পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতে চলচ্চিত্র শ্ৰীনলিনী রায় চলচ্চিত্র শিল্প-হিসাবে জগতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে খুব বেশী দিনের কথা নয়। আমেরিকার দেখাদেখি রুশিয়া, জাৰ্ম্মানী, ইংলণ্ড প্রভৃতি দেশেও এটা শিল্পহিসাবে জেকে বসেছে। জীবনযাত্রায় এর প্রয়োজন থাকায় এবং এই ব্যবসায়ে শতকরা সাত শত টাকারও উপর লাভের অংশ বিতরিত হওয়ায় দুনিয়ার অন্যান্য জাতগুলাও এটাকে সবদিক থেকে সুন্দর ক'রে গড়ে তুলবার জন্যে প্রাণপণ চেষ্টা করছে, শিল্পজগতে তাদের এই নৃতন আবিষ্কারের ঢেউ এদেশেও এসে পৌছেচে । কলকাতা, রেজুন, বোম্বে, মাদ্রাজ প্রভৃতি বড় বড় শহরে অনেক কোম্পানীর প্রতিষ্ঠা হয়েছে। তারা চলছেও মন্দ নয়। অপরাপর দেশের কথা বাদ দিয়ে ভারতে এর ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে আলোচনা করলে এই মনে হয় যে, অন্যান্য দেশের চাইতেও কম সময়ের মধ্যে চলচ্চিত্র এদেশে তার পাকা আসন গাড় বে। সিনেমা ফিল্ম তৈরি করার পক্ষে এদেশের আবহাওয়া সব দেশের চাইতে বেশী উপযোগী। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য অন্তান্ত দেশে এটা তৈরি করার জন্যে কৃত্রিম শীত ও তাপের প্রয়োজন হয় ; কিন্তু প্রকৃতির কৃপার প্রাচুর্য্যে এদেশে আর ওসব হাঙ্গাম পোহাতে হয় না। একই ঋতুতে শীত আর তাপের তীব্রতা শুধু এদেশেই দেখতে পাওয়া যায় । পৃথিবীর প্রথম যুগের সভ্য মানুষের জন্মভূমি এদেশে। তাদেরই শিল্পনৈপুণ্যের নিদর্শনস্বরূপ নানা জাতি ও ধর্শ্বের স্থাপত্যকীর্তি, সুন্দর সুন্দর প্রাসাদ, ॐवन, थान्नैौन छूर्श *ब्रिथ, गनिद्र भनखिम ধ্বংসস্তুপ, ইত্যাদিতে স্বন্দরী পৃথিবী তার প্রিয়তম কন্য, নিঝর ধ্ৰু নদনদী পরিপূর্ণ গিরি সাগর আবেষ্টত, এই ভারতভূমিকে সাজিয়েছেন। আর স্বাক্টর প্রথম যুগ থেকে কুরু করে বর্তমান শতাব্দী পর্য্যন্ত বিভিন্ন স্তরের, বিভিন্ন প্রকৃতির এবং বিভিন্নরূপ গঠন বর্ণ ও আকৃতির মাম্য শুধু ভারতেই দেখা যায়। সিনেমার পক্ষে বিশেষ প্রয়োজনীয়, এদেশের প্রাকৃতিক এ-সব স্থবিধাগুলি অন্য দেশে নেই, তাই অপরাপর দেশের মত ভারতে সিনেমা ফিল্ম তৈরি করা তত ব্যয়সাপেক্ষ নয়। শ্রমের দাম খুব কম ব'লে এদেশে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের জন্যেও টাকা বেশী খরচ করতে হয় না । যে-কাজের জন্যে এদেশের অভিনেতাঅভিনেত্রীরা মাত্র কয়েক টাকা পেয়ে থাকেন, ইউরোপ বা আমেরিকার শিল্পীরা, সেই কাজে ইংলণ্ডের প্রধান মন্ত্রীর বেতনের চাইতেও অনেক গুণ বেশী দাবি করেন। এই গেল উৎপাদনের ব্যয়স্বল্পতার কথা । লোক-সংখ্যার তুলনায়ও এদেশে প্রদর্শনী-ঘর খুব কম। আমেরিকার ১২ কোট লোকের জন্তে ২৩,৫০০, অষ্ট্রেলিয়ার ৬০ লক্ষের জন্যে ১,২১৬, ব্রিটনে ৪৭,১৪৬,৫০৬ লোকের জন্যে ৩,৭০০, জাৰ্ম্মানীর ৬২,৫৯২,০০০ লোকের জন্তে ২,২০০ এবং জাপানে ৮,৩৪৫,৪০০ লোকের জন্যে ১,৪৫০টি সিনেমা-গৃহ আছে, আর আমাদের দেশের ৩২ কোট লোকের জন্তে আছে—চার শ। এতদিন এদেশে বায়োস্কোপ দেখার আগ্রহ কম ছিল ব’লে এত অল্প সংখ্যক সিনেমা-গৃহ দিয়েই কোনো রকমে চলে যেত, এখন কিন্তু তা আর হচ্ছে না। চাহিদা বেড়েই চলেছে, জোগানও দিতে হচ্ছে খুব, অথচ ভাল দেশী ফিলমের অভাব রয়ে গেছে প্রচুর । বিদেশীর চাইতে দেশী ফিল্মের চাহিদা বেশী। তার কারণ প্রত্যেকেই তার পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের কাছাকাছি কাহিনী দেখতে শুনতে পছন্দ করে, সহজ মাতৃভাষায় লিখিত অংশ লেখা হয় বলেও দেশী ফিল্ম অধিক জনপ্রিয়।