পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bro লোকের সঙ্গে মিশিয়া তাহার আজকাল চোখ ফুটিয়াছে, সে আজকাল বুঝিতে পারে নিশ্চিন্দিপুরে তাহার গৃহস্থালী ছিল দরিদ্রের, অতি দরিদ্রের গৃহস্থালী। শিল্প নয়, শ্ৰী ছাদ নয়, সৌন্দৰ্য্য নয়, শুধু খাওয়া আর থাকা । নিৰ্ম্মল আসিয়া কাছে বসিল । অপু অ্যালজেব্রার শক্ত তাক কসিতেছিল, নিৰ্ম্মলা নিজের বইখানা খুলিয়া বলিল—আমায় ইংরেজীটা একটু বলে দেবেন দাদা ? অপু বলিল—এসে জুটুলে ?...এখন ও-সব হবে না, ভারী মুস্কিল, একটা আঁকও সকাল থেকে মিললো না! নিৰ্ম্মলা নিজে বসিয়া পড়িতে লাগিল । সে বেশ ইংরেজী জানে, তাহার বাবা যত্ব করিয়া শিখাইয়াছেন, বাংলাও খুব ভাল জানে। একটু পড়িয়াই সে বইখান বন্ধ করিয়া অপুর আঁক কসা দেখিতে লাগিল। খানিকট আপন মনে চুপ করিয়া বসিয়া রহিল। তাহার পর আর একবার ঝুকিয়া দেখিয়া অপুর কাধে হাত দিয়া ডাকিয় বলিল—এদিকে ফিরুন দাদা, আচ্ছ এই পদ্যটা মিলিয়ে— অপু বলিল—যাও ! আমি জানিনে, ওই তো তোমার দোষ নিৰ্ম্মল, আক মিলচে না, এখন তোমার পদ্য মেলাবার সময়—আচ্ছা লোক— নিৰ্ম্মল মৃদু মৃদু হাসিয়া বলিল-এ পদ্যট আর মেলাতে হয় না আপনার—বলুন দিকি—সেই গাছ গাছ নয়, যাতে নেই ফল— অপু আঁক-কসা ছাড়িয়া বলিল—ন ? আচ্ছা দ্যাথো— পরে খানিকট আপন মনে ভাবিয়া বলিল—সেই লোক লোক নয়, যার নাই বল—হ’ল না ? -- নিৰ্ম্মলা লাইন দুটি আপন মনে আবৃত্তি করিয়া বুঝিয়া দেখিল কোথাও কানে বাধিতেছে কি না । ঘাড় নাড়িয়া বলিল, আচ্ছা এবার বলুন তো আর একটা— —আমি আর বলব না—তুমি ওর কম দুষ্ট মি কর কেন ? আমি আকগুলো কসে নিই, তারপর যত ইচ্ছে পদ্য মিলিয়ে দেবে-— —আচ্ছ। এই একটা—সেই ফুল ফুল নয় যার— · - মাকে এখুনি উঠে গিয়ে বলে আসবে, নিৰ্ম্মলা— ঠিক বলচি —ওরকম যদি— প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড AAMAASAA AA ASASASA SAMA MAMA SAMAAAA سلام۔ مہمہ "بسم مہیب یاسمیہ নিৰ্ম্মলা রাগ করিয়া উঠিয় গেল। যাইবার সময় পিছন ফিরিয়া তাহার দিকে চাহিয়া বলিল—ওবেলা কে খাবার ব’য়ে আনে বাইরের ঘরে দেখবো— এরকম প্রায়ই হয়, অপু ইহাতে ভয় পায় না । বেশ লাগে নিৰ্ম্মলাকে । পূজার পর নিৰ্ম্মলার এক মামা বেড়াইতে আসিলেন । অপু শুনিল তিনি নাকি বিলাতফেরৎ—নিৰ্ম্মলার ছোট ভাই নন্তর নিকট কথাটা শুনিল । বয়স পচিশ ছাবিবশের বেশী নয়, রোগ শু্যামবর্ণ। এ লোক বিলাত ফেরৎ ! তাহার • আজন্ম সকল স্বপ্নের কাম্য, সকল কল্পনার সার্থকতা, সকল আশা উৎসাহের লীলাস্থল -বাল্যে নদীর ধারে ছায়াময় বৈকালে পুরাতন বঙ্গবাসীতে পড়া সেই বিলাত-যাত্রীর চিঠির মধ্যে পঠিত আনন্দ-ভরা পুরাতন পথ বহিয়া মরুভূমির পাশ্বের সুয়েজ খালের ভিতর দিয়া, নীল ভূমধ্যসাগর মধ্যস্থ দ্রাক্ষাকুঞ্জ বেষ্টিত কর্সিক দূরে ফেলিয়া সে মধুর স্বপ্ন মাখা পৃথ-যাত্ৰা !... এই লোকট। সেখানে গিয়াছিল ? এই নিতান্ত সাধারণ ধরণের মানুষটা যে দিব্য নিরীহুমুখে রান্নাঘরের দাওয়ায় বসিয়া মোচার ঘণ্ট দিয়া ভাত খাইতেছে ? ছু এক দিনেই নিৰ্ম্মলার মামা অমরবাবুর সহিত তাহার খুব আলাপ হুইয়া গেল। স্কুলের ছুটীর পর দুজনে মাঠে বেড়াইতে যায়, অপু তাহাকে শুধুই প্রশ্নের পর প্রশ্ন করে। স্কুল-লাইব্রেরীতে বিদেশ-ভ্রমণসংক্রান্ত সব বই আনিয়া সে পড়িয়া ফেলিয়াছে—বিশেষ করিয়া সমুদ্রভ্রমণ সংক্রান্ত । . . . . বিলাতের কত কথা সে জানিতে চায়। পথের ধারে সেখানে কি সব গাছ পালা ? আমাদের দেশের পরিচিত কোনো গাছ সেখানে আছে? প্যারিস খুব বড় সহর ? অমরবাবু নেপোলিয়নের সমাধি দেখিয়াছেন? . ডোভারের খড়ির পাহাড় ? ব্রিটিশ মিউজিয়ামে নাকি নানা অদ্ভূত জিনিষ আছে--কি কি ? ভেনিস্ ? : ইটালির আকাশ নাকি দেখিতে অপূৰ্ব্ব ? পাড়াগায়ের স্কুলের ছেলে, এত সব কথা জানিবার কৌতুহল হইল কি করিয়া স্বনীলবাবু বুঝিতে পারেন না। এত আগ্রহ করিয়া শুনিবার মত জিনিষ সেখানে আর কি