পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] মেয়ের মান ꬃዓ 9 তাহাকে বেশী করিয়া পাইয়া বসে। নিজে কি কি বোকামি করিয়াছে, তাহা গণনা করিতে করিতে অনঙ্গের প্রায় চোখের জল আসিয়া পড়িল । নিজেকে অনেক করিয়া বুঝাইতে চেষ্টা করিল যে একটা রূপহীন মেয়ে তাহাকে কি ভাবিল, তাহাতে কি-ই বা আসিয়া যায় ? কিন্তু বুদ্ধিতে যাহা বুঝিল, হৃদয়কে তাহা বুঝাইতে পারিল না । সেই কালো মেয়েটির চোথে কি করিয়া উচ্চাসন পাইতে পারে, তাহার নানা-প্রকার উপায় চিন্তা করিতে করিতেই রাত কাটিয়া গেল । পরদিন হইতে অনঙ্গ অনন্তকৰ্ম্ম হইয়া মৈত্রেয়ীর সঙ্গে পরিচয়টা জমাইয়া তুলিবার চেষ্টায় লাগিয়া গেল । যতক্ষণ ঘরে থাকিত, কি ভাবে কি কথা বলিবে, কেবল তাহার রিহাসর্ণল দিত। এত ভাল করিয়া দিত, যে, সত্যই ভূলচুক আর তাহার বেশী হইত না। কথায় কথায় মৈত্রেয়ী একদিন বলিল, “আমাদের দেশে ত পালামেণ্ট নেই, নইলে আপনার বেশ ভাল কেরাঁয়ার হত।” আনন্দের আতিশয্যে অনঙ্গ সেদিন যেন জগৎকে সোনার রঙে রঞ্জিত দেখিল । মৈত্রেয়ীর প্রতি সে নিজের অজ্ঞাতসারেই অল্পে অল্পে আকৃষ্ট হইয়া পড়িতেছিল। কিন্তু নিজের জন্য তাহার কোন ভয় ছিল না । সে জানিত ইহা নিতাস্তই ছুটির দিনের খেলা, ছুটি ফুরাইবামাত্র সে নিজের পথে যাইবে, মৈত্রেীও তাহাই করিবে। আর কোনোদিন দেখা সাক্ষাৎ না-ও হইতে পারে। তাহাতে কি সে খুব একটা বেদন বোধ করিবে ? তাহা ত মনে হয় না। এ বেশ একটা নূতন অভিজ্ঞতা লাভ করা গেল, বন্ধুদের ভিতর তাহার মান ইহাতে আরও অনেকখানি বাড়িবে। কিন্তু মৈত্রেয়ীর জীবনে এই দিনগুলির স্মৃতি কি দুঃখবেদন যে বহন করিয়া আসিবে, তাছা ভাবিবার সে কোনো প্রয়োজন বোধ করিত না । তাহারা ত যাচিয়া আলাপ করিয়াছে স্বতরাং কোনে কিছুর জন্য অনঙ্গকে দায়ী করিতে গেলে চলিবে কেন ? সকালে বিকালে বেড়াইবার সময়, অনঙ্গ প্রায়ই এখন মৈত্রেীদের দলে জুটিয়া যাইত। অখিলবাবু এবং তাহার ই ইজনেই অম্বৰ মাহব, ধীরে পিছনে পিছনে জালিতেন; সন্তোষ, মৈত্রেয়ী এবং অনঙ্গ হন হন করিয়া আগে চলিত। বেশী উচু কোথাও উঠতে হইলে তাহার নীচেই বসিয়া পড়িতেন, ছেলেমেয়ের উঠিয়া যাইত। মৈত্রেয়ীর হাতে সৰ্ব্বদাই একটা ছড়ি থাকিত, কখনও বা সে নিজে সেইটার সাহায্যে উপরে উঠিত, কখনও মাকে দিত । মৈত্রেয়ীর জীবনে এই দিনগুলি একটা অভূতপূৰ্ব্ব আনন্দ ও অনুভূতি বহন করিয়া আনিল । সে যেন স্বপ্নের ভিতর দিয়া দিনগুলি কাটাইতেছিল । বাস্তব জগংটা তাহার মনোজগতের কাছে ছায়ার মত বোধ হইত। নিজের মন লইয়া নাড়াচাড়া করিয়াই সময় চলিয়া যাইত । দিনে দিনে বেশী করিয়া সে এই প্রিয়দর্শন যুবকের প্রতি আকৃষ্ট হইয়া পড়িতেছে, তাহা ভাল করিয়াই বুঝিত, কিন্তু নিজেকে দমন করিতে পারিত না । ইহার পরিণাম যে কি হইবে, তাহ ভাবিয়া পাইত না । অনঙ্গও ত তাহার প্রতি আকৃষ্ট হইতেছে বলিয়া মনে হয়, কিন্তু স্থির করিয়া বলা যুায় না । তাহা ছাড়া সে ভিন্ন সমাজের মাতুয, শুধু তার পছন্দ অপছন্দে হয়ত কিছুই আসিয়া যাইবে না। তাহার নিজের পিতা মাতাও মত করিবেন কি-না সন্দেহ, তবে করিতেও পারেন। অনঙ্গকে এখন ধোগ্য পাত্র বলা যায় না বটে, কিন্তু কোনোদিনই কি সে যোগ্য হইবে না ? মৈত্রেয়ী অপেক্ষা করিয়া থাকিতে পারে। এইরকম কত শত চিস্তা যে নিরস্তর তাহার মনকে ভারাক্রান্ত করিয়া রাখিত, তাহা সে ভিন্ন কেহই জানিত না । সেদিন সকালবেলা বেড়াইতে বেড়াইতে তাহারা অনেক দূর নামিয়া গিয়াছিল। অখিলবাবু এবং মৈত্রেয়ীর মা ভরসা করিয়া বেশী দূর নামেন নাই। সন্তোষ আগে আগে ফার্ণ ছিড়িতে ছিড়িতে অগ্রসর হইয়া চলিয়াছে । অনঙ্গ হঠাৎ বলিল, “ছুটিটা ত শেব হয়ে এল।” মৈত্রেয়ী বিষম্নভাবে বলিল, “হ্যা, আমরা ত পরের अशुद्विश्झे शंद ” . অনঙ্গ বলিবার আর কিছুই যেন খুজিয়া পাইতেছিল না। খানিক পরে বলিল, “দুজনেই জামরা কলিকাভায় থাকি, অথচ আলাপ হল বিদেশে এসে। কলিকাতাট।