পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b"8 দেয়ালের এক পাশে রেখে মাটিতে গড় হয়ে প্রণাম করলে । অনিমেষ ভেবেছিলো ছোট শালী এসে পরিহাস করবে, নানা রকম উৎপাতে ওকে জালাতন করে তুলবে; কিন্তু এ কি রকম এর ভাব ? নিশার নম্র গ্লেণতিটুকু ওকে বিষম আঘাত দিলে । চম্কে উঠে তার মুখের পানে চাইলে । মনে পড়লো ; একবার তাদের বাগানের গাছে একট। বাজ পড়েছিল,—বাইরে থেকে তার বিশেষ ক্ষতি দেখা যায়নি, কিন্তু ভিতরটা ঝলসিয়ে গিয়েছিল-সে গাছে আর পাতা ধরেনি, ফুল ফোটেনি । নিশা ঘর থেকে বেরিয়ে গেল, অনিমেষ একট। কথাও বলতে পারলে না । 豪 来 桦 পরদিন সকালে উষা ছুটে গেল-গৃহকৰ্ম্মে ব্যস্ত মায়ের সাহায্য করতে ; এই স্বযোগে তার এতদিনকার সুখ-দুঃখের কথা বলে নেবে। বাপ গেলেন বাজারে জামায়ের জন্তে মাছ তরকারী কিনৃতে। অনিমেষ তার ঘরে বড় চৌকিটার উপর খররের কাগজ নিয়ে বস্লো ; নিশা এল সেই ঘর ংস্কার করতে । আপন হাতে সে মেজেট ঝাট দিলে, জিনিষপত্র ঝেড়ে ঝুড়ে রাখলে, ছাদের দিকে দরজা খুলে, পূৰ্ব্ব দিনের বাসি ফুল ফেলে দিয়ে, টব থেকে এক গোছা রজনীগন্ধা তুলে রাখলে,-এ গাছ ওর নিজের হাতের পোত । কুঁজোতে জল ভরে আনলে পানের ডিবেতে নতুন-সাজা পাল ভরে দিলে । তার পর ঘর থেকে বেরিয়ে গেল, অনিমেষের দিকে একবার চাইলে মা পর্য্যন্ত । প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ২য় খণ্ড অনিমেষ ওর এই নীরব সেবা বুকের মধ্যে অতুভব করলে, কাগজ আর পড়তে পারলে না । 弹 律 發 বিদায়ের দিন এল । বাইরে সেদিন মেঘ করেছে ; থেকে থেকে বৃ;ি আস্চে ; একটা কনকনে পূবে বাতাস মনের ভেতরট অবধি সিক্ত করে তুলেছে। বিকেল থেকে নিশাকে ডেকে ডেকে কাজে পাওয়া যাচ্ছে না । মা রাগ ক’রে বলছেন, “কোথায় গেল নিশিটা ? এসে মোয় কটা পাকাক না, গাড়ীর সময় হয়ে এল যে ” উত্থা চোখের জল মুছে বলছে,—“থাক্ মা, থাক, ওর বোধ হয় মন ভাল নেই, আমি করে দিই।” অনিমেষ তার ঘরের জামূল দিয়ে গলি পেরিয়ে যে মাঠ, তারই ধারে ধারে ভিজে গাছগুলোর দিকে চেয়ে ভাবচে—এ কিসের ব্যথা তার বুক তোলপাড় করছে, এর মূল কোথায় ? তারই পাশের ঘরে জান্‌লার গরীদের গায়ে মাথ রেখে নিশা ভাবচে,—এ কোন বেদন ওর মনকে এমন কাঙাল করে তুলেছে, এর শেষ কোথায় ? বাড়ীর সাম্নে আবার এসে গাড়ী দাড়ালো, মালপত্র ওঠানো হ’ল, ভাড়া নিয়ে বকাবকিও হ’ল, তত্ব নিশা নীচে এল না। উয নিজেই এসে চুমে থেয়ে বিদায় নিলে। অনিমেষ জোড়হাত করে দূর থেকে নমস্কার করলে—নিশ শূন্তদৃষ্টি মেলে চেয়ে রইল – কথা কইলে না । সঙ্কীর্ণ গলির কাদায়-ভরা রাস্তা দিয়ে গাড়ী এগিয়ে চললে , নিঃশব্দ বৃষ্টির জমা জল ছাদের কানিশ বেয়ে জানলার উপর পড়ে বিচিত্র বেদনাময় শন্স স্থষ্টি করলে , নিশা শুষ্ক শ্রান্ত চোখে বাইরের দিকে চেয়ে রইলো ।