পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\LV আমরা অনেক বাংলা শব ব্যবহার করি যেগুলি মূলত বাংলা নয়, বাংলায় ইংরেজির অম্বুবাদ মাত্র । ইহাদিগকে প্রচ্ছন্ন বিদেশী শব্দ বলা যাইতে পারে। টাইকলার পর বাঙালী সাহেবের মত এই পৰ্য্যায়ের কোনও কোনও শব্দ মনে-প্রাণে বাংলা ভাষার ধৰ্ম্ম খোয়াইয়াছে, কিন্তু কোন কোনটি আবার খাটি বাংলা নাগরিক হইয়াছে। ইংরেজী শিক্ষার ক্ষুরে যিনি মাথ। মুড়ান নাই তিনি ‘বিশ্ববিদ্যালয় বলিতে কোনও বিদ্যালয়ই বুঝিবেন না । সাধারণ লোকে ইউনিভাসিটি বলিলেও হয়ত বুঝিতে পারে, কিন্তু যাহার ওই শব্দটি জানা নাই, তিনি উহার ভাষাস্তরিত শব্দটিকেও চিনিবেন না । অথচ, বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা ভাষায় পাকা হইয়াছে । ইহার মত সুপ্রচলিত হইতে অধিকাংশ প্রচ্ছন্ন বিদেশী শব্দের অনেক দেরী হুইবে । উনবিংশ শতাব্দীর কোনও বাঙালী যদি তাহার চিতাশয্যা ছাড়িয় আজ উঠিয়া আসেন, তবে তিনি অনেক বাংলা কথারই অর্থ গ্রহণ করিতে পারিবেন নু । ইহার এক কারণ এই যে, ইতিমধ্যে এক গিয়াছে, জাতির জীবনে, রূপে, কাজেই রিপ ভ্যান উইঙ্কলের সত তাহার বিস্ময়ে বিমূঢ় হইবার সম্ভাবনা । মনে রাখিতে হইবে যে, আমরা লেখায় যেমনি ছুংমার্গ, কথায় তেমনি উদার, কমপলিটান । লেখায় আমরা যতদূর সম্ভব বিলাতীবজন করি, কিন্তু কথায় আমর অস্তুত তাহার দশ গুণ বিলাতী শব ব্যবহার করিয়৷ শোধ তুলি । ইহা প্রায় আমাদের মজণগত হইয়া উঠিয়াছে। আজ অনেক খাটি বাংলার ভাবকেও আমাদের ইংরেজী পোষাক পুরাইয়া প্রকাশ করিতে হয় । ‘টেকে। অপেক্ষ ‘তকৃলি’ ইংরেজী সংবাদ-পত্রের দৌলতে আজ বেশী প্রচলিত, ‘একঘরে অপেক্ষা ‘বয়কট,’ ‘ধয় দেওয়া’র অপেক্ষ। ‘পিকেটিং করা আমাদের মনঃপূত । অপর পক্ষে যাহাদের ভাষান্তরিত করিয়াছি, এমন অনেক বাংলা শব্দের অপেক্ষ মূল ইংরেজী প্রতিশব্দ আমাদের সহজবোধ, এবং মনে মনে ত জমা না করিয়। বাংলা শব্দটি শুনিবাৰ্মাত্র আমরা তাহাব অর্থ গ্রহণ করিতে পারি না । যে অভিধানখানা বাঙালী সমাজের একটি আদরণীয় জিনিযু হইবে বলিয়৷ مـو মহাবিপ্লব মনে, ভাবে, ভাষায় । প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩৭ [ ৩eশ ভাগ, ২য় খণ্ড আশা করা যায়, সেই চলস্তিকার’ যে-কোঙ্গও একটি পাতায় চোখ বুলাইলেই ইহার প্রমাণ পাওয়া যাইবে । পাতা উন্টাইতেই ১৯৪ পৃষ্ঠা খুলিয়া গিয়াছে, ইহাতে নিম্নোক্ত বাংলা শব্দগুলিকে যথাক্রমে পরবর্তী ইংরেজী শব্দের সহায়ে এইরূপে ব্যাখা করা হইয়াছে ! "জনপ্রিয়— popular”, “#####*|-the public”, “3#ị - birth,” “Solo-innate, congenital,’ ‘şāsūri-birthday”, লক্ষ্য করিবার বিষয় এই ধে, সত্যসত্যই ইংরেজী প্রতিশব্দগুলির সঙ্গে আমরা বেশী পরিচিত। বাংলা ভাষার এই ঝে কি এত প্রবল হইয়া উঠিয়াছে যে, আজি লবণকে শুধু নূন বলিলেই চলে না, অভিধানকার salt' বলিয়াও তাহার পরিচয় দিতে বাধ্য হন ( চলস্তিকা —oj: 8vs ) তথাপি এই কথা ঠিক যে, ভাষান্তরিত শব্দ, শব্দ-সমষ্টি, বা ইডিয়ম-গুলি বাংলা ভাষার শ্রীবৃদ্ধির সহায়তা করিতেছে । কোনও কোনওটি থাটি বাংল। হইতে পারে নাই বলিয়। নিৰ্বিচারে ইংরেজী শব্দ গুলিকে মানিয়া লওয়া খুব সুস্থ অবস্থার পরিচায়ক নয়, ইহাতে বাংলা ভাষাভাষীর মানসিক আলস্থের প্রশ্রয় দেওয়া হইবে এবং ভাষাও জড়তা-প্রাপ্ত হইবে । বাংলা ভাম| প্রতিদিন নব-নব বস্তু ও ভাবের সংস্পর্শে আসিবেই, সেই বস্তু ও ভাবকে প্রকাশ করিবার জন্য যতটা সে নিজে প্রয়াস করে ততই পক্ষে অাশার কথা । এই কারণেই কালচার’ অর্থে আমরা ‘সংস্কৃতি’র মত অদ্ভুত শবকেও বরণ করিয়া লইয়াছি । বাংলা ভাষার এই প্রয়াস দুই পথে অগ্রসর হইতে পারে—আত্মসম্প্রসারণ ও আত্মসাতের পথ । উপায়--- সংস্কৃতের ভাণ্ডার সংস্কৃতজ উপসর্গের বা দু একটি যোগে, কিম্বা নিজের দেশীয় দু-একটি উপসর্গ প্রত্যয়ের দ্বারা নূতন শব্দ চয়ন কর। সামান্তরূপে ফারসী শব্দ ও ফারসী উপসৰ্গাদির দ্বারাও মাঝে মাঝে কাজ চলে। ইহা ছাড়া সমাস একটি প্রধান যন্ত্র । কিন্তু নামধাতু বাংলায় প্রায় অচল । ইংরেজীর মত বিশেষ্যকে বিশেষণে বা ধাতুতে, উপসর্গকে ধাতুতে বা তাহfর আত্মসম্প্রসারণের يوكية হইতে সংস্কৃত ও প্রত্যয়ের