পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Գե প্রাণনাথজীর জন্মস্থান কাথিয়াবাড় প্রদেশের জামনগর । র্তাহার পূর্বাশ্রমের নাম মেহরাজ বা মেঘরাজ । তিনি জীবনের অধিকাংশ সময় কাথিয়াবাড় ও সিন্ধুদেশে কাটাইয়াছিলেন বলিয়া মনে হয়। র্তাহার উপদেশগ্রন্থের নাম “কুলজম স্বরূপ।” ‘কুলজম আরবী শব্দ-ইহার অর্থ সমূদ্র । এই গ্রন্থে আরবী ও সিন্ধী শব্দের বাহুল্য দেখা যায়। প্রাণনাথ নানক পন্থী না হইলেও গুরু নানকের মতের সহিত র্তাহার উপদেশ ও ভাবের অনেকট মিল আছে । গুরু নানকের ন্যায় ইনিও আধ্যাত্মিক-রাজ্যে হিন্দু ও মুসলমান ধৰ্ম্মের সামঞ্জস্য, এবং ব্যবহারিক জগতে পরস্পরের মধ্যে সদ্ভাব বৰ্দ্ধনের জন্য চেষ্টা করিয়াছিলেন । প্রাণনাথজী নিজেকে কষ্ণ, মহম্মদ, ও যিশু খৃষ্টের সমন্বয় যুগাবতার বলিয়। মনে করিতেন। তিনি কখন বুন্দেলখণ্ডে আসিয়াছিলেন এবং কোন সময় মহারাজ ছত্রণাল তাহার প্রথম দৰ্শন লাভ করেন তাহা সঠিক বলা যায় না । জনপ্রবাদ, পান্নার ইীরকখনির সন্ধান প্রাণনাথঞ্জাই সৰ্ব্বপ্রথম ছত্রসালকে দিয়াছিলেন । কথিত আছে, পান্নার ধৰ্ম্মসাগর হ্রদের তীরে “মন্দার তুঙ্গ’ নামক পাহাড়ের পদভূমিতে এক শিলাখণ্ডের উপর বসাইয়া প্রাণনাথজী ছত্রসালের কপালে “রাজটক।” পরাইয়া দিয়াছিলেন এবং কোমরে তরবারি বাধিয়া দিয়াছিলেন । মহারাজ ছত্রসালের বংশধর পান্না-নরেশ বিজয় দশমীর দিন এখানে আসিয়া সেই অস্ত্রের পূজা করিয়া থাকেন, সৰ্ব্বপ্রথমে এস্থানে প্রাণনাথজীর নামে পানের বিড় উংসর্গ করা হয়, এবং এইস্থান হইতেই বিজয় দশমীর "সিন্দুর যাত্ৰা” আরম্ভ হয় । মহারাজ ছত্রসাল প্রাণনাথজীর কাছে বক্ষ-জ্ঞান লাভ করিয়াছিলেন । তিনি কবিতার একছয়ে নিজকে “ব্রহ্ম-রস-রত্তা, এক কায়েম ঠিকানে কা,” অর্থাৎ ব্ৰহ্ম-রস-মগ্ন নিত্যপামবাসী বলিয়াছেন । প্রাণনাথজীর শিষ্যেরা নিজদের “ধামী" বলিয়। পরিচয় দেয় । ব্রহ্মবাদী মহাত্ম অনন্ত জ্ব ছত্রসালের জ্ঞান-পরীক্ষার জন্য কতকগুলি প্রশ্ন লিখিতেছেন : تسمي -مي * রসু:ছলেন । প্রশ্নোত্তরে মহারাজ প্রবাসী—কীৰ্ত্তিক, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড হে অনন্ত, নহি অন্য কোউ, অচ্ছর ছত। অনন্ত ইত রস মে বস মানিবা, অীয় কীজিবী ধন্ত । —হে অনন্য ! “অন্ত” (সুফীদের ‘বিগান্ত” ) কেহই নয় ; অক্ষর (ওঁ), ছত্তা ও অনন্ত (অর্থাৎ আমি ও আপনি) এক । এই ( একত্ব-জ্ঞান-জনিত ) রসকেই প্রকৃত রস জ্ঞান করিয়া আমাকে দর্শন দিয়া ধন্য করিবেন। ছত্রসালের এই একেশ্বরবাদ কবীর ও একনাথের একেশ্বরবাদের ন্যায় সাকার উপাসনা ও অবতারবাদ বিরোধী নহে। ইতিহাস ও জাতীয়তার দিক দিয়া বিচার করিলে আমরা বুঝিতে পারি, রামদাস ও প্রাণনাথজীর নিকট ভারতবর্ষ কত বেশী ঋণী । নির্যাতিত হিন্দুধৰ্ম্ম রক্ষণকল্পে মোগল সাম্রাজ্যের কালগ্নি-স্বরূপ যে আসি কোষমুক্ত হইয়াছিল, তাহ তাহারা মন্ত্রবলে সংযত করিয়া মহারাষ্ট্র ও বুন্দেলখণ্ডে কোরণ ও মসজিদ রক্ষা করিয়াছিলেন । র্তাহার শত্রু ভীত পদদলিত ভারতের ধৰ্ম্মোপদেষ্ট ছিলেন না । ইচ্ছা করিলে তাহার স্পেনের খৃষ্টান পাদরীর মত জিহাদের বিষ ঢালিয়া মুসলমানকে সমুলে ধ্বংস কিংবা নিৰ্ব্বাসিত করিবার জন্য হিন্দুজাতিকে উত্তেজিত করিতে পারিতেন । শিবাজী ও ছত্রসাল অবাধে বালক বুদ্ধনিৰ্ব্বিশেষে নিরপরাধ স্বদেশবাসী মুসলমানের রক্তে তাহাদের তরবারি কলঙ্কিত করিয়া সাক্ষাং কন্ধি অবতার হইতে পারিতেন । যেখানে ক্ষত্ৰিশক্তি এরূপ নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শক্তির দ্বার সুসংযত হয় নাই, সেখানে হিন্দুর দানবলীলা প্রকট করিয়াছে। রাজারাম জাট আকবর বাদশাহের কবর খুড়িয়া ফেলিয়াছিল, এবং তাজমহল ধ্বংসের চেষ্টা করিয়াছিল । ভরতপুর-রাজ স্থরজমলের পুত্র জবাহির সিংহ আগ্রার জুম্মা মসজিদে বাজার বসাইয়াছিল। শির্থের সরহিন্দ শহরে কত লে আম করিয়াছিল। শিবাজী ও ছত্রসাল মুসলমান-শাসন উচ্ছেদ করিয়ছিলেন, ইসলাম ধৰ্ম্মের প্রতি অশ্রদ্ধা দেখান নাই বা মুসলমানমাত্রকে সবংশে নিধন করিবার সঙ্কল্প করেন নাই । ১৭৩১ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর ৮৩ বৎসর

ణా" - ?

বয়সে