পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

లిate প্রবাসী—পৌষ, ১৩৩৭ [ ७०* एठांशं, २न ५७ মাঝামাঝি হলেই হ’ল । এদিকে যে হাতীর মত মেয়ে ঘরে পুষে রেখেছ, তাকে পার করবে কি দিয়ে ? তিন বছর উপরি উপরি অজন্মা গেল, মহাজনের কাছে চালের খড়মৃদ্ধ বাধা পড়েছে, এ সব ছাড়াবো কোথা থেকে ? দত্তরা পাচ হাজার নগদ দিচ্ছে, সে খবর রাখ ? ছেলের গুণ ত কত, তিনি আবার কালে বউ ঘরে নেবেন না । কেমন না নেন, তাই দেখব । চামড়াটা একটু কটা হয়েছে কি না, তাই ধরাকে সরা দেখছেন।” ভূবনের বিবাহের কথা উঠিবামাত্রই গৃহিণী চুপ করিয়া গেলেন। সত্যই ত মেয়ে পার হইবে কেমন করিয়া ? তিনি ত আর বাপের বাড়ী হইতে দু-দশ হাজার আনিয়া দিতে পারবেন না। স্বতরাং বউ যতই কালে হোক, দত্তের মেয়ের সঙ্গে বিবাহে তাহাকে মত করিতেই হইবে। অদৃষ্টে স্থখ থাকিলে, এই বউ লইয়াই ছেলের স্বখ হইবে । তিনি ছেলেকে বুঝাইতে গেলেন, সে কাঝিয়া উঠিয়৷ বলিল, “নিজেদের স্থবিধার জন্যে বউ অনিছ, তোমরা খুশী হলেই হ’ল । আমি বিয়ে করতেই চাই না, জোর ক’রে মখন দিচ্ছ, তখন যেমন হোক আমার কিছু এসে কথাটা ঠিক, তবু মা বাৰা ছেলের বেয়াদবীতে চটিয়া গেলেন। পিতৃভক্তির খাতিরেও কালীমোহনের একটু খুশী হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু নিজেদের অন্যায়টাও বোধ হয় তাহারা মনে মনে বুঝিতেছিলেন, কাজেই এ লইয়া আর বেশী কথা-কাটাকাটি করা যুক্তিসঙ্গত বোধ করিলেন না। কালীমোহনের বিবাহ ঘটা করিয়া হইয়া গেল । বৌভাতও রাধামোহনের অবস্থার পক্ষে ঘটা করিয়াই হইল। কালীমোহন একেবারে চুপ মারিয়া গেল, এমন কি বাসরঘরে পর্য্যন্ত সে কথা বলিল না। শালী শালাজ পাড়ার মেয়ে সকলে রসিকতা করিয়া করিয়া হায়রাণ হইয়া বলিল, "ওম, একেই এত পছন্দ করে জানা হ’ল ? এ যে মাকাল ফল । রূপ থাকূলে কি হয়, বোবা যে ? ওরে লতি, বেশ বর হয়েছে তোর, যত খুনী বস্তৃত৷ শোনাস, কথার জবাব দেবে না।” - নববধূ লতিকা মনে মনে খুবই চাটল, কিন্তু কনে মাস্থ্য, তখন ত আর কিছু বলিতে পারে না, বাধ্য হইয়। চুপ করিয়া গেল। পনেরো বৎসর বয়সেই সে রাগী স্বভাব এবং একগুয়েমীর জন্য গ্রামে বিখ্যাত হইয়া উঠিয়াছিল। কেবলমাত্র মায়ের দোর্দণ্ড প্রতাপে বাড়িতে কেহ তাহাকে একটা কথ। বলিতে ভরসা করিত না, না হইলে এতদিন তাহার পিঠে চেলা কাঠ পড়িতে স্বরু হইত। মায়ের এক সস্তান, আদরে আদরেই তাহার দিন কাটিত, লেখাপড়া বা কাজকৰ্ম্ম শিখিবার সুবিধা হয় নাই । লতিকার বরকে দেখিয়া খুব পছন্দ হইয়াছিল। কিন্তু কথা লুকানো থাকে না, বর ষে বিবাহ করিতে চায় নাই, নিতান্ত টাকার লোভে তাহার মা বাপ জোর করিয়া বিবাহ দিতেছে, এ কথা কেমন করিয়া লতিকার কানেও পৌছিয়াছিল। কালীমোহনের নীরবতায় এ কথায় সে আরও সায় পাইল । রাগে তাহার সর্বাঙ্গ জালা করিতে লাগিল। তাহার মত আদরিণী রাজনন্দিনীকে এত অবহেলা ? না-হয় চেহারাই ভাল, তাই বলিয়া এত দেমাক আবার ভাল নয়। তাহাকে ত আর মাগন ঘরে নিতেছে না ? পাচ হাজার টাক। পণ, গহনা, কাপড়, বরাভরণ, আসবাব, তৈজসে আরও কোন পাচ ছয় হাজার না যাইতেছে তাহার সঙ্গে ? স্ববিধ পাইলে স্বামীকে যে-সকল চোথা চোখা কথা শুনাইয়৷ দিবে, লতিকা তাহা মনে মনে স্থির করিয়া রাখিল। কালীমোহনের মা খুব ঘটা করিয়া বরণ করিয়া বউ ঘরে তুলিলেন। সকলকে শুনাইয়া শুনাইয়া বলিলেন, “রংটাই যা শুীমবৰ্ণ, নইলে চেহারায় খুব ঐ আছে ।” লতিকা যে পরিমাণ সোনা রূপা সঙ্গে করিয়া জানিয়াছে, তাহাতে ইহার কম কিছুতেই তাহাকে বল চলে না। পাড়াপ্রতিবেশী সকলেই তখনকার মত স্বীকার করিয়া লইল য়ে, বন্ধুর চেহারায় সত্যই বেশ লম্বী আছে। কিন্তু বউ লইয়া সমস্ত বাধিতেও দেরি হইল না। বউ মুখ বুজিয়া সারাদিন কাজ করিখে, হাজার গালাগালিতে টু শব্দ করিবে না, তবে না সে বউ ? হুইলই বা খড়মানুষের মেয়ে, বিবাহ হইয়াছে , যখন গরীবের ঘরে, তখন তাহাকে সেইভাৰে চলিতে হইবে, এবং