পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8సెశి প্রবাসী-মাঘ, ১৩৩৭ { ৩eশ ভাগ, ২য় খণ্ড সবাই মিলে সত্তব বোতল মদ্যপান করেছি। কুড়িজনের ভিতর ভাগ করলে হয় এক এক জনের ভাগে সাড়ে তিন বোতল । বীর ভিন্ন এ পরিমাণ থেতে আর কে পারে ?” এমন সময় সদর দরজা মড়, মড় করিয়া উঠিল। কেরাণী ভয়ে কঁাপিতে কঁাপিতে বলিল, “তারা এইবার

ঢুক্ছে।” . ডাক্তার দিব্য নিশ্চিন্তভাবে জিজ্ঞাসা করিলেন, “এখন ক’টা বেঞ্জেছে ?” ক্যালিডোনিও বলিল, "এগারোট, কিন্তু আপনি কি দরজা ভাঙার শব্দ শুনতে পাচ্ছেন না ? - চিকিৎসক বললেন, “দরজা ভাঙক, সময় ঘনিয়ে এসেছে।” ফরাসীরা চেয়ার ছাড়িয়া উঠিবার চেষ্টা করিতে করিতে বলিল, “সময় ? কিসের সময় ? কিন্তু অতিরিক্ত মদ্যপানে তাহদের এমন অবস্থা হইয়াছিল যে, কেহই উঠিতে পারিল না। তাহারা বসিয়া বসিয়াই তরবারি খুলিয়া চীৎকার করিতে লাগিল, “ডাদের ঢুকতে দাও। আমরা অভ্যর্থনা করবার জন্যে তৈরি হয়ে আছি।” নীচে এই সময় দোকানের শিশি বোতল ভাঙার শঝ শোনা গেল এবং সিড়িতেও এক সঙ্গে অনেক লোকের পদধ্বনি শোনা গেল । সমবেত কণ্ঠে বিকট চীৎকার হইল, "ফরাসীর বন্ধুকে খুন করে ফেল।” গাসিয়া তড়িৎ-পুষ্টের মত লাফাইয়া উঠিলেন। টেবিল খরিয়া তিনি খাড়া হইয়া দাড়াইলেন, যাহাতে আবার চেয়ারে বসিয়া না পড়েন । র্তাহার দৃষ্টিতে যেন আনন্দ উছলিয়া পড়িতেছিল, বিজয়ী বীরের হাসি র্তাহার অধরে ফুটিয়া উঠিল । তাছার মূৰ্ত্তি যেন পরিবর্তিত হইয়া গেল। তাহার দেহ তখন আসন্মমৃত্যু ও উত্তেজনার আবেগে থরথর করিয়া কঁাপিতে লাগিল। তিনি গভীর স্বরে এই কথা বলিতে লাগিলেন, "ফরাসী সৈনিকগণ ! যদি আপনার সঞ্চলে, বা আপনাদের মধ্যে কেউ, ২৮৫ জন স্বদেশবাসীর মৃত্যুর শোধ নেবার, বা ২০ জন দেশবাসীকে মৃত্যু থেকে বাঁচাম্বার সুযোগ পান, যদি পিতৃপুরুষের অপমানিত আত্মাকে তৃপ্ত করতে পারেন, ২৮ জন বীরের ইত্যার ੱਢਿੱਖ নিতে পারেন, ২০ ভ্রাতার প্রাণ রক্ষণ করে জাতীয় সৈন্যদলকে সমৃদ্ধ করতে পারেন, তাহলে কি নিজের ছার জীবনের জন্য বিন্দুমাত্রও মায়া করবেন ? বাইবেলে যে স্যাম্সনের গল্প আছে, তার মত কি আনন্দেই সৌধস্তম্ভ নিজের মাথার উপর টেনে ফেলে ভগবানের শত্রুদের সমাহিত করতে পারেন না ?” ফরাসীর। যেন না বুঝিয়াই জিজ্ঞাসা করিতে লাগিল, “ও কি বলছে ?” - কালিডোনিও চীৎকার করিয়া বলিল, “তারা পাশের ঘরে ঢুকে পড়েছে।” গাসিয়া উচ্চকণ্ঠে বলিলেন, “তাদের আসতে দাও। বসবার ঘরের দরজা তাদের জন্যে খুলে দাও । সকলে আস্বক, এসে দেখুক, পাভিয়ার যোদ্ধার বংশধর কি করে মৃত্যুকে বরণ করে।” ফরাসীরা ভয়ে বিস্ময়ে অভিভূত হইয় পড়িয়ছিল । তাহারা যেন মৃত্যুকে মূৰ্ত্তিমান রূপেই ঘরে প্রবেশ করিতে দেখিবে বলিয়া আশঙ্কা করিতেছিল । টেবিলের উপর হইতে তরবারি তুলিব র জন্য তাহার প্রাণপণে চেষ্ট করিতে লাগিল, কিন্তু তাহীদের দুৰ্ব্বল হস্ত বারবারই বিফল হইল। বোধ হইতে লাগিল যেন তরবারিগুলি টেবিলের কাষ্টের সঙ্গে অদৃশ্ব শক্তিযোগে সংলগ্ন रदेश{ গিয়াছে । এই সময় প্রায় পঞ্চাশজন স্ত্রী পুরুষ, ছোরা, তরবারি, পিস্তল প্রভূত লইয়া লোমহর্ষণ চীৎকার করিতে করিতে ঘরে ভিতর ঢুকিয়া পড়িল । কয়েকজন স্ত্রীলোকই প্রথম ঢুকিয়াছিল। তাহার চীৎকার করিয়া “সকলকে খুন কর।” গামিয়া ভীষণকণ্ঠে বলিয়া উঠিলেন, "চুপ কর, নিরন্ত হও ।” তাহার কণ্ঠের তীব্রতায় ফরাসীরা আরও হতবুদ্ধি হইয়া গেল এবং দাঙ্গাকারীদের মনেও স্ট্রীড়ির উদ্রেক হইল । তাহারা ঠিক এমন ভাবে অভ্যর্থনা লাভ করিবে মনে করিয়া আসে নাই । গাসিয়ার কণ্ঠ ক্ষীণবল হইয়া জাসিতেছিল। তিনি বলিতে লাগিলেন, “ছোরারি দেখাবার বোনে দরকার নেই। তোমাদের সকলের চেয়ে আমি জন্মভূমি স্বাধীনতার জন্তে বেশী করেছি। আমি ফরাসীর বন্ধ