পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাত-ভিখারী শ্রীরমেশচন্দ্র দাস, এম্-এ 3. রাত-ভিথারীর কান্না ওঠে গলির মাঝে ওই, বিজনপথে নাই কোনে জন রাত-ভিখারী বই ! আঁধার কুটিল রাস্ত হ’তে কান্না ওঠে করুণ স্রোতে । সেই স্বরেতে মন যে কাদে উদাস হয়ে রই । রাত-ভিখারীর কান্না শুনি গলির মাঝে ওই ! 3. রাত-ভিথার চলছে কেঁদে,—গাইছে কত গান ; কাকর-কুচি পাষাণ-অর্ণাট, কঁদে পথের প্রাণ । চলছে কেঁদে আপন মনে, ব্যথা শোনায় জনে জনে ; ঘরে ঘরে রুদ্ধ দুয়ার,—নেই কিছু আজ দান । পথের উপর যায় যে বহে একলা দুথের বান ! وية দিনের আলোয় খঞ্জ, কালা, কুষ্ঠরুগী আর অলিগলির মোড়ে মোড়ে দেথি হাজার বার ; ওদের করুণ কান্নাকাটি শুনি, তবু কান ন পাতি । মৰ্ম্ম বুঝি রাত-ভিথারীর গভীর বেদনার । চোথের কোণে উপছে ওঠে অশ্র-পারাবার ! 8 ওদের কি গে৷ নেই বেরুতে দিন-দুপুরের মাঝ ? দিন দুনিয়ায় এ যে রে ভাই স্বষ্টিছাড়া কাজ ! কঁদিতে ওদের এমনি কৃ’রে, কে শেখলি ? কি মন্তরে ? আঁধার রাতি ক্ষণে ক্ষণে শ্বসিয়ে ওঠে আজ । কেউ দেখেছে এমন ধারা দিন দুনিয়ার মাঝ ? 6. রাত্রি যখন নিদ্রামগন, রুদ্ধ সকল ঘর, রাত-ভিখারী বাহির হ’ল তথন পথের পর । দিনের হাটের এত শেষে বাহির হ’ল কি উদ্দেশে ? কান্না শুনে ভিক্ষ দিতে ভোলে যে অন্তর ! আঁধার পথের পথিক যে জন কোনখানে তার ভর ? స్క్రీ দিনৃ-ভিখারী দিনের আলোয় ভিক্ষ হাকে হায়, রাত-ভিখারী কান্না শোনায় বিজন বেদনায় ! কণ্ঠ কাদে ভিক্ষাছলে, ভাসায় সবায় চোখের জলে ; আদিম যুগের মনের কথা পথে পথেই গায়। হারিয়ে-যাওয়ার বেদন-বাণী ওই যে শোনা যায় !

  • হারিয়ে-যাওয়ার নীরব বাণী শুনে ষে চমকাই ! দেী-তলার এই ঘরে শুয়ে উদাস হয়ে যাই ।

ধরণী কার প্রতীক্ষাতে ঠায় দাড়িয়ে নিঝুম রাতে, হাত বাড়িয়ে নেবে তুলে-প্রহর গণি তাই । আপন ব’লে জাকৃড়ে ধরি—নাই কিছু আজ নাই! tzবেদন বুকের গুমোট ভাষায় ওই ডাকে ফের শোন ; কান্ন৷ অত শোনায় কারে ? পথ আজি নির্জন । আমার ঘরের জান্‌লা তলায় কান্না ওঠে,—মন যে গলায় ; ব্যথার চেয়ে ভয় যে কেমন ভরিয়ে তোলে মন । শূন্য পথের একূল পথিক ঐ কাদে ফের শোন। సి ভাব ছি শুয়ে,–এই সড়কে চলি ত দিনরাত, কতই চেনা—শতেক কাজে কতই যাতায়াত ! তবু ভাবি আজকে রাতে রাত ভিখারীর কান্ন সাথে পথের ওপর কি ভয়ানক মরণ ছায়াপাত । দু’ পাশের দুই বাড়ীর মাঝে শ্মশান অকস্মাৎ ! a গৃহবাসীর গোপন স্বথে সাধল কে রে বাদ । মুথর বধুর মুথ থেমে যায়—মরণ অবসাদ ! কাহার করুণ আৰ্ত্তনাদে ঘরের পাষাণ দেওয়াল কাদে ? জমাট বাধন পাথর নড়ে —একি আৰ্ত্তনাদ ! ভাঙল আজি মুথর বধূর রাত্রি জাগার সাধ! ۵ را পূর্ণিমারাত, একাদশী –আজকে তিথি কোন ? এই তিথিতেই বাহির হবে, এ যে ভীষণ পণ । ভাবি,—যেন, ওর ওই স্বরে চলে গেছি অনেক দূরে, অনেক দেথা পথের শেষে কোন সে অদর্শন ? সকল গানের শেবের কলি—বুকভাঙা বেদন ! ఫి রাত-ভিখারীর রাত কঁাপানো ঐ যে করুণ ভাষ,— অনস্কেরি গোপন দুথের বেদন-পরকাশ ! জাগিয়ে তোলে এই পৃথিবীর চির-যুগের কাল্লা গভীর । জাগিয়ে তোলে ব্যথিত, বুকের মৌন ইতিহাস, রাত-ভিখারীর রাত কঁাপানো ঐ যে করুণ ভাষ ।