পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

❖ዓ• একত্বের অভাব এবং বৈসাদৃশ্বের প্রাচুর্য্য সম্বন্ধে বিদেশী লোকদের ভ্রান্ত ধারণা জন্মিয়াছে। ইংরেজরা এই ধারণার সুযোগে নিজেদের উদ্দেশু সিদ্ধ করিয়া থাকে। ইহা সত্য কথা । কিন্তু তাহা সত্ত্বেও সেন্সসের সুব্যবহার আমরা অনেক করিতে পারি, এবং বিদেশীদের ভ্রান্ত ধারণ দূর করিবার চেষ্টা আমরা করিতে পারি ও করিয়াছি। স্বরাজ্য স্থাপিত হইলেও সেন্সসের আবশ্বক হইবে । এই সকল কারণে আমরা সেন্সস হইতে দেওয়ায় আপত্তি করি না । কিন্তু ইহার মধ্যে যাহা অনিষ্টকর, তাহার সংশোধন করা নিশ্চয়ই উচিত। প্রধানতঃ পঞ্চাবে এই চেষ্ট হইতেছে, ষে, হিন্দুদিগকে যেন নিজেদের জাত লেখাইতে বাধা করা না হয়। “আমি হিন্দু" ইহা লেখানই যথেষ্ট ; কোন জাতের হিন্দু তাহা বলিতে কেন মানুষকে বাধ্য করা হইবে ? মানুষকে জা’ত লিখাইতে বাধা করিবার মধ্যে যে অন্যায় ও অপমান আছে, তাহার দু-একটা দৃষ্টান্ত দিতেছি। বঙ্গে যেমন জাতিবিশেষের লোকেরা হয়ত মদ বিক্ৰী করিত এখন করে না, তেমনি পঞ্জাবের আহলুওয়ালিয়া এবং পশ্চিমের জায়সবাল ও কালোয়াররা হয়ত আগে সবাই মদ বিক্ৰী করিত, এখন অনেকেই করে না। এখন এই সমস্ত লোককে পূৰ্ব্বপুরুষদের পেশা লিখাইতে বাধ্য করা লাঞ্ছনা বিবেচিত হইবে । বোম্বাই অঞ্চলের এবং উত্তর-ভারতের পাৰ্ব্বত্য কোন কোন শ্রেণীর লোকদের নারীদের বেশ্যাবৃত্তি জা’ত ব্যবসা ছিল । এখন কিন্তু অনেকে তাহা করে না । সুতরাং জা’ত ব্যবসা লিথাইতে সকলকে বাধ্য করা অন্যায়। জা’ত মানা মুসলমানদের ধৰ্ম্মবিরুদ্ধ, অথচ সেন্সসে তাহাদিগকে নানা জা’তে বিভক্ত করা হয়। ইহাও অন্যায়। অনেক মুসলমান ইহার প্রতিবাদ করিতেছেন । সেন্সসে বাধা দিলে একটা কুফল এই হইবে, যে, যাহারা বাধা দিবেন, তাহারা প্রায় সবাই হিন্দু; সুতরাং হিন্দুদের সংথ্যা কম করিয়া লেখা হইয়া যাইবে । তাহাতে তাহাদের রাষ্ট্রীয় অধিকার ও দাবি থৰ্ব্ব করিবার সুযোগ দেওয়া হইবে, অথচ লোকসংখ্যা গণনার চেষ্টা সম্পূর্ণ ব্যর্থ প্রবাসী—মাঘ, ১৩৩৭ [ ৩eশ ভাগ, ২য় খণ্ড কেহ করিতে পারিবেন না । ১৯২১-এর সেন্সসের সময়ও লোকসংখ্যা গণনায় শ্রেণীর রাজনৈতিকর বাধা দিয়াছিলেন, ১৯১১ সালের সেন্সসে বঙ্গে হিন্দুদের সংখ্যা ছিল ২,০৯,৪৫,০৭৯ এবং ১৯২১ সালের সেন্সসে তাহা কমিয়া হয় ২,০৮,০৯,১৪৮ ৷ লোকসংখ্যা গণনায় বাধা দেওয়া এই হ্রাসের একটা আংশিক কারণ নহে, ইহা কেহ জোর করিয়া বলিতে পারেন কি ? আমরা এইরূপ গুজব শুনিয়াছি, কোথাও কোথাও সম্প্রদায়-বিশেষের লোকদিগকে নিজেদের পরিবারের লোকসংখ্য বেশী করিয়া লিখাইতে প্ররোচিত করা হইতেছে । এক সিপাহীদিগকে ভোটের অধিকার দিবার প্রস্তাব “গোলটেবিল” বৈঠক সম্পর্কে উহার এক কমিটি, ব্যবস্থাপক সভার প্রতিনিধি নিৰ্ব্বাচনের অধিকার কিরূপ যোগ্যতা অনুসারে কাহাদিগকে দেওয়া যাইতে পারে, বিবেচনা করিতেছেন। সেই উপলক্ষ্যে পঞ্জাবের স্যার মোহম্মদ শফী বলিয়াছেন,সৈন্যদলের সিপাহীদিগকে ভোট দিবার অধিকার দেওয়া উচিত । সৈনিকদের আলাদা করিয়া ভোট দিবার অধিকার কোন দেশে আছে কি না, আমরা অবগত নহি । ভারতবর্ষে তাহ থাকিবার কোন কারণ দেখিতেছি না। স্যার মেহম্মদ শফীর এরূপ প্রস্তাব করিবার কারণ সুস্পষ্ট । ভারতীয় সেনাদলে পঞ্জাবী মুসলমানদের সংখ্যা খুব বেশী। সেই জন্য তিনি এই উপায়ে নিজ ধৰ্ম্ম-সম্প্রদায়ের ভোটদাতার সংখ্যা বাড়াইয়া লইতে চান । ভারতবর্ষে ইংরেজ রাজত্ব কোন কোন প্রদেশে স্থাপিত হইবার পর-বিশেষতঃ সিপাহী-বিদ্রোহের পর—ইংরেজদের অধীন সেনাদলে ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশ, ধৰ্ম্মসম্প্রদায় ৪ জাতি হইতে কিরূপ অনুপাতে সিপাহী সংগৃহীত হইবে, তাহা বরাবর এক ছিল না । অমুপাত ভিন্ন ভিন্ন সময়ে পরিবৰ্ত্তিত হইয়াছে । আগে ষে যে প্রদেশ, ধৰ্ম্মসম্প্রদায় ও জাতি হইতে যত সিপাহী লওয়া হইত, এখন তাহ লওয়া হয় না ; অনুপাতের