পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>)、 প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৭ . [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড SSASASBM MeeAMAeMMMAMMAMMMAAA AAAA AAAA AAAA AAAA AAAA AAA AAAS S AAAA S মত স্নেহ করিতেন। তখন আমরা ননদ, জায়ের মিলিয়া সকলে একসঙ্গে খাইতে বসিতাম। নতুন বে। আমি, তার উপর পাড়াগেয়ে মেয়ে, কাজেই ঘোমটার বহরটা বেশী রকমই ছিল, ঘোমটা ছাড়া এক মুহূৰ্ত্ত থাকিতাম না। থাইতে বসিবার সময় এক হাত ঘোমটার ভিতরেই কোন রকমে খাইতাম । আমার দেওর জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঘোমটা দেওয়াটা পছন্দ করিতেন না। আমি যখন খাইতে বসিতাম তখন পর্দার আড়াল হইতে, আমি কি করিয়া খাই দেখিবার জন্য প্রায়ই উকিঝুকি মারিতেন। খাওয়ার রকম দেখিয়া থাকিতে না পারিয়া, আমাকে নানারকম ঠাট্টা করিতে ছাড়িতেন না । নতুন ঠাকুরপোর ( জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ) গানে ঝোক খুব ছিল ও গান বড় পছন্দ করিতেন, একদিন আমার গান তার শুনিবার খুব ইচ্ছা হইল। স্বর্ণকুমারী—তারও এ-সব বিষয়ে খুব উৎসাহ ছিল, তিনি আমাকে সঙ্গে করিয়া তার কাছে লইয়া গেলেন। কি যে গাহিব কিছুই ভাবিয়া ঠিক্‌ করিতে পারিতেছিলাম না, মনে বড় ভয় ও লজ্জা করিতে লাগিল, শেষকালে যাহা একটু আধটু বাড়ীতে শুনিয়া শিথিয়াছিলাম তাহাই তার কাছে ভরসা করিয়া গাহিলাম। তিনি গান শুনিয়া খুলী হইলেন বলিয়া মনে হইল, এবং যাহাতে আরও ভাল করিয়া শিখিবার সুবিধা হয় তাহার বন্দোবস্ত করিয়া দিলেন । তখন বাড়ীতে বড় বড় ওস্তাদ গায়কেরা আসিয়া গান করিতেন, আমি মাঝে মাঝে সেই সকল গান শুনিয়া শিখিবার চেষ্টা করিতাম । এমনি ভাবে চার বৎসর বেশ মুখেই কাটিয়াছিল বিবাহের চার বৎসর পরে আমার স্বামী মস্তিষ্ক রোগে আক্রান্ত হইয়া সাড়ে তিন বৎসর ওই ভাবে কষ্টে কাটান। আমার বিবাহের পরই তিনি এণ্টে ক্ষা পরীক্ষা দিয়া উত্তীর্ণ হইয়াছিলেন। এই রোগের পূর্বে র্তাহার যথেষ্ট মেধাশক্তি ছিল বলিয়া আমার শ্বশুর, সমস্ত সংসারের তহবিলের আয়ব্যয় দেখিবার ভার তাহার উপর দিয়াছিলেন । ইহার পূৰ্ব্বে আমার মামাশ্বশুর হিসাবপত্র দেখিতেন, কিন্তু তারও মাথার দোষ থাকায় শ্বশুর তাহাকে ছাড়াইয়া দিতে বাধ্য হন। র্তাহার মখন এইরূপ অবস্থা হইল এবং দিন দিনই রোগের বৃদ্ধি হইতে লাগিল তখন আমার মনের অবস্থা বড়ই খারাপ হইয়া গেল, কি যে করিব কিছুই ভাবিতে পারিতাম না, বাড়ীর সকলে এবং আমার শ্বশুরশ্বাশুড়ী সকলেই তার জন্য চিন্তিত হইয়া পড়িলেন । আমার স্বামী স্নান আহার পর্য্যস্ত সব ছাড়িয়া দিলেন, ও সকলের উপর একটা র্তার সন্দেহের ভাব বাড়িতে লাগিল । এই সন্দেহ বাতিকের জন্য প্রায়ই আমাকে নানা রকম ভূগিতে হইত। যখন নানা রকম দুশ্চিন্তায় আমার মনকে অস্থির করিয়া তুলিত তখন আমি একটি ঘরে বসিয়া একলা একলা কাদিতে থাকিতাম । সে সময় আমার মেজ জা’ জ্ঞানদানন্দিনী তেতলার ঘরে থাকিতেন ; তিনি আমার এই দুঃখ সহিতে না পারিয়া আমাকে তার কাছে ডাকিয়া মায়ের মতন নানা রকম সাস্তনা দ্বারা আমার মনে শাস্তি দিবার চেষ্টা করিতেন । র্তার স্নেহ আদর যত্বে তখন আমার মনের ভিতর কত যে বল ভরসা আনিয়া দিয়াছিল তা এ সামান্য লেখার ভিতর দিয়া প্রকাশ করিতে পারিলাম না । আজও সেই কথা যখন মনে করি তখন ভক্তি শ্রদ্ধায় আমার মন তার প্রতি ভরিয়া উঠে ; তিনি যদি তখন উপস্থিত না থাকিতেন, তবে কি যে করিতাম বলিতে পারি না । জানকীনাথ, তিনিও সেই সময় ভাইয়ের ন্যায় আমার অনেক উপকার করেন । আমার . স্বামী খাওয়া-দাওয়া এক রকম ছাড়িয়াই দিলেন । তার উপর তার কাসি ও ইাপানী অল্প অল্প দেখা দিল, এইসব কারণে র্তাকে লইয়া আমি আমার বড় জা, নতুন বেী, আমার দিদি সকলে মিলিয়া বোলপুরে যাই । সেখানে গিয়াও খাওয়ার কোন পরিবর্তন হইল না। চায়ের চামচের এক চামচ ভাত বা কোনও দিন একটি পটল-পোড়া খাইয়া থাকিতেন। এমনি ভাবে সেখানে তিন দিন কাটিল, খাওয়ার বা শরীরের কোনই বদল না হওয়াতে তিন দিন পর আবার আমরা কলিকাতায় ফিরিয়া আসি ৷ দিন দিন শরীরের অবস্থা খারাপ হইতে থাকায় আমার শ্বশুর কিছুদিনের জন্য র্তাহাকে আলিপুর পাগ লাগারদে পাঠাইয়া দেন। সেখানে ছয়মাস থাকিয়া অনেকটা স্বস্থ হইয়া ফিরিয়া