পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 করিতে পারে নাই । লিখিত ভাষা ধীরগতি ও গম্ভীর, কথ্যভায় দু’এরই সময় বিশেষে প্রয়োজন আছে, অথচ, এ দুই কিছুতেই এক হইতে পারিতেছে না-যদিও ইহারা খুব নিকট আত্মীয় । অন্য অন্য জায়গায় উপ ভাষাগুলি নিস্তেজ হইয়া পড়িতেছে । বোধ হয় কোনও দিন সাহিত্যের ভার্য। হওয়ার গেী বব ইহার দাবী করিবে না। কিন্তু অঞ্চল বিশেষের উপভ{য এখনও বেশ জীবন্ত, বাংলা ভাষার উপরে বহু শব্দ ও বাক্য ভঙ্গী চপাইতে সচেষ্ট । তাহা ছাড়া, সেই সকল অঞ্চলের কথ্য ভাষা হিসাবে ইহাদের জীবনীশক্তি এখনও কিছুমাত্র ক্ষীণ হয় নাই । ভাগিরথীতীরের কথ্য ভাষা ইহাদের ভিত্তিকে যতটুকু নাড়া দিতে পারিয়াছে, তাহাতে পূৰ্ব্ব বঙ্গের উপভাষ|গুলির ধে ক্ষতি হইয়াছে, তাহার অপেক্ষ অনেক বেশী ক্ষতি হইতে চলিয়ছে উহার নিজের । বাঙ্গাল দেশ জয় করিতে গিল্প পশ্চিম বঙ্গের বাংল। তাহার নিজস্বত৷ -->। রাইতে বসিয়াছে। ভবিষ্যতেও উহার প্রসার যতই বাড়িবে, ততই উহার উপর উপভাষার প্রভাব বেশী হুইবে । বঙ্গল শব্দ ও ইডিয়ম, উচ্চারণভঙ্গী ও সুর হয়ত বাংলা ভাষাকে বিশেষ করির পরিবৰ্ত্তিত করিতে চাহিবে । এই পরিবর্তন কতদূর পর্য্যস্ত যাইবে আজ তাই। বলা সম্ভব ন হইলে ও ভবিষ্যতের একীভূত কথ্য বাংল। ভাৰ্য যে পশ্চিমবঙ্গের আজিকার ষ্ট গুড়ি কথা বাংলা ভ{য হুইবে না,তাহ প্রায় সুনিশ্চিত । ভাযার অভিধানের শব্দ বিচার করিয়া অধ্যাপক শমুক্ত স্বনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় মহাশয় স্থির করিয়ছেন যে, বাংলা ভাযার শতকর। ৪৪টি শব্দ থাটি সংস্কৃত তৎসম], ৫১'৪৫টি শব্দ সংস্কৃতজ (তৎভব বা দেশ) শব্দ,৩৩০টি শব্দ আরবী-ফারসী ও মাত্র ১২৫টি শব্দ বিলাতী ইউরোপীয় । কিন্তু বাংলা দেশে এমন একটি সম্প্রদায় আছেন যাহার প্রতিকাজে নিজেদের সংখ্যান্তপাতে বা কোনও বিশেষ ব্যবস্থার বলে ক্ষমত। আয়ত্তের পক্ষপাতী। তাহীদের এই মনোভাব বেশী দিনের নহে, ইহার ধৌক্তিকত। বা অযৌক্তিকতা বিচার করিয়াও এই ক্ষেত্রে লাভ নাই । কিন্তু, এই মনোভাবকে ভুলিলে চপল ও নৃত্যপর ; বর্তমান ব; ল। প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড চলিবে না, ইহার দিকে চোখ রাখিয়াই ইহর ফলাফল গণনা করিতে হইবে। পাঁচশত বৎসর ধরিয়া ক্রমেন্মেষের ফলে বাংলা ভাষা আজ ধে মূৰ্ত্তি পাইয়াছে, বাঙালী মুসলমান এই পাঁচ শত বৎসর তাহার গঠনে সহায়তা করিয়| আসিয়াছেন । তখনও তাহারা মনে-প্রাণে বাঙালীত্বকে বড় বলিয়া জানিতেন, তাই আরবীয় রূপদ্বেষ বা আরবী-ফারসী শব্দের প্রতি ভক্তির আড়ম্বর দেখাইবার জন্য ব্যস্ত হন নাই । তাই কবি আলওয়াল সংস্কৃতের ভাণ্ডার উজাড় করিতে ছাড়েন নাই, দৌলত কাজীও সংস্কৃতজ শব্দের সঙ্গে “তরকে মাওলাত” করিতে চাহেন নাই । বিষয়ভেদে কোনও কোনও হিন্দু ও মুসলমান লেখক ফারসীআরবীর বেশী করিয়া শরণ লইয় নিজেদের সুবুদ্ধিরই পরিচয় দিয়াছেন। হুতোম পেচার নক্সার ফারসী শব্দ সংখ্যায় আনুমানিক শতকরা ৭-১, আভিধানের অনুপাত মত হওয়া উচিত ছিল ৩ ১ । কিন্তু এ যুগে বাঙালী মুসলমান তাহার পাসেণ্ট জ-কস মনোভাবের বশে কতকট আন্তরূপ ভাবিতে চেষ্টা করিতেছেন । ধে-সব শব্দ বাংলা ভাষায় কয়েণী হইয়াছে, শুধু ভাহাদের ব্যবহারেই তাহার আর তৃপ্ত নহেন । মনে হয়, বাংলা ভাষায় শতবর পঞ্চাল্পটি আরবী-ফারসী শব্দ প্রবেশ না করাইলে তাহাদের সম্প্রদাযুগত গৌরববোধ ক্ষুন্ন হইবে । অথচ এ নিতান্তই অশুভবুদ্ধি। বাঙালী মুসলমান সৰ্ব্বাংশে বাঙালী, বাংলা ভাষাও সৰ্ব্বাংশে বাংলা । ইহার বনিয়াদ সংস্কৃত আৰ্য্য ভযার উপর, তাহা নষ্ট করিবার উপায় নাই - শু্যামলা বাংল। দেশ কিছুতেই আরবের বালুকা-পাণ্ডুর মরুভূমি হইবে না। এই গঙ্গামাটিতেই বাংলা ভাষার গাথুনি গাথা হইয়াছে, তাহাতে আরবের বালু ছড়াইয়া লাভ কি ? এই গাথুনির গায়ে আরবী-ফারসীর নকাশী কাটা চলিতে পারে এবং চলুক, ইহাতে কোনও বাঙালীর আপত্তি নাই । তাহার বেশী কিছু সম্ভব নয় । বাঙালী মুসলমান যদি উত্তর ভারতের মুসলমানের অন্তকরণে স্বভাযাতে যদৃচ্ছ ফারসী শব্দ চালাইতে চাহেন, তাহা হইলে তাহদের নিজেদের কণ্ঠ রুদ্ধ হইবে, তাহারা বাংলা উদ্ধ, কৃষ্টি করিতে পরিবেন না। বাংল। আমির হাম-জা বা জঙ্গনামার ভাষা আচল,