পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

J(te বাবার তিতিক্ষয় চাটুধ্যে মহাশয় আরও মুগ্ধ হইয়। গেলেন। বিগ্রহের সম্মুখে আসিয়া গললগ্ন-নামাবলী হইয়া বার-বার বলিতে লাগিলেন, “ম রাধারাণী, কাঙালের উপর এতদিন বাদ কি দয়া হল মা ?” ు পালঙ্কে শয়ান অবস্থায় বাবা হকুমানদাস মালা জপ করিতেছিলেন । গরিশ চাটুয্যে তাহার পায়ের কাছে বসিয়া দুই-তিনবার কাশিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “বাবা কি জ্যোতিষ জানত। হায় ?” বাবা উত্তরে একটু মৃদু হাসিলেন । হাসি দেখিয়া চাটুধ্যে মহাশয় বুঝিলেন যে জ্যোতিষ-বিদ্যাটা বাবার কাছে একটা সামান্ত ব্যাপার । অত্যস্ত কাতরকণ্ঠে পুনরায় গিরিশ চাটুধ্যে বলিলেন, “বাবা, আমার अञाष्ट्रेभ-” বাবা উঠিয়া বসিয়া কহিলেন, “সব কুছ হায়, লেকিন—” গিরিশ চাটুধ্যে সভয়ে কহিলেন, "লেকিন কি বাবা ?” বাবা গিরিশ চাটুয্যের পিঠ চাপড়াইয়া কহিলেন, “করম চাহি বাচ্চা, করম চাহি ।” ইহার পর বাবা হকুমানদাস গিরিশ চাটুয্যের জীবনের ঘটনাবলী স্বচ্ছন্দে বলিয়া যাইতে লাগিলেন। বলিতে বাবার বিশেষ বেগ পাইতে হইল না, কারণ, তাহার বন্ধু মদন ময়রা রামনগরেরই অধিবাসী এবং দীঘদিন এই দেবালয়ের ভৃত্য ছিল । গিরিশ চাটুষ্যে সম্বন্ধে সকল তথ্য বাবা তাহার নিকট হইতেই সংগ্ৰহ করিয়া আনিয়াছিলেন । নিজের জীবনের কাহিনী শুনিতে শুনিতে সন্ত্রমে ও বিস্ময়ে গিরিশ চাটুয্যের চক্ষু বিস্ফারিত হইয়া উঠিতেছিল । বাবা যখন শেবে চাটুযে মহাশয়ের আকাঙ্ক্ষিত নারীর নাম পৰ্য্যস্ত বলিয়া ফেলিলেন, তখন আর তিনি ধৈর্য্য রাখিতে পারিলেন না, বাবার দুই পা জড়াইয়া ধরিয়া কহিয়৷ উঠিলেন, “তুমি সবই জান বাবা। এতদিনের সেবায় আমার ফুল ফলেছে। রাধারাণীজী কৃপা করেছেন। প্রবাসী—ফাঙ্কন, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড মায়ের দয়ায় তোমায় পেয়েছি। এ চরণ আর ছাড়ব না !” বাবা “হোগা” । “কব হোগ বাবা ? তুমি তো মনের কথা জান বাবা । তার জন্যে আমি জলমে ঝাপ, সাপের গৰ্ত্তমে হাত—” বাবা বাধা দিয়া কহিলেন, “সবুর বাচ্চ ! সবুর ' বড়ি মেহন । যাগ জপ ঔর বৃন্দাবন কুণ্ডলী-” বলিয়া বাঞ্ছাপূরণের জন্য আবশ্বক ক্রিয়াদির একটা প্রকাণ্ড ফিরিস্তি দিয়া গেলেন । চাটুয্যে মহাশয় আগামীকল্যের যাগযজ্ঞাদির সরঞ্জাম যোগাড় করিতে চলিলেন । এক তেজঃপুঞ্জ কলেবর বাকৃসিদ্ধ মহাপুরুষ আসিয়াছেন শুনিয়া মাধি সন্ধ্যাকালে বাবাকে দেখিতে আসিল । ডাকিলেও মাধি আসে না অথচ আজ ন} ডাকিতেই আসিয়াছে দেখিয়া চাটুয্যে মহাশয় মনে মনে হাসিলেন—বাবার কুপ হইয়াছে । তাহার পর একটু রসিকতা করিবার উপক্রম করিতেই মাধি ঠোঁটের উপর আঙ ল রাখিয়া তাহাকে কথা বলিতে নিষেধ করিয়া বাবার ঘরের মধ্যে গিয়া দাড়াইল । বাবা ধ্যানস্তিমিতনেত্রের পাতা একটু তুলিয়া অপাঙ্গে আগস্তুককে দেখিয়া লইলেন, আগন্তুক কে তাহাও চেহারা দেখিয়া ধরিয়া ফেলিলেন এবং বুঝিলেন যে, গিরিশ চাটুয্যের মোহ হওয়া নিতান্ত অসঙ্গত হয় নাই । মাধি তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে বাবাকে দেখিতেছিল । ধান ভাঙলে বাবা জিজ্ঞাসা করিলেন, “কেয়া মাংতা ?” মাধি একটু মুচকি হাসিয়া বা-হাতের তালু বাবার সম্মুখে প্রসারিত করিয়া কহিল “অদেষ্ট--” বাবা হাসিয়া কহিলেন, “হোগা। সোনাদান। হীরH জহরৎ ললাটমে তুমহারা—” সোনাদান হীর-জহরতের কথা শুনিয়া মাধির মুখ প্রফুল্ল হইয়া উঠিল। বাবা তাহ দেখিলেন। তখন বাবু বাংলা ও হিন্দী মিশাইয়া মাধিকে ভরসা দিলেন যে, এখান হকুমানদাস নির্মীলিতনেত্ৰে কহিলেন,