পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা । কমিক বেতন বুদ্ধি বা পেন্সন বন্ধ করিবার বা কমাইবার চেষ্ট হইবে না। কিন্তু তাহাদিগকে নূতন কনষ্টিটিউশুনের বখাতার শপথ গ্রহণ করিতে বলা হইতে পারে এবং কেহ স্বরাজের প্রতিকূল আচরণ করিলে তাহাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের স্বযোগ দিয়া দোষ প্রমাণিত হইলে বরখাস্ত করিবার প্রস্তাব উত্থাপিত ও গৃহীত হইতে পারে। নূতন মূল রাষ্ট্রবিধি জারি হইবার সঙ্গে সঙ্গে আর একটি কাঞ্জ অবখ্যকৰ্ত্তব্য । সাধারণত: অসামরিক সব শ্রেণীর চাকরিতেই বিদেশী লোকের নিয়োগ বন্ধ করিতে হইবে । এমন যদি হয়, যে, কোন বিশেষ কাজের জন্য উপযুক্ত শিক্ষাপ্রাপ্ত ভারতীয় আপাততঃ নাই, তাহা হইলে তিন বা পাচ বৎসরের চুক্তিতে যোগ্য কোন কোন বিদেশীকে তাহাতে নিযুক্ত করিয়া ঐরূপ কাজের জন্য ভারতীয় যুবকদিগকে ভারতে বা বিদেশে শিক্ষিত করিবার নিমিত্ত উপযুক্ত ব্যবস্থা করিতে হইবে । তদ্ভিন্ন, এখন দেশী ও বিদেশী চাকর্যেদের বেতন যাহা আছে, তাহ অপরিবর্তিত রাথিয় নূতন র্যাহারা চাকরিতে নিযুক্ত হইবেন তাহাদের বেতনের হার স্বাধীন দেশ সকলের চাকর্যেদের বেতনের তুলনায় নিৰ্দ্ধারণ করিতে হইবে । স্বাধীন দেশ-সকলে মামুষের নিজের ও পরিবারবর্গের সুস্থ শরীরে জ্ঞানোজ্জল মন লইয়া ও নির্দোষ আমোদ সম্ভোগ করিয়া বাচিয়া থাকিবার খরচ কত এবং ভারতবর্ষেই বা ঐরূপ খরচ কত, তাহা বিবেচনা করিয়া সরকারী কৰ্ম্মচারীদের বেতন স্থির করিতে হইবে। স্বাধীন দেশসকলে এইরূপে বাচিয়া থাকিবার খরচের চেয়ে বেতন যে পরিমাণে বেশী আমাদের দেশে জীবনধারণের ব্যয় অপেক্ষা বেতন তার চেয়ে বেশী হওয়া অমুচিত হইবে, কারণ আমরা দরিদ্র জাতি । পণ্ডিত মোতীলাল নেহরু ভারতবর্ষের এই সঙ্কট সময়ে পণ্ডিত মোতীলাল নেহরুর মত একজন বয়োবৃদ্ধ, প্রবীণ, বিচক্ষণ ও সাহসী নেতার তিরোভাব সাতিশয় শোকাবহ ঘটনা। মহাত্মা গান্ধী রহিয়াছেন, অন্যান্য নেতাও আছেন, কিন্তু পণ্ডিত মোতীপালের শূন্ত স্থান পূর্ণ করিতে পারেন, এরূপ কেহ নাই। বিবিধ প্রসঙ্গ-পণ্ডিত মোতীলাল নেহরু bペ)〉 তিনি স্কুল কলেজে লেখাপড়া বেশী কিছু করেন নাই, কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন পরীক্ষাও দেন নাই। অক্ট একটি সরকারী আইন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া ওকালতী আরম্ভ করেন। ক্রমে হাইকোর্টে ওকালতী করিতে করিতে তিনি য়্যাডভোকেট হন । আমি যখন ১৮৯৫ সালে এলাহাবাদের একটি কলেজের প্রিন্সিপ্যাল হইয়া এলাহাবাদ যাই, তখনই পণ্ডিত মোতৗলাল তথাকার হাইকোটের প্রধান তিন চারি জন উকীলদের মধ্যে একজন। নিজের বুদ্ধি ও পরিশ্রমের দ্বারা তিনি আইনব্যবসায়ীদের মধ্যে এই উচ্চ স্থান অধিকার করেন। . তিনি প্রথম প্রথম জীবনের অধিকাংশ সময় অর্থউপার্জনে এবং স্থখভোগেই যাপন করিয়াছিলেন । কিন্তু দশ বৎসর পূৰ্ব্বে যখন র্তাহার জীবনে পরিবর্তন আসিল, তখন তিনি স্বদেশের অধীনতাপাশ ছিন্ন করিবার জন্য কায়মনোবাক্যে লাগিয়া গেলেন । শুধু নিজে লাগিলেন না ; তাহার সহধৰ্ম্মিণী, পুত্র, পুত্রবধূ, কন্যার, এক জামাতা & —সকলেই রাষ্ট্ৰীয় ক্ষেত্রে স্বদেশের সেবায় আত্মোৎসর্গ করিলেন । তিনি সাহসী ও স্বাধীনচিত্ত পুরুষসিংহ ছিলেন। স্বরাজ যে লব্ধ হইবে, সে বিষয়ে তাহার বিন্দুমাত্রও সন্দেহ ছিল না। যদি যুদ্ধের পথেই ভারতবর্ষের স্বাধীনতালাভ শ্ৰেয়: বলিয়া বিবেচিত হইত, তাহা হইলে যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী হইতে র্তাহার বেশী সময় লাগিত না—তিনি আগ্নেয় অস্ত্রের ব্যবহারে সুদক্ষ ছিলেন । কিন্তু অহিংসার পথই শ্রেষ্ঠ ও সমীচীন বিবেচিত হওয়ায় অহিংসংগ্রামেই তিনি আত্মনিয়োগ করিয়াছিলেন। তাহার সম্বন্ধে আমার ধারণ আমি শান্তিনিকেতন হইতে ফ্রী প্রেসকে তাহাদের অনুরোধ অনুসারে প্রেরিত আমার s নিম্নমুদ্রিত শ্রদ্ধানিবেদনে ব্যক্ত করিয়াছি – “Pandit Motilal Nehru has left us the legacy of an unconquered spirit in the hour of India's spiritual triumph.”

  • গ্রী প্রেস ভ্রমক্রমে ইহা জীযুক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “বাণ' বলিয়া ছাপাইয়াছেন। বস্তুতঃ রবীন্দ্রনাথ ফ্রী প্রেসঙ্কে কোন বাণী পাঠান নাই, একটি দৈনিক কাগজে পাঠাইয়াছিলেন ।