পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] বেশী মণিপুরী জাতির মধ্যে হিন্দুধৰ্ম্ম প্রচার করিয়াছিলেন। মণিপুরীগণ শিক্ষায়, আচার-ব্যবহারে আজ এদিকের সমুদয় পাৰ্ব্বতা জাতি অপেক্ষ বিশেষ উন্নত। কয়েক শত বৎসর পূৰ্ব্বে যাহা হই.ত পারিয়াছিল, আজ কি তাহা ইষ্টতে পারে না ? অখ্ৰীষ্টান কুকিদের নিজকে হুদু করিলেও সমগ্র কুকি জাতি নিজকে হিন্দু বলে না । হিন্দু-সভ্যতা সামান্য ভাবেও কুকিদের মধ্যে যদি ন; গিয়া থাকে তবে হিন্দুদের এই সব ধৰ্ম্মানুষ্ঠান কুকির কোথায় পাইল ? আমার মনে হয়, কুকিদের যখন হিন্দুসভ্যতা প্রবেশ লাভ করে তখন হিন্দু ও নিজকে হিন্দু বগিতেন না । তারপর কোনে কারণ হয়ত হিন্দু সমাজের সঙ্গে কুকিদের যোগ ছিন্ন হই; গিয়াছিল । আমাদের প্রত্যেক মস্ত্রের আগে বৈদিক প্রণব মধ্যে কেহ কেহ আজকাল মনে মধ্যে সাছে । গত প্রবন্ধের শিবের মন্থে পাঠকগণ বৈদিক মঞ্জের এটুক ছায়া অতু ভব করিতে পরিবেন । সত্যই হিন্দুধৰ্ম্ম কুকিদের মধ্যে প্রচার করা উচিত । কিন্তু কি ভাবে করা যায় ? খ্ৰীষ্টধৰ্ম্ম ব। মুসলমান ধৰ্ম্মের মত কেনে বিশেষ জীবন বা বিশেষ মতবাদের উপর হিন্দুধৰ্ম্ম স্থাপিত নয়। হিন্দুধৰ্ম্ম বলিতে অনেক জিনিষই বুঝায় । তাহার উপর হিন্দুধৰ্ম্মের মতবাদ ও আচারআচরণ অধিকারী বিশেষে ভিন্ন ভিন্ন । যদি সকলের জন্ত এক জাম, এক জুতা, এক টুপীর ব্যবস্থা হিন্দুধৰ্ম্মে থাকিত, তবে এত চিত্তার কারণ ছিল না বটে। খ্ৰীষ্টানদের অধিকাংশই বাল্যকাল হইতে খ্ৰীষ্টানী আবহাওয়ায় গঠিত, খ্ৰীষ্টানী আচার-ব্যবহারে অভ্যস্ত, বিদেশী আদবকায়দায় শিক্ষিত। হিন্দুদের ধৰ্ম্মামৃষ্ঠান, উংসর, আনন্দ, এদের চোথে পৌত্তলিকতা, অসভ্যতা, পাপ । জন্ম হইতে বিকৃত ব্যাখ্যা শুনিয়া শুনিয়া এই সকলের প্রতি ইহাদের অতি কুৎসিত ধারণ । হিন্দুধর্মের প্রতি অখ্ৰীষ্টান কুকিদের ধারণাও খুব স্বাস্থ্যকর নহে । হিন্দুধর্মের অর্থ-বাঙ্গালীর ধৰ্ম্ম। বাঙ্গালীদের নিকট আমরা সৰ্ব্বদাই ঘৃণা ও অবজ্ঞা লাভ করিয়াছি। পাঞ্ছাড়ে গেলে যে বাবুরা আমাদের ঘরে অকাতরে অল্প গ্রহণ কুকি সস্কার সমস্যা やか●● করেন, শহরে গেলে তাহারাই আমাদিগকে একটু স্থান দেন না বা চিনতেই পারেন না । ব্যবসায়ে বাঙালীদের নিকট হইতে আমরা সৰ্ব্বদাই প্রবঞ্চন লাভ কবিয়া’ছ । লেখাপড় জানি না বলিয়া উকিল মোক্তণরবাবুরাও আমাদের নিধট হইতে যথেচ্ছা আদায় করিতে ছাড়েন না । আপিসের বাঙালী পিয়ন পেয়াদ আমাদের ঘরে গিয়াও যদি যথেচ্ছ অত্যাচার করে তবে ধৰ্ম্মাবতার দেশের হাকিমবাবুরা বুঝতে বা বিশ্বাসই করিতে পারেন না । দেশী হাকিমরা স্থবিচার কি অবিচার করেন, এসম্বন্ধে আমি কিছুষ্ট বলিব না, তবে ইহাদের প্রতি কুকিদের ধারণ ভাল নয় । কুকিরা মনে করে দেশ হাকিম অপেক্ষা সাদা হাকিম, ডেপুটী কমিশনার বা জংলী সাহেব কুকিদের প্রতি ঢের বেশী স্থবিচার করেন । বাঙালীর প্রতি কুকিদের এই ধারণা কতক আপন} আপনি হইয়াছে—বffক অন্যদের চেষ্টাকৃত বলিয়াই আজকাল খ্ৰীষ্ট’ন হওয়াতে আমর} প্রায়ু সৰ্ব্ব এই সদয় ব্যবহার পাইতেছি এবং শিক্ষিত বাঙ্গালী ভদ্রলোকের অখ্ৰীষ্টান কুকিকেও আজকাল বেশ আদর যত্ন ও সাহায্য করিতেছেন । অশিক্ষিত লোকদের একবার যে ধারণ বদ্ধমূল হইয়া যায়, তাহ সহজে যায় না । ছভাগ্যের বিষয় বাঙালীদের সম্বন্ধে ফুকিদের এই ধারণ যাইতেও একটু সময় লাগিবে । তাহ। অনেকে মনে করেন । পক্ষাস্তরে মিশনারীদের নিকট আমর। কি পাইয়াছি ? মিশনারীর আমাদের গ্রামে যাইতেছেন, আমাদের আপদ বিপদে, রোগে সাহায্য করিতে ছেন । আমাদের কোন সুবিধা করিবার জন্য দরকার হইলে বড় সাহেবের সঙ্গে দেথা করিতেছেন । আমাদের ভাষা শিথিয়া আমাদিগকে লেখাপড় শিক্ষা দিতেছেন । আমাদিগকে ভালবাসেন । সভ্য হওয়া ( বিলাসিত। } শিক্ষা দিতেছেন। সৰ্ব্বোপরি মিশনারীরা কত ৰডু লোক হইয়াও আমাদের সঙ্গে মিশেন। (বড় লোকের প্রমাণ, কত বড় বাংলোতে দাসদাসী-পরিবৃত ইষ্টম। ৰাস করেন । মিশনরীদের প্রতি কুস্কিদের অধিকাংশের এই ধারণা। ’ বাস্তবিকই মিশনারীদের মধ্যবসায়, ধৈৰ্য্য, ভিত্তিক্ষী