পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“একটি চুম্বন গড়ি দোহে লব ভাগ করি এ রাজত্বে মরি মরি কত আয়োজন ।” আর পড়া হ’ল না ; তুলসী জোর ক'রে বই বন্ধ করে দিয়ে বললে, “দোহাই বৌদি, আর পড়ি নে ৷” ছুটে চলে গেল রান্নাঘরে—কিন্তু মায়ের কাছে নালিশ করতে পারলে না । হরিহর পাশের ঘরে বসে সবই শুনলে । 徽 螯 崇 徽 সমস্ত দিন পরিশ্রমের পর, রাস্ত বধু যখন স্বামীর পড়বার ঘরে ঢুকলে, তখন তীব্র দৃষ্টিতে হরিহর তার পালে চাইলে ; আনমনা শুমি তা’ লক্ষ্য করলে ন! ; পিল্স্কজে আর একটু তেল ঢালে, শাস্ত্রগ্রন্থগুলি গুছিয়ে রাখলে, স্বামীব পিঠের কাছে একটা তাকিয়া দিলে ; তার পরে বললে, “পয়ে এবার তেল দিয়ে দিই ?” রুক্ষ্মস্বরে হবিহ" বললে, “থাক, থাকৃ—” শ্বাম। ভয়ে ভয়ে বললে, “রাগ করছ কেন ? দেরি হয়ে গেছে আজ, মায়ের কোমরে ব্যথা বেড়েছে, সেক দিয়ে এলুম তাই”— রিহর বললে, "সক দিয়ে এলে, ন! চাদের আলোয় কাব্য করে এলে ? মৃত-সব বাজে চিন্ত দিন-রাত মাথার ভেতর ঘুরচে, হিসেবের গতি য়ি, ধোপার থাতায় এথানে, সেখানে, কবি ত টোক ছিড়ে ফেলে দেব সব—” শুাম। গভীর ব্যথা পেলে, তবু বললে, “যদি বারণ কর আর করব না, কিন্তু আমায় একটা পথ বলে দাও --” হরিহর ওর নমতায় খুশী হ’ল, বললে, “বেশ তোমাকে আমি জ্ঞানের পথ দেখিয়ে দেব ; কি শুনবে বল ? গীতার ভাগ্য ন বেদাস্থের ভাষ্য ?” স্যাম হবিগুরের পায়ের কাছে বসে বলে, “শোনাও যা খুশী”—- গুরুগম্ভীর স্বপ্তে, অসীম শুদ্ধতার সঙ্গে সে তখন স্বর করলে আপন পণ্ডিত প্রচার--সে তো ব্যাখ্যা নয়, সে পছজকে জটিল করে তোলা ; শেষে নিজের অক্ষমতায় সজ্জিত হয়ে বলে,-“যাণ্ড, যাও, আজ শোওগে, কাল শোনাব আর এক অধ্যায়-" b- ෆ প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড মাথা নীচু করে খাম উঠে গেল । 赛 来 譽 অনেক রাতে প্রদীপের অবশিষ্ট তেলটুকু পুড়ে নিবে গেল। তখন হরিহর বই বন্ধ করে উঠলে বিশ্রাম আশায় । শোবার ঘরের দরজার কাছে এসে দেখলে, পরিপূর্ণ শুভ্র চাদের আলে৷ এসে পড়েছে বিছানার উপরে তামা মাথা নীচু করে বসে আছে, সেই আলোর দিকে মুখ ক’রে ; যেন এই চন্দ্রালোকে, এই নিস্তব্ধ নিশীথে, সে একাস্তে আপন পূজাটি নিবেদন করতে চায়। হরিহর খুশী হ’ল, ভাবলে, তার আজকের উপদেশ বৃথা যায়নি, শাস্ত্রব্যাখ্যা খামার মনকে ছুয়েচে । ধীরে ধীরে পা টিপে সে ঘরে ঢুক্লো ; কাছে এসে দেখলে সেই কাব্য গ্রন্থখানি খামার কোলের পরে খোল । তার দুই চোথ বেয়ে জল ঝরছে ; আপনাতে আপনি বিভোর হয়ে সে পড়ছে -“সোনার তরী ।” ఫి পাখী মন্দাকিনা শিখিয়েছিল তার পার্থীকে একটি ম: • বুলি--“বন্ধু ” আর পার্থী আপন হ'তে শিখেছিল, মন্দার হাসির অতুকরণে তরল মধুর স্বরে হেসে উঠতে কারণে অকারণে । সে হাসি যে শোনে সেই চমকে ওঠে । লোকে ধানতে চায় না—সে হাসি পার্থীর । মন্দার স্বাম পড়াল নিখিল রাগ করে বলে—“দূর করে দেব ওটাকে, ৪ কেন তোমার হাসি চুরি করে আমায় কেবলি ঠকায় ?” শীতের দুপুরে ওদের চটে ঢাকা ছাদের ফাক দিয়ে রোদুর বাক হয়ে এসে পড়ে, মন্দ সেইখানে পা মেলে বসে, কঁথি৷ সেলাই করে, কথনে আচার শুকোতে দেয়, —কখনো বা বিদেশে মায়ের কাছে চিঠি লেখে । আলদের গায়ে বোলে পার্থীর খাচা ; পার্থী নিবিষ্টমনে ঘাড় বাকিয়ে মন্দাকে চেয়ে চেয়ে দেখে । তার পর গল। ফুলিয়ে ডাকে “বন্ধু ।” মন্দা সাড়া দেয়-–“কি বন্ধু ?” অম্নি দুজনে এক স্বরে হেসে ওঠে–যেন স্বরে স্বাধ। বীণার তারে তারে ঝঙ্কার পড়ছে ।