পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] পুরাণে কাল や>> কিন্তু এই যে নৈমিবারণ্যে দীর্ঘকাল-সাধা সত্র ও অবসরকালে পুরাণ-শ্রবণ, একথা মৎস্য পুরাণেও লিখিত আছে । এই পুরাণে ( “বঙ্গবাসী"র সংস্করণ, ৫০ অঃ, ১৮১ পৃঃ) প্রায় বায়ুপুরাণের ভাষায় লিখিত আছে, “অবিসোমকৃষ্ণের রাজ্য-শাসনকালে আপনার [ ঋষির } দৃদবতীর তীরে দীর্ঘসত্ৰ করিতেছেন " এই পুরাণের এক স্থানে আছে, রাজা শতানীককে শৌনক যযাতি-চরিত শোনাইয়াছিলেন। যাহার পৌরাণিক “যুগ” কল্পনা করিয়া সব পুরাণ এক কোষ্ঠে ফেলিয়াছেন, তাহার পরীক্ষিতের কালেও পুরাণ-প্রণয়ন শনিলে আরও আশ্চর্য হইবেন। বিষ্ণুপুরাণ ( “বঙ্গবাসী’র সংস্করণ, ৪২০ অঃ, ২৮৭ পৃ: ) পরীক্ষিত পর্যন্ত আসিয়া লিখিতেছেন, “যোইয়ং সাম্প্রতমেতদ ভূমণ্ডলমখণ্ডিতায়তিধর্মেন পালয়তীতি”— ধিনি সম্প্রতি এই ভূমণ্ডল অখণ্ডিত ধমানুসারে পালন করিতেছেন । বায়ু ও মৎস্য পুরাণ অধিসীমকৃষ্ণের পর ভবিষ্যকালের, বিষ্ণুপুরাণ পরীক্ষিতের পর ভবিষ্যকালের রাজ বর্ণন কয়িয়াছেন । লিখিতেছেন,যোহয়ং সাম্প্রতমবনীপতি:—“এখন যিনি রাজা তাহার চারি পুত্র হইবে। জেষ্ঠপুত্র জনমেজয়, তস্য পুত্র শতানীক, তস্য পুত্র অশ্বমেধদত্ত, তস্য পুত্র অধিসীমকৃষ্ণ” ইত্যাদি । অতএব দেখা যাইতেছে,পরীক্ষিতের কালে, বিষ্ণুপুরাণ ও ভাগবত, জনমেজয়কালে ভারত-ইতিহাস, শতানীককালে পুরাণের কিয়দংশ, এবং অধিসোমকৃষ্ণকালে বায়ু ও তদনন্তর মৎস্য পুরাণের আদি কথিত হইয়াছিল । পুরাণ-বক্তার পরিচয় লওয়া যাউক । বিষ্ণুপুরাণ লিথিয়াছেন, ৩৪,৬) বেদব্যাস বেদ বিভাগ করিতে পিয়া পৈল, বৈশম্পায়ন, জৈমিনি ও স্বমস্ত, এই চারি t ‘বেদ পারগ'কে "শ্রাবক’ করেন । অনস্তর তিনি ভজাতীয় লোমহর্ষণকে ইতিহাস ও পুরাণ পাঠের শিষ্য করেন। স্থতজাতি সঙ্করবর্ণ, বেদে অধিকারী ছিল না। ) সকল শিষ্য হইতে বহু শিষ্য হইয়াছিলেন। লামহর্ষণের ছয় শিষ্য হইয়াছিলেন। তন্মধ্যে তিন শিষ্য মিহর্ষণ হইতে প্রাপ্ত সংহিতা অবলম্বনে এক একখানি রাণ-সংহিত রচনা করিয়াছিলেন। অতএব একখানি হইতে পুরাণ-সংহিতা চারিখানি হইল। বিষ্ণু পুরাণ বগিতেছেন (৩৬ ), সেই চারি সংহিতার সার সংগ্ৰহ করিয়া বিষ্ণুপুরাণ । বেদব্যাস ভারত-সংহিতা ও পুরাণ-সংহিতা করিয়াছিলেন। তাছার গ্রথিত সংহিতা এখন পাইবার উপায়ু নাই। কিন্তু মূল সংহিতাকার এক হওয়াতে মহাভারতে ও পুরাণের বাক্যে অবশ্য মিল ছিল, এবং মূল সংহিতার পরিবৰ্দ্ধিত সংস্করণেও অবশ্য মিল থাকিবে। বায়ু, মৎস্য, বিষ্ণু, তিন পুরাণেই কতকগুলি বিবয় সাধারণ ; যেমন ব্রহ্মার স্বষ্টি, ঋবিবংশ, রাজবংশ, ভূগোলবৰ্ণন, জ্যেতিশ্চক্রবর্ণন, মন্বন্তর-বর্ণন, ইত্যাদি । দেখিতেছি, তিন পুরাণেই পরস্পর ঐক্য আছে । না থাকিলে তিনেরই এক মূল অনুমান করিতে পার। যাইত না। অর্থাৎ ঐ ঐ বিষয় অন্তত: বেদব্যাসের কাল হইতে চলিয়া আসিতেছে । সহজেই প্রশ্ন উঠে, বেদব্যাস তাহঁার পুরাণ-সংহিতার উপকরণ কোথায় পাইলেন । পুরাণ-কথা অল্প নয়, অল্পকালের নয়। ইহার উত্তর পুরাণেই আছে। ব্যাস একজন ছিলেন না। ব্যাস নাম, উপাধি। কালে কালে যুগে যুগে ব্যাস জন্মিাছিলেন, বেদসংহিতা ও পুরাণ-সংহিতা করিয়াছিলেন । শেষ-বণস, কৃষ্ণ-দ্বৈপায়ন । ইহঁার পর ব্যাস আর আবিভূতি হন নাই । অন্ততঃ কেহ ব্যাস উপাধি গ্রহণ করিতে পারেন নাই। অতএব দ্বৈপায়ূন ব্যাস পূর্বের সংহিতা, মুখেই হউক আর লেখাতেই হউক, পাইয়াছিলেন। বিষ্ণুপুরাণেও দেখিতেছি, ইহার বক্ত পরাশর, দ্বৈপায়নের পিতা ; শ্রোতা পরাশর-শিষ্য মৈত্ৰেয় । কিন্তু এখানে একট। তর্ক উঠতেছে । পরীক্ষিতের কালে দ্বৈপায়নের পুত্র থাকিবার কথা, দ্বৈপায়ন থাকিলেও থাকিতে পারেন, কিস্ত তাহার পিতা তখনও জীবিত ছিলেন কি ? ভাগবত পুরাণের প্রথম শ্রোত পরীক্ষিত, বক্ত দ্বৈপায়ন-পুত্র শকদেব । ইহাই ত ঠিক। শ কদেবেয় সময়ে লোমহর্ষণ ছিলেন ; কিন্তু তিনি পরীক্ষিতের প্র-প্রপৌত্রের কালে, অধিলীমকৃষ্ণের কালে, থাকিতে