পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] SMASAMMAMMAMAMS অপরাজিত ৩৭৭ সাড়ে ন’টার শো'তে। ফিরতে হয়ে গেল পৌনে বারে, ঘুম আসতে দেড়টা। বন্ধন, চা আনি । জাপানী গালার স্বদুখ চায়ের বাসনে সে চা আনিল, সঙ্গে টোষ্ট ও খোলাশুদ্ধ ডিম, কি এক প্রকার শাক, আধখানা ভাঙা আলু-সব সিদ্ধ, ধোয় উড়িতেছে। অপু বলিল, এসব সাহেবী বন্দোবস্ত বোধ হয় তোমার দাদামশায়ের, লীলা ? ডিম, তা আবার খোলামুদ্ধ, এ শাকট কি ? লীলা হাসিমুখে বলিল, ওটা লেটুস। দাড়ান ডিম ছাড়িয়ে দি । আপনার দাড়ির কাছে ও কাটা দাগট কিসের ? কামাবার সময় কেটে ফেলেচেন বুঝি ? অপু বলিল, ও কিছু মা, এমনি কিসের। বোসে, দাড়িয়ে রৈলে কেন ? তুমি চা খাবে না ? লীলার ছোট ভাই ঘরে ঢুকিয়া অপুর দিকে চাহিয়৷ হাসিল, নাম বিমলেন্দু, দশ এগারো বছরের স্বত্র বালক । লীলা তাহাকে চা ঢালিয়া দিল, পরে তিন জনে নানা গল্প করিল, লীলা নিজের আঁকা কতকগুলি ছবি দেখাইল, নিজের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা বলিল । সে এম-এ 4াশ করিবে, নয় তো বি-এ পাশ করিয়া বিদেশে যাইতে চায়, দাদামশায়কে রাজী করাইয়া লইবে, ইউরোপের বড় আট গ্যালারিগুলির ছবি দেখিবে, ফিরিয়া আসিয়া গজস্তা দেখিতে যাইবে, তার আগে নয় । খানিকক্ষণ কথাবাৰ্ত্তার পরে লীলা হঠাৎ বলিল-- আচ্ছ, অপূৰ্ব্ব বাবু, একট। ভালে চাকুরী যদি কোথাও পাওয়া ধায়, তে করেন ? অপু বলিল—কেন কবে না ; কিসের চাকুরী ? লীলা বিবরণটা বলিয়া গেল। তাহার দাদামশায় একটা বড় ষ্টেটের এটনি, তাদের আপিসে একজন সেক্রেটারী দরকার, মাহিনী দেড় শত টাকা, চাকরীট। গণমশায়ের হাতে, লীলা বলিলেই এখনি হইয়া যায়, সেইজন্তই আজ তাহাকে এখানে ডাকিয়া আনা । অপুর মনে পড়িল সেদিন কথায় কথায় সে লীলার *ছে নিজের বর্তমান চাকুরীর দুরবস্থা ও খবরের *গিজখানা উঠিয়া যাওয়ার কথাটা অন্য কি সম্পর্কে একবারটি তুলিয়াছিল। লীলা বলিল—সেদিন রাত্রে আমি তার মুখে কথাটা শুনলাম, আজ সকালেই আপনাকে পত্র পাঠিয়ে দিয়েচি, আপনি রাজী আছেন তো ? অাস্কন, দাদামশায়ের কাছে আপনাকে নিয়ে যাই, ওঁর একখানা চিঠিতে হয়ে যাবে। কৃতজ্ঞতায় অপুর মন ভরিয়া গেল। এত কথার মধ্যে লীলা চাকুরী যাওয়ার কথাটাই কি ভাবে মনে ধরিয়া বসিয়াছিল—যাই স্থবিধা পাইয়াছে অমনি স্নেহময়ী মমতাময়ী বোনের মতই তখনি সে ভাল করিতে ছুটিয়াছে । লীলা বলিল—আপনি আজ দুপুরে এখানে না খেয়ে যাবেন না। কিন্তু আসুন,—পাখাটা দয়া করে টিপে দিন না । কিন্তু চাকুরী হইল না। এসব ব্যাপারের অভিজ্ঞতা ন৷ থাকায় লীলা একটু ভুল করিয়াছিল, দাদামশায়কে বলিয়া রাখে নাই অপুর কথা । দিন দুই আগে লোক লওয়া হইয়। গিয়াছে। সে খুব দুঃখিত হইল, একটু অপ্রতিভও হইল । অপু দুঃথিত হইল লীলার জন্য। বেচার লীলা । সংসারের অভিজ্ঞতা তার কি আছে ? একটা চাকুরী খালি থাকিলে যে কতখানা উমেদারীর দরখাস্ত পড়ে, বড়লোকের মেয়ে, তার খবর সে কি করিয়৷ জানিবে ? লীগ বলিল-আপনি এক কাজ করুন না, আমার কথা রাখতে হবে কিন্তু, ছেলেবেলার মত একগু য়ে হ’লে কিন্তু চলবে ন-প্রাইভেটে ৰি-এটা দিয়ে দিন । আপনার পক্ষে সেট। কঠিন না কিছু। অপু বলিল--বেশ দেবো । লীলা উৎফুল্প হইয়া উঠিল-ঠিক ? অনার ব্রাই ? —অনুার ব্রাইটু । শীতের অনেক দেরী, কিন্তু এরই মধ্যে লীলাদের নাউবারানার পাশে জাফরীতে-ওঁঠানে মার্শাল নীলের লতায় ফুল দেখা দিয়াছ, বরেন্দার সিাড়র দু পাশের টবে বড় বড় পল নিরোনি ও ব্রাক্ প্রিম ফুটিয়াছে। বর্ষশেষে চাইনিজ ফ্যান পামের পাতাগুলা ঘন সবুজ ! পদ্মপুকুর রোডে পা দিয়া অপুর চোখ জলে ভরিয়া আসিল। লীলা,ছেলেমানুষ লীলা—সে কি জানে সংসারের