পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

?○ লুটিয়া লইতে লাগিল। এদিকে মহম্মদ খণর অবস্থাও সঙ্কটাপন্ন হইয়া উঠিল । আশী বৎসরেও বৃদ্ধ ছত্রসাল যৌবনের রণেন্মাদনায় যুদ্ধ করিতে লাগিলেন ; কিন্তু তাহার হাতী দুইটি তীরবিদ্ধ হওয়ায় অসংঘত হইয়া পলাইয়া গেল। মহম্মদ খণর পরাজয় জয়ে পরিণত হইল । ১৭২৮ খৃষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে জৈতপুর দুর্গ পাঠানের অধিকার করিল। ছত্রসাল সন্ধি প্রার্থন করিয়া মহম্মদ থাকে ৪০ লক্ষ টাকা কর-স্বরূপ দিলেন । উভয় পক্ষে যুদ্ধ স্থগিত রহিল। দিল্লীতে গুজব উঠিল, ছত্রসালের সাহায্যে পাঠানের তৈমুর-বংশকে সিংহাসনচু্যত করিবার আয়োজন করিতেছে। ছত্রসাল দিল্লীর দরবারের মহম্মদ থার শত্রুপক্ষীয় মনোভাব জানিয়া যুদ্ধার্থ উৎসাহিত হইলেন । অযোধ্যার নবাব সাদত দিলেন । ছত্রসাল এ সময়ে পেশবা বাজীর ওসের সাহায্য প্রার্থনা করিয়৷ দূত পঠাইয়াছিলেন ; সন্ধির প্রস্তাব শক্রকে প্রতারিত করিয়া সময়লাভের বাজীর ও এক বৃহং সৈন্যদল লইয়। জৈতপুরের নিকটবৰ্ত্তী পাঠান-শিবির অবরোধ করিলেন । থার পুত্র বান্দ জেল। ইষ্টতে জৈতপুরের ১১ মাইল থাও বুন্দেলাদিগকে অনেক ভরস কৌশলমাত্র। ১৭২৯ খৃষ্টাবে মহম্মদ উত্তর-পূৰ্ব্বে সুপ। পণ্যস্ত অগ্রসর হইয়ছিল । মারাঠা ও বুন্দেল সৈন্থের অধিকাংশই কায়েম থাকে বাধা দিবীর জন্য চলিয়া গেল। এই সুযোগে পাঠামের শিবির হইতে বাহির হইয়। জৈতপুর দুর্গে আশ্রয় লইল । চারি মাস ধরিয়! মহম্মদ গা অসীম বীরত্ব ও ধৈৰ্য্যের সঠিত আত্মরক্ষা করিলেন । মতুষ্য ছাড়া অন্য প্রাণী সমস্ত নিঃশেষে ভক্ষিত হইল ; দুর্গ-রক্ষীরা অন্নাভাবে মরিতে 秀 লাগিল। মহম্মদ গা সাহায্যের জন্য ওমরাহগণ ও বাদশীকে বিশেষ করিয়া অনুরোধ করিলেন । খান-দৌরাণ সমসাম-উদ্দৌলা জৈতপুর যাইবেন বলিয়া মহা আড়ম্বরে দিল্লীর বাহিরে তাবু ফেলিলেন । অথচ গোপনে ছত্রসালকে লিখিলেন-মহম্মদ থার মাথাটি বাদশাঙ্গের কাছে পাঠাইয় দিলে বহু &নাম মিলিলে , শত্রুকে হাতে পাইয়ু ছাড়িলে ভাল প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড হইবে না। তিনি সম্রাট মহম্মদ শাহকেও বুঝাইয়৷ দিলেন, পাঠান সেনাপতি যুদ্ধে জিতিলে ভবিষ্যতে শাহী তখতের উপর নজর ফেলিবে । ছত্রপাল চাল-বাজীতে থান-দৌরাণ প্রমুখ দরবারদিগকে মাৎ করিলেন । তিনি বিবেচনা করিলেন, মহম্মদ খা বাচিয়া থাকিলে খান-দৌরাণের পাল্লা ভারী হইতে পারিবে না , রাজনীতিক ক্ষেত্রে স্থায়ী শক্রতাও নাই, বন্ধু ও নাই । মহম্মদ খাঁ কখনও বুন্দেলখণ্ড আক্রমণ করিবেন না কিংবা, কোন কর দাবী করিবেন না- এই প্রতিশ্রতিমাত্র লইয়া ছত্রপল সসম্মানে তাহাকে জৈতপুর ত্যাগ করিতে দিলেন । কয়েক দিন পরে কায়েম থ নূতন ফৌজ লইয়া যমুনা পার হইলেন ; কিন্তু পাঠান সেনাপতি পুত্রকে যুদ্ধ হইতে নিরস্ত করিয়। স্বদেশে প্রত্যাবৰ্ত্তন করিলেন । মহারাজ ছত্রসাল পেশব। রাজীরা ওকে নিজ রাজধানী পাল্লা নগরে আমম্বিত করিয়া অশেষ সম্মান প্রদর্শন হিন্দু-পদ-পদশাহীর স্বপ্ন সফল অাজীবন যুদ্ধ করিয়া ছত্রসাল সে বুন্দেশখণ্ডে মুসলমান-শাসন ধ্বংস করিয়াছিলেন, বাজীরা ও স{হ:মার্থি ন আসিলে কালে উই। উপনিবেশে পরিণত ইহঁত | ভাবিয়া তিনি বাঙ্গীরাওকে জ্যেষ্ঠপুত্র-রূপে গ্রহণ তাহার নামে লিখিয়। এরূপ ত্যাগ ও দূরদর্শিতার দৃষ্টান্ত ভারতবর্ষের ইতিহাসে বিরল। অনেকে মনে করেন, ইহা “সৰ্ব্বনাশং সমুখপন্নে অৰ্দ্ধং ত{জতি পণ্ডিতঃ” নীতিমাত্র,—স্বেচ্ছায় ন দিলে পেশব! বাজীরাও কাড়িয়া লইবার শক্তি রাপিতেন । পেশব বলপূৰ্ব্বক ছত্রসালের রাজ্যগ্রহণ করিলে উহ। উভয়ের পক্ষে অযশঙ্কর হইত। মহারাষ্ট্রপতি শিবাজী যেমন কৰ্ম্মজীবনে গুরু রামদাসকে পাইয়া ধন্য হইয়াছিলেন, মহারাজ ছত্রসালও তেমনি জীবন-সংগ্রামের সঙ্কটপূর্ণ সময়ে মহাত্মা প্রাণনাথজীকে একাধারে গুরু ও মন্ত্রীরূপে পাইয়াছিলেন । কৃতকার্য্যতার জন্য শিবাজী রামদাস স্বামীর কাছে যে পরিমাণ ঋণী, ছত্রসালও তদ্রুপ প্রাণম:থঞ্জীর কাছে ঋণী । করিলেন । পেশ বfর হইল । রোহিলখণ্ডের স্থায় পাঠান দেশের ৪ পূৰ্ম্মের ভবিষ্ণু ২ করিলেন এবং রাজ্যের এক তৃতীয়াংশ দিলেম ।