পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

- প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩৭ সত্ব রজ তম কথাকয়টি সাধারণের মধ্যে এতই প্রচলিত যে অনেক সময়ে তাহীদের অর্থসঙ্গতির দিকে লক্ষ্য ন। রাখিয় আমরা সেগুলির প্রয়োগ করি । প্রকৃতির গুণের এই তিন বিভাগ কি উদ্দেশ্বে করা হইয়াছে তাহা বিচাৰ্য্য । এই বিভাগ দুষ্ট কিনা তাহাও আলোচ্য । প্রকৃতির সমঃ গুণই কি এই তিন বিভাগে পড়ে, এবং সত্ত্ব রজ ও তমের ব্যাপ্তি কি পরস্পর হইতে বিভিন্ন ? প্রথমেই প্রশ্ন উঠে, যে উদ্দেশ্য লইয়া প্রকৃতির গুণরাজির এই লি সর্গের বিভাগ কল্পিত হইয়াছিল তাহ। কি আমরা জানি ? সত্ত্ব রজ ও তমের যে ব্যাখ্যাগুলি সাধারণতঃ প্রচলিত দেখা যায়, তাহদের লক্ষণ বিচার করিলে মনে সন্দেহ হয় যে, শাস্ত্রকারগণের উদ্দেশ্য আমরা তুলিয়া গিয়াছি । গুণ, রজ ক্রিয়া-গুণ এবং তম জড়তা মোহ বা অজ্ঞান | সত্ত্বের দ্বার। জ্ঞান উদ্ভাসিত হয় ; ইহ! নিৰ্ম্মল লঘু ও অনাময় । রজ আমাদিগকে লোভ ও তৃষ্ণার বশীভূত করে এবং তম গুরু গুণবিশিষ্ট্র ও অত্যাধিক নিদ্র বা আলস্যের কারণ। এখানে লঘু ও গুরু শব্দের অর্থ কি তাহ ঠিক বোঝা যায় না। পদার্থবিৎ ( physicist ), কিমিতিবিং ( chemist \, xotifs (psychologist ) প্রকৃতির বিভিন্ন প্রকারের গুণের বিচার করেন । এই সমস্ত গুণই কি সত্ত্ব রজ ও তমের অন্তর্গত ? প্রকৃতির কোন গুণে জল বরফে পরিণত হয় ? কুইনিন-এর গুণ সত্ব, রজ না তম ? সত্ত্ব যদি জ্ঞানের প্রকাশক হয় ও তম মদি জ্ঞানের আবরক হয়, তবে গুণের জাতি বিভাগে রজের স্থান কোথা ? কারণ প্রকাশ ত্ব ও অপ্রকাশ -এই দুই বিভাগের মধ্যেই অধিকাংশ ব্যাখ্যার মতে সত্ত্ব প্রকৃতির প্রকাশ তাসংখ্য প্রকৃতির যাবতীয় গুণকে ফেল ধাইতে পারে । রজকে কৰ্ম্মশীলতা ও তমকে জড়ত বলিলে শ্রেণী-বিভাগে সত্ত্বের স্থান থাকে না । ত্যাবার সত্ত্ব s রঞ্জ, অর্থাৎ জ্ঞান ও ক্রিয়াকে একই বর্গে ফেলিবার উদ্বেগু কি ? শ্বন ও মঘবন-এর ন্যায় এই দুই গুণের একত্র সমাবেশ বিসদৃশ মনে হওয়া স্বাভাবিক । সত্ত্ব রজ ও তমের সাধারণ প্রচলিত অর্থ ধরিলে শ্রেণী বিভাগে ব্যাপ্তিদোষ ঘটে । শাস্ত্রকারগণের শ্রেণীবিভাগ যে দুষ্ট তাহা মনে তদ্রুপ, . [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড করিবার পক্ষে যথেষ্ট বাধা আছে । শ্রেণীবিভাগের মূলসূত্র তাহারা ভালরূপই জানিতেন । অতুমান করা যাইতে পারে, তাহীদের উদ্দেশ্ব ঠিক বুঝিতে না পারিয়াই আমরা গোলে পড়িতেছি । এপ্রশ্নের সদুত্তর কোথাও দেখিয়াছি বলিয়া আমাগ মনে হয় না, অনেক অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে প্রশ্ন করিয়াও সন্দেহ নিরাকরণ করিতে পারি নাই । ম্যাক্সমুলার লিখিয়াছেন ঃ—“আমি এই তিন গুণের ব্যাখা দিবার চেষ্টা করিয়াছি কিন্তু আমি স্বীকার করিতে বাধ্য যে, ইহাদের প্রকৃতি আমার নিকট মোটেই সুস্পষ্ট নহে, কিন্তু দুভাগ্যক্রমে ভারতবর্ষীয় দার্শনিকদের কাছে ইহণদের অর্থ স্পষ্ট বলিয়। বোপ হয় যে তাহার কোন ব্যাখ। দেওয়াই আবশ্ব + বিবেচনা করেন না ’x আমার নিজের মনে ;ে ব্যাখ্যা জাগিয়াছে এখানে তাহাই বিবুত করিন । শাস্ব অন স্ত এবং শাস্বজ্ঞানের পরিসরও নিতা স্তু অতএব এতই অfমার অল্প । কিন্তু আমার তাহ জানা নাই । প্রথমেই সত্ত্ব রজ তম—এই শ্রেণী বিভাগের উদেখ বিচার বরিব । প্রকৃতির গুণাবলীর বিশ্লেষণের চেষ্ট্রর শ! সুকারগণ পদার্থবি২ বা হয়ত কোথা ও এই প্রশ্নের সদব্যাখ্যা আ:ে ফলে সত্ত্ব রঞ্জ তমের কল্পনা । কিমিতিবিং হিসাবে প্রকৃতিকে দেখেন নাই । প্রকৃতির লীল। তাহাদের কাছে দার্শনিক সমস্ত । কি করি, প্রকৃতির উদ্ভব হয় ও কি গুণে তাহা পুরুষকে অভিভূত করে তাহাই তাহদের প্রশ্ন । মনে রাখিতে হইবে, সাংখা বেদান্ত প্রভৃতি শাস্ত্রে প্রকৃতির সমস্ত মনোরাজ্যের দিক দিয়াই বিচার করা হইয়াছে । বাহিরের প্রকৃতির অস্তিত্বের জ্ঞান শেষ পর্য্যন্ত আমর নিজেদের অন্তঃকরণের সাহায্যেই বুঝিতে পারি। যাবৎ সঞ্জায়তে কিঞ্চিৎ সত্ত্বং স্থাবরজঙ্গমম্। ক্ষেত্ৰক্ষেত্ৰজ্ঞসংযোগাৎতদবিদ্ধি ভরতধভ ! গীত। ১৩২৬

  • "I have tried to explain the meaning of the three Gunas before, but I am bound to confess that their nature is by no means clear to me, while, infortunately, to Indian Philosophers they seem to be so clear as to require no explanation at all.”

--Collected ... Works of Max Muller-The Six Systems of Indian Philosophy, (1903), p. 357.