و e < প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড امام مهمی عیسیم همراه শিক্ষিত রুচি অনুসারে ) শালীনভাময় ছিল না। রাচির পল্লী-অঞ্চলের কোলেদের মেয়েদের দেখলে বুঝতে পারা যায়। খ্ৰীষ্টীয় পঞ্চম আর ষষ্ঠ শতকের প্রাচীন তামিল সাহিত্যে মেয়েদের পোষাক যা বর্ণিত হয়েছে, তাতে বোঝা যায় যে দ্রাবিড়-দেশে ঐ যুগে মালাবারের মতনই ব্যবস্থা ছিল । সাচী-বরহুতে, থগুগিরি উদয়গিরিতে, মথুরায়, অমরাবতীতে, মহাবলিপুরে, অন্যত্র সব জায়গার প্রাচীন ভারতীয় ভাস্কর্য্যের নারীমূৰ্ত্তি, আর অজণ্টার বাঘের সিত্তরবসলের আর সিংহলের সিগিরির ভিত্তি চিত্রের নারী-চিত্র—এ সব দেখে মনে হয়, মেয়েদের পোষাক বিষয়ে প্রাচীন অনায্য ভারত, ইন্দোচীন আর ইন্দোনেসিয়া একই দেশ ছিল । ভারতে হয় তো পাঞ্জাবঅঞ্চলে আর্য্য প্রভাবে—আর শীতের প্রভাবে—সভ্য ভব্য পরিচ্ছদই সাধারণ হ’য়ে গিয়েছিল, কিন্তু প্রায় সমগ্র ভারতে অনাৰ্য্য প্রভাবই বলবান থাকায়, অন্যত্র প্রাচীন রীতিই অক্ষুণ্ণ ছিল—অন্তত: বিদেশী তুর্কী মুসলমানের আগমন পৰ্য্যস্ত। স্বদুর বলিদ্বীপ প্রাচীন ভারতের এই পরিধেয়-বৈশিষ্ট্য আংশিক ভাবে রক্ষা ক’রছে। ভারতবর্যের নানা অঞ্চলের পোষাক নিয়ে কত না কথা বলা যায় —কত সংস্কৃতির সামাজিক রীতিনীতির লুপ্ত স্তর, গুপ্ত কথা, অতীত ইতিহাস এই পরিচ্ছদকে অবলম্বন ক’রে রয়েছে। পাঞ্জাবী মেয়েদের লহঙ্গা বা পাজাম, কুত্তী আর চাদর ; রাজপুতানার মেয়েদের লহেী, কাচলী, ওড়না ; উত্তর ভারতের আর গুজরাটের মেয়েদের সামনে-র্কোচ ডান-কাধ ঢাকা ঘোমট-টান। সাড়ী, আর ছপট্র ; মারাঠাদেশের মেয়েদের কাছ দেওয়া মাথা-খোল সাড়ী ; পশ্চিম বাচালার বা কাধ আর মাথা ঢাকা সাড়ী ; পূৰ্ব্ব বঙ্গের ফেরত দিয়ে পর সাড়ী —আর সঙ্গে সঙ্গে কোল মেয়েদের আর মালাবারী মেয়েদের অনাবৃত-উদ্ধাঙ্গ কাপড় পরার রীতি ;-এ-সবকে অবলম্বন ক’রে ভারতের নানান জাতের অতীত সংস্কৃতির খবর লুকিয়ে রয়েছে।—প্রাচীন ভারতে মেয়েদের গায়ের জামা যে ছিল না, তা নয় ; অজণ্টায় আর অন্যত্র তার ছবি আছে। কিন্তু অনাৰ্য্য পদ্ধতি অনুসারে গায়ে কিছু না দেওয়াই যে সাধারণ রীতি ছিল, এইটাই অনুমান হয় । বলিদ্বীপের মেয়ের অপূৰ্ব্ব সৌষ্ঠববতী, তম্বী। এদেশে কি মেয়ে কি পুরুষ কাউকেও আমরা অতিক্লশ বা অতিস্কুল দেখেছি ব’লে মনে হয় না। বলির মেয়ের। মাথায় করে সব জিনিস ব’য়ে নিয়ে যায় । কোথায় যেন প’ড়েছি, মাথায় ক’রে জিনিস নিয়ে যাওয়ার অভ্যাসের ফলেই মেয়েদের গতিভঙ্গী এই রকম ছন্দোময় হ’য়ে যায় । এরা যখন একক বা অনেকে সার বেঁধে জিনিস-পত্ৰ মাথায় ক’রে নিয়ে চলে,—কি তাদের দৈনন্দিন কাজে, কি উৎসব উপলক্ষে মন্দিরে বা স্থানীয় রাজবাটীতে—তখন এদের ঋজু শুদ্ধ-সংযত দেহ-স্বষম। আর রাজ্ঞীর মত গৌরব-দৃপ্ত চলন-ভঙ্গী এক অপূৰ্ব্ব অতি দুর্লভ সৌন্দর্ঘ্যের স্বষ্টি করে। এদেশের মেয়ের সাধাণতঃ ‘কাইন’ বা পরিধেয় বস্ত্রের জন্য একটা রঙই বেশী পছন্দ করে,—কৃষ্ণাভ নীল রঙ ; আর উত্তরীয়টার রঙ সাধারণতঃ হয় হলদে । বলিদ্বীপের উপরে রবীন্দ্রনাথ পরে যে চমৎকার কবিতাটি লেখেন, যেটা ১৩৩৪ সালের পৌষ মাসের ‘প্রবাসী’তে “বালী” নামে প্রকাশিত হয়, তাতে বলিদ্বীপের মেয়েদের পরিধেয়ে এই দুই রঙের কথা তিনিও লক্ষ্য ক’রে গিয়েছেন : “শিখিল পীত বাস মাটির পরে কুটিল রেখা লুটিল চারি-পাশ । নিরাবরণ বক্ষে তব, নিরাভরণ দেহে চিকন সোনা-লিখন উষা আঁকিয়া দিল স্নেহে ।” কটিতে ছিল নীল দুকুল, মালতী-মালা মাথে, কাকণ দুটা ছিল দুখানি হাতে ।” কষিত-কাঞ্চনাভ গৌরবর্ণ দেহে কটিদেশে কৃষ্ণনীল পরিধেয়ের উপর আবেষ্টত এই কাঞ্চন বর্ণের উত্তরীয়,-বর্ণ-সমাবেশ এতে অপরূপ সুন্দর হয় । মেয়েদের গায়ে গয়না নেই বললেই হয়— বড় জোর এক হাতে বা দু হাতে সরু র্কাকণ এক গাছি ক’রে পরে। এদের দেশের আর একটা রীতির কথা এইখানে.ব’লে নিই—হাটে বাটে মাঠে গৃহমধ্যে এই গাত্রাবরণ উত্তরায়ের যথাযথ ব্যবহার সম্বন্ধে মেয়েরা নিঃসঙ্কোচে উদাসীন হলেও, দেবমন্দিরের ভিতরে প্রবেশ
পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৩১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।