পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(t ૦૨ প্রবাসী—মাঘ, లిరిగి [ ৩eশ ভাগ, ২য় খণ্ড বাড়ীট। বড়ই নিস্তব্ধ বোধ হইল। নিরঞ্জন তখনও ফেরেন নাই। অজয় আজকাল বেশ রাত করিয়াই ফিরিত। কলেজের পর বাড়ী না আসিয়া সে এক মেসে গিয়া উঠিত, সহপাঠীদের সঙ্গে পড়াশুনা করিবার জন্য । রাত্রে খাইবার সময় হইবার আগে, তাহাকে বড়-একটা দেখা যাইত না। ইন্দু আর মায়া সম্ভবতঃ উপরের ঘরেই আছে। প্রভাস নিজের ঘরে ঢুকিয়া বাতি নিবাইয়া দিয়া শুইয়া পড়িল । নিরঞ্জনের গাড়ীর শব্দ শুইয়া শুইয়াই শুনিল । চাকর খানিক পরে তাহাকে ডাকিতে আসিল, খাইবার জন্য। হোটেলে অনেক খাইয়া আসিয়াছে, ক্ষুধা নাই, বলিয়া প্রভাস তাহাকে বিদায় করিয়া দিল । ইহার পর রাত্রে আর কেহ তাহার বিশ্রামভঙ্গ করিল না । সকালে চায়ের টেবিলে নিরঞ্জন জিজ্ঞাসা করিলেন, “রাত্রে খেলে না যে ? : শরীর ভাল ছিল ত ?” প্রভাস বলিল, “শরীর ভালই ছিল, অনেকগুলো খেয়ে এসেছিলাম ব'লে রাত্রে আর খেলাম না । শেষে জাহাজে চড়ে অস্থখ-বিস্কখ করলে মুস্কিল।” নিরঞ্জন জিজ্ঞাসা করিলেন, “বার্থ পেয়েছ ?” প্রভাস বলিল, “পেয়েছি, না পেলেও দুঃখ ছিল না, ভেক টিকিট ত পড়েই রয়েছে।” আর বিশেষ কিছু কথা হইল না । ইন্দু চা না খাইলেও, রোজ চায়ের টেবিলে আসিয়া বসিত। সে শুধু জিজ্ঞাসা করিল, “কালকেই যাচ্ছ না কি, প্রভাস ।" ইন্দুর উপর প্রভাসের মনে মনে অনেকখানি রাগ জমা হইয়া ছিল, সে সংক্ষেপে বলিল, “হ্য।” ' সমস্ত দিন করিবার কিছুই খুজিয়া পাইল না । তাহার জিনিষপত্র অতি সামান্ত, আধ ঘণ্টার মধ্যেই গোছান হইয়া গেল। বই মাসিকপত্র প্রভৃতি নাড়িয়াচাড়িয়া যখন তাহার বিরক্তি ধরিয়া গেল, তখন সে লেকের ধারে একবার ঘুরিয়া আসিবে স্থির করিল। জায়গাটা সুন্দর এবং নির্জন, বেড়াইয়া অনেকখানি wांद्रtभ *jNGप्रों ६ोंध्र । 参 ঘড়ির দিকে চাহিয়া দেখিল বেল প্রায় সাড়ে তিনট। ছোকরাৰে ডাকিয়া বলিল, “দ্যা, আমি বেড়াতে যাচ্ছি, চা খাব না। আমার জন্যে কেউ যেন বসে না থাকে ৷” ছোকৃরা মাথা নাড়িয়া চলিয়া গেল। প্রভাস একট। ছড়ি হাতে করিয়া বাহির হইয়া গেল । প্রথমে খুব দ্রুত গতিতে ইটিতে আরম্ভ করিয়াছিল, কিন্তু ক্রমেই তাহার গতি মন্থর হইয়া আসিতে লাগিল। বিদায়ের মুখে কত অসম্ভব চিন্তাই যে তাহাকে পাইয়। বসিতে লাগিল, তাহার ঠিক ঠিকানা নাই। মায়। যদি আর পূৰ্ব্বস্তুতি কোনো দিনই ফিরিয়া না পায়, তাহা হইলে কি হয় ? তাহার বুদ্ধিবৃত্তি কিছু নষ্ট হয় নাই, ইন্দ্রিয়গুলিও বিকল হয় নাই, চেষ্টা করিলে তাহাকে আবার সব শেখান যায়। আর কিছু না শিখিলেই বা কি ? সাধারণ হিন্দু গৃহস্থ-ঘরে যতখানি শিক্ষাদীক্ষা হয়, তাহ মায়ার আছে। স্মৃতি ফিরিয়া না পাইলে, মায়। কখনই দেবকুমারকে বিবাহ করিবে না, কারণ সে কায়স্থ এবং বিলাত-ফেরং । তখন কি মায়ার পিতা তাহাকে চিরকুমারী করিয়। রাখিবেন ? প্রভাস যদি এ অবস্থায় মায়ার পাণিপ্রার্থী হয়, তাহার প্রার্থনা কি পূর্ণ হুইবে না । তাহার সহিত বিবাহ হইলে মায়া কি সুখী হইবে না ? সাবিত্রী যদি অকালে পরলোকগমন না করিতেন এবং প্রভাসের পিতা মাতা যদি রাজী হইতেন, তখন কি প্রভাসেরই সঙ্গে মায়ার বিবাহ হইয়া যাইত না ? সেটাকে মায়ার পক্ষে অমঙ্গল মনে করিবার কারণ কি আছে ? যে-ধারায় তাহার জীবন প্রবাহিত হইবার সম্পূর্ণ সম্ভাবনা ছিল, নিতান্ত দৈবগতিকে যেখান হইতে সে বিচ্যুত হইয়াছিল, সেই স্থানেই আবার যদি ফিরিয়া আসে, মদ কি ? কয়েকটা বৎসরের স্মৃতি না-হয় নাই রহিল ? পাশ্চাত্য শিক্ষা খানিকট মন হইতে মুছিয়া গেলই বা দেবকুমারের ভালবাসা না-হয় তাহার জীবন হইতে লুপ্তই হইল ? সেটা কি এতবড় ক্ষতি ? প্রডাস কি দেবকুমারের সমান অস্ততঃ মায়াকে ভালবাসিতে পারিখে না ? প্রভাস, ভাবিতে ভাৰিতে কোথায় যে চলিতেছিল, তাহারও ধেন ঠিক ছিল না। বাহ অন্যায়, ধাহা স্বার্থপ্রণোদিত, তাহাই যে স্বাভাবিৰ, স্নেহ-প্রণোদিত,