পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] বিদ্যাসাগর এই নুতন ব্যবস্থা সম্বন্ধে বিশেষ আশা পোষণ করিতেন ন। সত্য, কিন্তু চাহিবামাত্র কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করিতে ক্রটি করিতেন লী । শেষে কিন্তু বিদ্যাসাগরের কথাই ফলিল। তিন বৎসর ধরিয়া পৰীক্ষা করিবার পরও বীটন-বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট নর্শাল স্কুলটি সফলতা লাভ করিল না। পরবর্তী ছোটলাট স্তর জর্জ কাম্পবেল উহ। তুলিয়। দিবার আদেশ দিলেন । ১৮৭২, ৩১এ জানুয়ারির পর হইতে ফিমেল নর্থাল স্কুলটি বন্ধ হইয়া গেল। স্ত্রীশিক্ষা সম্বন্ধে বিদ্যাসাগরের কার্য্যাবলীর এই সংক্ষিপ্ত বিবরণ হইতেই বুঝা যাইবে, বাংলা দেশে স্ত্রীশিক্ষার বিস্তারে তাহার কি উৎসাহ ও আগ্রহই না ছিল। বঙ্গলক্ষ্মী—মাঘ, ১৩৩৭ শ্ৰব্রজেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায় বাংলায় হিন্দু রাজত্বের শেষ যুগ ...তবকাৎ-ই-নাসিরীর বিবরণ হইতেই আমরা বেশ বুঝিতে পারি যে, মহম্মদ খিল্‌ঞ্জি লক্ষ্মণাবতীর চারিদিকের খানিকট জায়গার বেশি অধিকার করিতে সমর্থ হন নাই ; গঙ্গাতীর হইতে উত্তর দিকে দেবকোট পয্যও তার দখলে আসিয়াছিল, কিন্তু গঙ্গার দক্ষিণে রাঢ়ের অন্তর্গত লখনোর জায়গাটিও তিনি দখল করিতে পারেন নাই ; সুতরাং মহম্মদ খিলজির সময়ে সমস্ত বাঙলার দেশের অতি সামান্ত অংশ মাত্র মুসলমানের হস্তগত হইয়াছিল ; বাকি সমস্ত অংশই হিন্দুদের হাতেই ছিল- কিন্তু কোন বংশের কোন রাজার হাতে ছিল তা আমরা নিঃসন্দেহে গুণনি না ; সম্ভবতঃ সেন রাজাদের হাতেই ঢ়িল । মিনহাজ বলেন, লক্ষ্মণসেন নবদ্বীপ ছাড়িয়া সাকনাৎ ও বঙ্গদেশে চলিয়া গেলেন । হঃ, বলিতে পুৰ্ব্ববঙ্গ বুঝি ; কিন্তু সাকনাৎ বলিতে কোন জায়গা বোঝায় জানি ন+—নবদ্বীপের নিকটবৰ্ত্তীর্ণ কোনো জায়গা হইতে “|'ु । লপুনেীতীর চতুর্থ মালিক গিয়া -উদ্দীন ইবজই (১২১০-১২২৬ খৃঃ)সর্ব প্রথম গঙ্গার দক্ষিণতীরে উত্তর রাঢ়ে লেন রাজাদের রাজ্যে হস্তক্ষেপ করিয়া মুসলমানের অধিকার বিস্তার করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন বলিয়া মনে হয়। তিনি উত্তর রাঢ়ের অন্তর্গত লখনোর নগর হইতে গঙ্গাতীরবত্তীর্ণ লখ নেতাঁর ও বরেন্দ্রভূমির অন্তর্গত দেবকোট পর্যন্ত একটি রাজপথ নিৰ্ম্মাণ করাইয়াছিলেন । সুতরাং দেবকোট