পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

gరిr তাহারা বেশী অংশট। চান, যেহেতু তাহারা সংথ্যায় বেশী । আবার যেখানে তাহারা সংখ্যায় কম, সেখানে তাহারা ংখ্যার অকুপাতে প্রাপ্য অপেক্ষা অধিক সংখ্যায় ব্যবস্থাপক সভার সভ্যত্ব এবং সরকারী চাকরী চান, নতুবা তাহদের স্বার্থরক্ষা হইবে না । এইরূপ দুমুখে। যুক্তি হিন্দুরা কেন প্রয়োগ করিতে পাইবে না, বুঝিতে পারি না। তাহারাও কোন কোন প্রদেশ ও অঞ্চলে সংখ্যায় বেশী, কোথাও বা কম, এবং সমগ্র ভারতবর্ষে তাহার। সংখ্যায় বেশী। মুসলমানের যদি বলেন, “আমরা শিক্ষায় অনগ্রসর এবং মোটের উপর সংখ্যায় নৃান, অতএব আমাদের জন্য ব্যবস্থাপক সভার সভ্যত্ব ও চাকরী বেশী করিয়া চাই,” তাহা হইলে সংখ্যায় নূ্যন ও র্তাহাদের চেয়েও শিক্ষায় অনগ্রসর অবনত শ্রেণীর লোকের ও আদিম-নিবাসীরাও ঐরূপ দাবী উপস্থিত করিতে পারে। মুসলমানেরা যদি বলেন, “আমরা আগে দেশের রাজা ছিলাম অতএব আমাদের বিশেষ দাবী গ্রাহ করিতে হইবে,” তাহা হইলে জিজ্ঞাসা করিতে হইবে কোন সময়কার রাজপদের উপর এই দাবী প্রতিষ্ঠিত। পঞ্জাবে শিখ রাজত্বের পর ইংরেজ রাজত্ব হয় । অন্যত্র মোগল বাদশাহ নামে রাজা ছিলেন, তাহার মনিব ও রক্ষাকর্তা ছিল মহারাষ্ট্রায়ের । এবং দেশের একটা বিস্তৃত ভূখণ্ডের উপর নামে ও কাজে উভয়তঃ মহারাষ্ট্ৰীয়ের রাজা ছিল । সুতরাং ইংরেজদের ঠিক আগে মুসলমানরা সমস্ত ভারতবষের রাজা ছিল, ইহা ঐতিহাসিক সত্য নহে । মোগল বাদশাহের উপর মহারাষ্ট্ৰীয়দের কত্ত্বত্বের কথা ছাড়িয়া দিলেও বলিতে হইবে, যে, মুসলমান, মহারাষ্ট্ৰীয় ও শিখদের হাত হইতে ভারতবর্ষের রাজত্ব পাইয়াছে। স্বতরাং পূৰ্ব্বপ্রভূত্বের উপর যদি মুসলমানদের দাবী প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহ হইলে সেইরূপ দাবী মহারাষ্ট য়েব’ এবং শিখেরাও করিতে পারে । কিন্তু এখন পৃথিবীর সর্বত্র সম্রাট ও রাজাদের পদচ্যুতি হইয়৷ সৰ্ব্বসাধারণের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত হইতেছে। এখন, আগেকার কালে কাহার বাপদাদা ধৰ্ম্মভাই রাজা ছিল, সেকথা তোলা বৃথা । সত্যিকার জীবিত সম্রাট ও রাজার মরিয়া ভূত হইতেছেন যে-যুগে,সে-যুগে আগেকার যে-সব ইংরেজরা পারেন। রাজা বাদশাহ অনেক দিন পূৰ্ব্বে মরিয়া ভূত হইয়াছেন তাহাদের দোহাই দেওয়া বুদ্ধিমানের কৰ্ম্ম নহে। অবশু, মুসলমানদের একদল – বরাবর তাহাদিগকেই লক্ষ্য করিয়া মুসলমান শব্দ প্রয়োগ করিতেছি—বলিতে পারেন, “আমরা তর্ক করিতে চাই না ; যাহা চাহিতেছি তাঙ্গ না দিলে স্বরাজ স্থাপনে রাজী নই ৷’’ উত্তম কথা । কিন্তু দরদস্তুর করিয়া স্বরাজ স্থাপিত হয় না । যাহার স্বরাজ লাভের জন্য সৰ্ব্বপ্রকার ত্যাগ স্বীকার ও সৰ্ব্বপ্রকার দুঃখ সহ করিতে পারে, তাহার স্বরাজ স্থাপন করিবে ; দরদস্তুরে নিপুণ লোকেরা দরদস্তুর করিতে থাকুন। স্বাঞ্জাতিক একটি মুসলমান সংবাদপত্র হিন্দুদিগকেও সাম্প্রদায়িকতা দোষে দুষ্ট বলিতেছেন এবং বলিতেছেন, যে, হিন্দুরা যদি স্বাঞ্জাতিক ( দ্যাশন্যালিষ্ট ), তাহা হইলে নেশুনের যে-কোন ধৰ্ম্মী লোকই ব্যবস্থাপক সভার সভ্য হউক বা চাকরী পাক, তাহাতে তাহাদের আপত্তি হয় কেন ? কথা কাটা কাটি করিবার ইচ্ছ। থাকিলে আমরা বলিতাম, নেশুনের যে-কোন ধৰ্ম্মী লোক যে-কোন চাকরী পাক্ বা ব্যবস্থাপক সভার সভ্য হউক তাঙ্গতে মুসলমানেরাই আপত্তি করেন কেন ? কিন্তু এরূপ প্রশ্ন না করিয়া স্বাঞ্জাতিকদের পক্ষের কথা যতটা বুঝি বলিতেছি । মুসলমানের চান, কেন্দ্রীয় এবং প্রাদেশিক ব্যবস্থাপক সভা-সমূহে চির কাল নির্দিষ্টসংখ্যক মুসলমান সভ্য থাকা চাই-ই । কিন্তু সব সময়ে এই সংখ্যক যোগ্য মুসলমান পাওয়া না-যাইতে পারে, এবং যোগ্যতম লোক র্যাহার। এই মুসলমান সভ্যেরা তাহাদের মধ্যে গণনীয় না-হইতে পারেন । অথচ গণতন্ত্রের মানেই এই, যে, যাহারা অধিকাংশের মতে যোগ্যতম বিবেচিত হইবেন, দেশের কাজের ভার তাহাদের উপর থাকিবে । হিন্দু স্বাঞ্জাতিকের বলিতেছেন না, যে, হিন্দুরাই যোগ্য বা যোগ্যতম ; মুসলমানদের মধ্যেও যোগ্য ও যোগ্যতম লোক থাকিতে কোন কোন সময়ে যদি সব বা অধিকাংশ যোগ্য বা যোগ্যতম লোক মুসলমান হন, তাহাতে হিন্দুরা আপত্তি করিবেন না ; কিন্তু তাহারা কোথাও বরাবরের জন্ত, চিরকালের জন্য, আইনের দ্বার নিদিষ্ট কোন সম্প্রদায় হইতে নিৰ্বাচিত অধিকতম বা ।