পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(t&b. শক্তির পূজারী-{ বনমালা গলে বংশীবাদন ত্রিভঙ্গঠাম মদনমোহন যে-রকম মোহনই হোক না কেন, ভীষণ মূৰ্ত্তি মুণ্ডমালিনী স্বঙ্কনীরঞ্জিত কালীই আমার উপাস্ত । ) শক্তির জন্য সুন্দরকে ত্যাগ করতে মামুষের মনে কিছুমাত্র দ্বিধা নেই। যদিও এ-কথা নিশ্চিত যে, এমন কোনো একট। স্থান আছেই, যেখানে শক্তি ও সুন্দর সহজ সম্বন্ধে মিলিত হয়েছেই। সে যা হোক, মাহুষ শক্তির পূজারীই হোক বা সুন্দরের পূজারীই হোকৃ–এবং মানুষের পক্ষে এ দুয়ের পূজাই সত্য—এ-পূজার পুরোহিত মানুষের পেশীসমূহ নয়, এ হচ্ছে তার মস্তিষ্ক—এর বোধন তার দেহে নয়,তার মনে—এর প্রাণপ্রতিষ্ঠা তার কৰ্ম্মের সামর্থ্যে ময়, তার চিস্তার প্রাচুর্য্যে । কেন-না, চিস্তাই কৰ্ম্মের জন্মদান করে। এই কারণেই জোয়ান কাবুলিওয়ালার চাইতে রোগ পি-সি রায়ের মূল্য বেশী । আজ ভীমসেন যদি কেবল এক গদা হস্তে এসে গড়ের মাঠে দাড়িয়ে এই ব’লে আস্ফালন করে— এই গদাঘাতে ভাঙি ইংরেজের উরু কড়ি নিব স্বরাজ-শাবকে— তবে আমাদের মন-নদীতে যে-রসের জোয়ার আসবে সেটা হচ্ছে নিছক কৌতুক-রস। দেহের পেশীর শক্তিই বদি মামুষের শেষ আশ্রয় হ’ত, তবে পিরামিডও তৈরি হ’ত না, তাজমহলও গড়ে উঠত না । অবশ্ব গণতান্ত্রিক বলতে পারে যে, পিরামিড বা তাজমহল তৈরি ব। নাই-ই হ’ল, তাতে কি আসে যায়। তবে তার উত্তরে বলি যে, দেহের পেশীর শক্তিই যদি মামুষের শেষ আশ্রয় হত তবে প্রলেটারিয়েটেরও অভু্যখান হ’তে পারত না । পেশীর শক্তি জড় শক্তি, বন্দুক বেয়নেটের শক্তি চিন্তার শক্তির পিছনে পিছনে চলে ব’লেই ‘হোয়াইট আৰ্ম্মি 'রেড আৰ্ম্মি হয়ে ওঠে। প্রলেটারিয়েটর যে উঠেছে সেটা প্রলেটারিয়েটদের শক্তিতে নয়—উচ্চতর বর্ণের চিস্ত-বিপ্লবে । আসলে মৌর্য্যবংশ ষে শূদ্ৰবংশ সেটাও একটা কথার কথা—একটা বাহিরের ব্যাপার। যে মুহূর্তে চন্দ্রগুপ্ত সম্রাট হন, সেই মুহূৰ্ত্ত থেকে সে ক্ষত্রিয়। রামজে ম্যাক প্রবাসী—মাঘ, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড ডোনাল্ড আর লর্ড সলসবেরি বা লর্ড বিকম্সফিল্ড-এর মধ্যে বিশেষ কিছু পার্থক্য নেই। শূন্দ্রের অভু্যখান যদি প্রকৃতই হয়, তবে সে নিশ্চয়ই শুদ্ৰ-শক্তি বা শূদ্র-প্রকৃতির বলে নয়। কেন-না, শূদ্র মানেই হচ্ছে পরবশ। শূত্র যে মুহূৰ্ত্ত থেকে আত্মবশ হতে চায়, সেই মুহূৰ্ত্ত থেকে আর সে শূদ্র নয়। শূদ্র যদি প্রকৃতই সমাজ পরিচালনা করতে চায় তবে তাকে সে সামর্থ্য অর্জন করতে হবে । আর সে সামর্থ্য অর্জন করতে হ’লে তাঁকে ব্রাহ্মণত্ব ক্ষত্ৰিয়ত্ব বৈশ্বত্ব বর্জন করলে কিছুতেই চলবে না । তাকে বর্জন করতে হবে শুদ্রত্বকে । কেন-না, সমাজ-সম্বন্ধে কতকগুলি মূলতত্ত্ব আছে যা দেশভেদে বা যুগভেদেও অপরিবর্তনীয় । কি সে তত্ত্ব তা বলছি। যে-কোন দেশে, যে-কোন যুগে, যে-কোন অবস্থাতেই হোক না কেন, সমাজের আমরা দেখতে পাই দুইটি অপরিবর্তনীয় ও অবতকরণীয় ব্যাপার । এই দুইটি আত্মরক্ষণ ও আত্মপোষণ । অর্থাৎ যে কোন সমাজের প্রয়োজন আছে ক্ষত্রিয়ের ও বৈশ্বের । তারপর ক্রমে ক্রমে দেখা গেল যে,সমাজের এই আত্মরক্ষা ও আত্মপোষণ কিছুতেই সুচারুরূপে ও এফেক্‌টিভলি’ হ’তে পারে না— যদি-না নানা বিষয়ের জ্ঞান আহরণ করা যায়। এইখানেই আবির্ভাব হল ব্রাহ্মণের। প্রস্তর কেটে যে ধারাল অস্ত্রে পরিণত করা যায় এই আইডিয়া যার মাথায় এল সে ব্রাহ্মণ—অন্নং বহু কুৰ্ব্বতি এ-ও ব্রাহ্মণের বাণী। প্রলেটারিয়েটরাও সমাজের ভার নিয়ে জ্ঞান বীৰ্য্য ও অন্নকে এড়িয়ে চলত পারবে না। কেন-ন আমি পূৰ্ব্বেই বলেছি ও তিন বস্তু দেশভেদে কালভেদে অবস্থাভেদেও সমাজের পক্ষে অনিবাৰ্য্যৰূপে প্রয়োজনীয়। সুতরাং প্রলেটারিয়েটদের ও সমাজপতি হয়ে ব্রাহ্মণ ক্ষত্ৰিয় বৈশ্বের স্বষ্টি করতেই হবে । অর্থাৎ শূদ্র যদি সত্যি সত্যিই সমাজপতি হয়ে ওঠে তবে আর সে শূদ্র থাকৃতেই পারবে না। বাধ্য হয়ে তাকে ব্রাহ্মণত্ব ক্ষত্রিয়ত্ব বৈশ্বত্ব অঙ্গীকার করতে হবে । নইলে সে সমাজকে কল্যাণের পথে নিৰ্ব্বিল্পে ও নিরাপদে নিয়ে যেতে পারবে ন-ন পারবে আত্মরক্ষা করতে, না পারবে আত্মপুষ্টি করতে। Down with the tyrants to row Down with intellect