পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ഹ--ാഹ পারে নাই। যতদূর সম্ভব সাধাসিধে ধরণের সাজপোষাক করিতেন, কিন্তু তাহাতেই তাহার দেহের সৌন্দর্ঘ্যকে আরও বাড়াইয়া তুলিত। হাতের উপর একবার একটি লোহার সিন্দুকের ডালা পড়িয়া যাওয়াতে সেই অবধি হাতের ব্যথায় প্রায়ই কষ্ট পাইতে থাকেন। পাচ ছয়জন বড় বড় ডাক্তার দেখানর পরও ভাল না হওয়াতে পুনরায় অস্ত্রোপচার করিতে হইয়াছিল। ক্ষতটি যখন শুকাইতেছিল সেই সময় একজন আচার্ষিানীর পরামর্শে তেঁতুলপোড়া বাটিয়া ক্ষতের চারিদিকে লাগাইবার পর বিষাক্ত হইয়া আবার পাকিয় উঠে। সেইটাই ক্রমশঃ ভিতরে দূষিত হইয় তাহার মৃত্যু ঘটে। আমার বড় জা, তারও সৌভাগ্য কিছু কম হয় নাই। র্যার দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মত পতিলাভ ভাগ্যে ঘটিয়াছিল, র্তারও ভাগ্যের কম জোর নয় । আমার বড় জা একত্রিশ বছর বয়সে পাচটি পুত্র ও দুইটি কন্যা রাখিয়া মারা যান। আটমাসের একটি সস্তান ভূমিষ্ঠ হইয়া মারা যাইবার পর হইতে র্তাহার শরীর অসুস্থ হইয়া পড়ে। নানা চিকিৎসার দ্বারা কোনও ফল না হওয়াতে শেষকালে মৃত্যু হয়। দ্বিপেন্দ্র, অরুণেন্দ্র, নীতেন্দ্র, সুধীন্দ্র, কৃতীন্দ্ৰ—এই পাচ পুত্র এবং সরোজা, উষা দুই কন্যা। ইহারা সব খুবই অল্প-বয়সে মাতৃহারা হইয়াছিল। জ্যেষ্ঠপুত্র দ্বিপেন্দ্রনাথের তখন ষোল বছর বয়স মাত্র । আমার বড় জ৷ আমাকে ঠিক নিজের ছোট বোনের মতন ভালবাসিলে আমিও তাকে সেইরূপ ভালবাসিতাম ও ভক্তি করিতাম। র্তাহার মৃত্যুর তিন মাস পূৰ্ব্ব হইতে কেন জানি না আমার মন বড়ই চঞ্চল হইয়া উঠিয়াছিল, কিছুতেই বাড়ীতে থাকিতে পারিতাম না। মৃত্যুর সময় আমি নিকটে ছিলাম, মৃত্যুর কিছু পূর্বেই সঙ্কেতের দ্বারা আমাকে জানাইলেন যে, তিনি তাহার স্বামীকে ও ছেলেমেয়েদের দেখিতে চান । আমি তৎক্ষণাৎ বড় ভাস্করকে তাহার ইচ্ছার কথা জানাইলাম। তিনি আসিবার অল্পক্ষণ আগেই র্তাহার প্রাণ বাহির হইয়৷ গেল। বড় জায়ের মৃত্যুর পর ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের ভার আমি প্রথমে বহন করিলাম, স্নান আহার MAMMAMMAAA SAAAAA SAAAAA সবই তারা আমার নিকট করিত। বড় মেয়ে সরোজার তখন বিবাহ হইয়াছিল, জামাই মেয়ের দেখাশুনা যাহা করিবার আমিই করিতে লাগিলাম। শ্বাশুড়ী এবং বড় জা, এই দুজনের মৃত্যুর পর আমার মনে বড়ই আঘাত লাগিল। বিবাহ হইয়া শ্বশুর-ঘর যখন করিতে আসি তখন আমার বড় জা, বড় ননদের আদরষত্বই বেশী পাইয়াছিলাম। অন্য ননদেরা তখন ছোট ছোট, কাজেই ইহাদের যতুটাই বেশী মনের মধ্যে গাথিয় গিয়াছিল। আমার মেজ জা বেশীর ভাগ সময় বিদেশে স্বামীর সহিত থাকিতেন, যখন তিনি বাড়ী আসিতেন তখন তাহার সকলের প্রতি আদরযত্বের কিছুমাত্র ক্রটি হইত না, সকলের খোজখবর লওয়া তাহার কার্য্যের ভিতর একটি প্রধান কাজ ছিল । তাহার আগমনে বাড়ীর সকলের আর আনন্দের সীমা থাকিত না । আমাদের সেই সময় বেশ-ভূষার বড়-একটা কিছু আড়ম্বর ছিল না। আমরা কেবলমাত্র একটি শাড়ী পরিয়া থাকিতাম, গায়ে জামা দিবার চলন ছিল না। তিনি প্রথমে বম্বে হইতে আসিয়া শাড়ীর নীচে পায়জামা পরা, সায় পরা, জামা পরা ও বম্বে ধরণের শাড়ী পরা আমাদের পরিবারের মধ্যে প্রচলন করিয়াছিলেন । তাই দেখিয়া বাহিরের অন্যান্য লোকেরা তাহার অনুকরণ করিতে থাকেন। বাড়ীর দাসদাসী ভিন্ন বাহিরের দর্জি, স্যাকরা, ইত্যাদি কাহারও অন্দরমহলে প্রবেশ করিবার হুকুম ছিল না, আমার মেজ জা-ই সেই নিয়ম ধীরে ধীরে ভঙ্গ করেন এবং ছায়াচিত্রকর (photographer) ডাকিয়া আমার বড় জার শ্বাশুড়ীর এবং বাড়ীর সকলের ছবি তুলাইয়াছিলেন। বড় জায়ের মৃত্যুর ছতিন বছুর পরে তাহার জ্যেষ্ঠপুত্র vদ্বিপেন্দ্রনাথের বরিশালের জমিদার রাখাল রায়ের জ্যেষ্ঠ কন্যা সুশীলার সহিত বিবাহ হয়। তার বাপ-মায়ের দেওয়া স্বশীলা নাম সার্থক হইয়াছিল—ধৰ্ম্মে কৰ্ম্মে স্বভাবে মায়ায় দয়ায় মনটি পূর্ণ ছিল। সে যখন যাহার নিকট আসিত সেই তাহার মিষ্ট ব্যবহারে স্বৰী । হইত। এত ভাল বউ পাওয়া সত্ত্বেও আমাদের ভাগ্যে তাহাকে লইয়া ঘর করা বেশী দিন ঘটিল না। সে