হইতে লথ নোর পর্যন্ত সমস্ত জায়গা এবং তার পাশ্ববৰ্ত্তীর্ণ জায়গা মাত্রই সে-সময়ে মুসলমানের অধীন ছিল এমন মনে করা যায়। দক্ষিণ রাঢ় ও বাঙলার বাকী সশস্ত অংশই হিন্দু রাজার অধীন ছিল বলিয়া অনুমান করা ছাড়া উপায় নাই । - উত্তর রাঢ়েরও সমস্ত অংশ সে-সময় পৰ্য্যন্ত বিজেতার করতলগত হয় নাই ; কারণ মুগীসূ-উদ্দীন যুজবকু-এর (১২৪৬-১২৫৭ খৃঃ) আমলেই নবদ্বীপ সৰ্ব্বপ্রথম স্থায়ীভাবে বিজিত হইয়াছিল।...আর দিল্লীর স্বলতান গিয়াস-উদ্দীন বলুবনের পৌত্র রুকুনু-উদ্দীন কৈকাউস্-এর (১২৯১১৩৭২ খৃ: ) আমলেই সৰ্ব্বপ্রথম দক্ষিণ বঙ্গের প্রধান নগর সপ্তগ্রাম পল্পইস্তগত হয় । কাজেই দেখিতেছি, মহম্মদ খিলজির বাঙলায় পদাপণের পর আরও প্রায় একশো বছর সপ্তগ্রাম মুসলমানের অধীন হয় নাই। কিন্তু এই এক শো বছর সপ্তগ্রাম কোন হিন্দু রাজভুক্ত ছিল, কোন হিন্দু রাজার দুর্বল হাত হইতে কৈকাউস সপ্তগ্রাম কড়িয়া টাইলেন তা আমরা জানি না।--নবীপ ও সপ্তগ্রাম উভয়ই উত্তর কষ্টিপাথর—বাংলায় হিন্দু রাজত্বের শেষ যুগ SSAS A SAS SSAS SSASAMAMAAA AAAASAAAAS SASAAAAASAAAA SA ৭৭৯ রাঢ়ের অন্তর্গত এবং মুসলমান-বিজেতার প্রথম আবির্ভাবের পর নবদ্বীপ অধিকৃত হইতে লাগিয়াছিল প্রায় পঞ্চাশ বছর, এবং সপ্তগ্রাম অধিকৃত হইতে প্রায় একশো বছর লাগিয়াছিল। কিন্তু দক্ষিণ রাঢ় তবে হিলুর হস্তচু্যত হইল তা ঠিক করিয়া বলা যায় না। সম্ভবতঃ দ্বিতীয় ইলিয়াসূ-শাহী বংশের রকৃন-উদ্দীন বার্বক শাহের (১৪৫৯৭৪ খৃঃ) আমলেই সমস্ত দক্ষিণ বঙ্গে তুর্কীর আধিপত্য বিস্তৃত হয়। সমগ্র রাঢ় ও দক্ষিণ বঙ্গ যেমন একদিনে তুর্কর পদানত হয় নাই ; শতাধিক বৎসরব্যাপী সংগ্রামের ফলে বাঙলার ঐ অংশ বিজেতার হস্তগত হয়, তেমনি সমস্ত উত্তর বঙ্গ বা বরেন্দ্র প্রদেশও তুক বিজেতার। একদিনেই দখল করিতে পারে নাই। মহম্মদ খিল্‌জি দেবকোট অধিকার করিয়াছিলেন ; কিন্তু বরেনোর প্রধান নগর বর্দ্ধনকোট বিজিত হইতে আরও প্রায় পঞ্চাশ বৎসর লাগিয়াছিল—কারণ নবদ্বীপ-বিজেতা মুগাসূ-উদ্দীন (১২৪৬-৫৭ খৃঃ) প্রথম বৰ্দ্ধনকোট জয় করিয়াছিলেন, মুদ্রার সাক্ষ্যে ঐতিহাসিকেরা এই অনুমান করেন।...