে মা । যুক্ত ডে পোমী ছেলেগুলোর এমন সময় নটা বাজিল বিনয় আলোচনা বন্ধ করি। ডিউটি দিবার জন্ত বাহির হইয় পড়িল। পড়াটা ७:क कबिलाई शिबिै ि প্রবাসী—পৌষ, ১৩৩৭ নষ্ট হইল বলিয়া তখনও মনট। খারাপ। একটা অকাল [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড পঙ্ক ছেলে রাত জাগিয়া কবিতা লিথিয়া অম্লখ করে বসবে, তাহারই দায় সামূলাইতে হইবে অন্ত সকলকে মিলিয়া ! - ঘরের তক্তাপোষের উপর পরিমল তখন আচ্ছল্পের মত পড়িয়া ছিল। গায়ে একটা ইটালীয় রাগ, । মাথার ধারে ছোট্ট একটা তেপায়ার উপর ওষুধ-পত্র, জয়ের চাট"। প্রখর বলিয়া ঘরের বিজলী বাতিটা নিবানে রহিয়াছে, টেবিলের উপর ক্যাগুেল-ষ্ট্যাণ্ডে একটা বাতি মিচ্‌ মিট করিয়৷ জলিতেছে । বিনয় আসিয়া বিছানার ধারের চেয়ারটায় বসিয়া পড়িয়া সেট নিবাইয়া लि । তখন বন্ধ-করা কাচের জান্‌লাটা ভেদ করিয়া বাহিরের রূপালী জ্যোৎস্ব ঘরের ভিতর আসিয়া ছড়াইয়া পড়িয়াছে। বাহিরের গাছের শীর্ণ ডালের ছায়াগুলি আপিয়া সেই জ্যোৎস্নার ভিতর র্কাপিয়া কঁাপিয়া উঠিতেছে । কাচের ফ্রেমের ভিতর দিয়া বাহিরটাকে একটা ছবির মতই দেখায়, কবির রোগশীর্ণ মুখখানিও কেমন করুণ হইয়া চোখে পড়িতেছিল । এমনি করিয়া বসিয়া বসিয়া অনেকক্ষণ কাটিয়া গেল । ইহারই ভিতর কোন এক সময় বিনয়ের অসতর্ক চোখ দুটি তন্দ্রায় জড়াইয়া আসিয়াছিল । সহসা পরিমলের ক্ষীণকণ্ঠের ডাক শুনিয়া সে চমকাইয়া উঠিয়া কহিল, “কি চাই, বল ?’ —‘চাই না কিছুই বিহুদ ; আমার ঘুম আসছে না তাই তোমাকে ডাকৃণুম।” —‘8: I’ —“তুমি কি ঘুমুচ্ছিলে বিমুদা ? তবে ঘুমোও না একটু, আমার তো কোন দরকার নেই এখন P বিনয় আপত্তি করিয়া সোজা হইয়া উঠিয়া বসিল, কহিল, 'ন', আমার ঘুমোবার দরকার নেই, কিন্তু তোমার কি ঘুম ভেঙে গেল ?’ পরিমল রাগটা গলার ধার পর্যন্ত টানিয়া দিয়া কহিল, "আমি তো ঘুমোইনি বিষ্ণুদা, ঘুম আমার আসছে না ।”