মহম্মদ খিল্‌জির আগমনের পর হইতে মুসলমান বিজয় পৰ্য্যন্ত পূর্ববঙ্গের ইতিহাস একেবারেই তান্ধকারময় নয় । মিনহাজ বলেন যে, লক্ষ্মণসেন মহম্মদ খিলজির নবদ্বীপ আক্রমণের পর পূর্ববঙ্গে চলিয়া যান এবং সেখানে গিয়া অনতিকাল পরেই তার মৃত্যু হয়। আমরা শ্ৰীধর দাসের সদুক্তি-কর্ণামৃত গ্রন্থ হইতেই জানিতে পারি যে, উক্ত গ্রন্থ লক্ষ্মণসেনের রাজত্বের সপ্তবিংশতিতম সংবৎসরে ও ১১২৭ শকাব্দে ( ১২১৫ খৃঃ ) সমাপ্ত হইয়াছিল । সুতরাং আমরা ধরিয়া লইতে পারি যে, অন্ততঃ ১২০৬ খৃঃ অন্ধে লক্ষ্মণসেনের মৃত্যু হয়। লক্ষণসেনের পর তৎপুত্র বিশ্বরূপসেন অন্ততঃ চোঁদ বছর রাজত্ব করিয়াছিলেন । বিশ্বরূপসেনের পর তার ভাই কেশৰসেনও অন্ততঃ তিন বছর পূর্ববঙ্গে রাজত্ব করেন । বিশ্বরূপসেনের পূৰ্ব্বে লক্ষণসেনের আর-এক পুত্র মাধবসেন রাজত্ব করিয়াছিলেন বলিয়া কেহ কেহ বলেন ; কিন্তু তার সম্বন্ধে আমরা নিশ্চিতরূপে কিছুই বলিতে পারি না। যাহা হোক, কেশবসেন যে অন্ততঃ ১২২৩ খৃষ্টান্ধ পৰ্য্যম্ভ রাজত্ব করিয়াছিলেন সে-বিষয়ে সন্দেহ নাই । তাম্রশাসনের প্রমাণ হইতে জানিতে পারি যে, বিশ্বক্লপসেন ও কেশবসেনের রাজধানী ছিল পুৰ্ব্ববঙ্গে বিক্রমপুরে ; কিন্তু উভয়ই “গৰ্গযবনাম্বয়-প্রলয়-কালরা" এবং "গৌড়েশ্বর" বলিয়া অভিহিত হইয়াছেন। তাতেই মনে হয় যে, লখনৌবতীর চতুষ্পাশ্বস্থিত ভূভাগ ছাড়া গৌড়ের অর্থাৎ পশ্চিম বঙ্গের অস্তান্ত অংশে বিশ্বরূপ ও কেশবসেনের আধিপত্য অব্যাহতই ছিল এবং এই উপলক্ষে লক্ষ্মণাবতীর যবন অর্থাৎ তুক মালিকদের সঙ্গে তাদের প্রায়ই সংঘর্ষ উপস্থিত হইত। বঙ, বা বঙ্গদেশের সেন রাজ্যের সঙ্গে যে লখনেীতীর তুক মালিকদের সর্বদাই লড়াই হইত, তার প্রমাণ আমরা মিন্‌হাজের তবক্ষাৎ হইতেই জানিতে পারি। খৃঃ ১২১১ হইতে ১২২৬ অন্ধ পৰ্য্যন্ত গিয়াস-উদ্দীন ইবজ লক্ষ্মণাবতীর মালিক ছিলেন। তিনি দিল্লীর অধীনতা অস্বীকার করিয়া লক্ষ্মণাবতীতে স্বাধীনতা অবলম্বন করিয়াছিলেন বলিয়া তাকে অনেক সময় লক্ষ্মণাবতীর সুলতানও বলা হয় । তিনি খখার্থই একজন প্রতাপশালী রাজা ছিলেন এবং মিনহাজ বলেন যে, তিনি লক্ষ্মণাবতীর পার্শ্ববৰ্ত্তী রাজ্যগুলি হইতে কর আদায় করিতেও সমর্থ হইয়াছিলেন । এই সমস্ত কর-দীত। রাজ্যগুলির মধ্যে তবকৎ-ইনাসিরীতে বঙ্গ বা বঙ্গরাজ্যের উল্লেখও আছে। এই সময় বঙ-রাজ্যে কে রাজত্ব করিতেছিলেন জানিবার জস্ত ঐতিহাসিকের মনে স্বতঃই উৎসুক্য হয় । আমরা পূর্বেই দেখিয়াছি যে, লক্ষ্মণসেনের পুত্র বিখরপসেন অন্ততঃ চৌদ্দ বছর, অামুমানিক ১২৭৬-১২২ খৃঃ । এবং