পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>Q ケ ്. -്ക്. -ു.ണ്....--ബാ ইংরেজদের পছন্দসই হইত ? হিংস্র প্রচেষ্টা কাহারও বিরুদ্ধে প্রযুক্ত হইলে, তাহা তাহার পক্ষে স্থখকর নিশ্চয়ই হয় না । কিন্তু ভারতবর্ষের লোকদের বর্তমান অস্ত্রাল্পতা ও অদলবদ্ধত বিবেচনা করিলে অনেক সরকারী ও বেসরকারী ইংরেজ অহিংস প্রচেষ্ট অপেক্ষ হিংসাত্মক প্রচেষ্টা পছন্দ করিতে পারে। কারণ, এখন ভারতে মারামারি কাটাকাটি যতটা হওয়া সম্ভব, তাহ দমন করা ও তাহার প্রতিশোধ লওয়া তাহাদের পক্ষে যত সহজ, অহিংস আন্দোলন দমন কর তত সহজ নহে। র্যাহারা অহিংসাকে ধৰ্ম্মমতের মত অলঙ্ঘনীয় বলিয়া মানেন না, তাহাদের এই কথা মনে রাখা উচিত । ব্রিটিশজাতির স্বার্থপ্রস্থত গৰ্হিত লবণ আইন ভঙ্গ করিবার গুরুত্ব সত্যা গ্রহীদের দ্বারা প্রস্তুত লবণের ওজনদ্বারা পরিমিত হইবার নহে । এই আইনলঙ্ঘন প্রচেষ্টার মানে, “আমরা পুথিবীর বৃহত্তম সাম্রাজ্যের শক্তিদ্বারা সমথিত অন্যায় আইন মানিব না এবং অন্যায়ের সমর্থক শক্তিকে আমরা ভয় করি না । তাহ আমাদিগকে অবনত করিয়া রাখিতে পারিবে ন৷ ” এই যে অন্যায়ের ও অধৰ্ম্মের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, ইহার শক্তি সত্যা গ্রহীদের সংখ্যা দ্বারা নিণীত হইতে পারে না । সত্যাগ্রহীদের সংখ্যা ত বাড়িতেছেই । অধিকন্তু একজন কাৰ্য্যতঃ সত্যা গ্রহীর জায়গায় দেশে হাজার লোক আছে, যাহার এই বিদ্রোহের সমর্থন করে, এবং তাহারাও কোন-নাকোন প্রকারে অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করিবে । ভারতবর্স স্বরাজ পাইলেও যে রকম আইন ও ট্যাক্স থাকিবে, বিদেশী গবন্মেন্টের সেরূপ আইন ও ট্যাক্সের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করিতে মহাত্মা গান্ধী নিষেধ করিয়া ঠিক্‌ কাজই করিয়াছেন ; কারণ, স্বরাজের মানে অরাজকতা, আইনশূন্যতা বা ট্যাক্সবিহীনতা নহে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ভাব জাগান ঠিক, কিন্তু অবুধ্যতার জন্য অবাধ্যতার উদ্রেক কোন বিবেচক ব্যক্তির অভিপ্রেত হইতে পারে না । যাহা স্বরাজের আমলে থাকিবে না, এরূপ ব্যবস্থা বন্দোবস্ত ও অবস্থা অনেক আছে । তাহদের বিরুদ্ধে চেষ্টা খুব চলিতে প্রবাসা—বৈশাখ, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড পারে। বিদেশী কাপড় বর্জনের চেষ্টা খুবই করা উচিত। এই চেষ্ট সরকারী বেসরকারী সমুদয় দেশী লোক করিতে পারেন । মদ আফিং গাজা প্রভৃতি নেশার জিনিষ যাহাতে নেশার জন্য ব্যবহৃত না হয়, তাহারও চেষ্টা খুব চলিতে পারে । সরকারী লোকেরাও নেশা করিতে বা অন্যকে নেশা করাইতে বাধ্য নন । এই উভয় উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য বক্তৃতা পুস্তিকাম্প্রচার প্রভৃতি ছাড়া, বিদেশী কাপড়ের দোকানের ও নেশার জিনিষের দোকানের সম্মুখে পিকেটিং প্রবর্তিত হইবে । কোন কোন ম্যাজিষ্ট্রেট ও পুলিস-কৰ্ম্মচারী সভা মিছিল প্রভৃতি বন্ধ করিবার ক্ষমতার অপব্যবহার করিয়া থাকে । এইরূপ অপব্যবহার হইলে তাহাদের হুকুম অনেকেই মানিতেছেন না। বর্তমান সিডীশুন আইন স্বাধীন মত প্রকাশের ও স্বাধীনতা লাভ চেষ্টার পরিপন্থী। এইজম্য ইহাও অনেকে মানিতেছেন না। এইরূপ আরও অনেক দৃষ্টান্ত দেওয়া যাইতে পারে। লবণআইন লঙ্ঘন অনেক জায়গায় বেআইনী ভাবে লবণ প্রস্তুত হইতেছে এবং এরূপ লবণ নানাস্থানে প্রকাশ্যভাবে বিক্ৰীও হইতেছে । ইহার জন্য অনেক নেতা ও অন্য সত্যগ্রহীকে সত্যাগ্রহের প্রথম দিনেই গ্রেপ্তার ও কারারুদ্ধ করা হয়। পরে আরও অনেককে দণ্ডিত করা হইয়াছে। কিন্তু প্রধান নেতা গান্ধীজির গ্রেপ্তারের সংবাদ এখন (২৮শে চৈত্র দ্বিপ্রহর ) পৰ্য্যস্ত আমরা পাই নাই । বোধ হয় তাহার বেশী বিলম্ব নাই। র্তাহাকে কারারুদ্ধ করিলেও নেতার অভাব হইবে না—যদিও সব বিষয়ে র্তাহার সমকক্ষ নেতা সদ্য সদ্য পাওয়া যাইবে না । লবণ আইন লঙ্ঘনের জন্য শাস্তির বৈচিত্র্য আমোদজনক । কাহারও এক মাস বিনাশ্রমে কারাবাস, কাহারও বা দুই বৎসর সশ্রম কারাবাসের ব্যবস্থা হইতেছে। জরিমান কাহারও ৫০০ টাকা, কাহারও বা ৩০০০ টাকা হইতেছে । ইহা কি খামখেয়ালী ব্যাপার, না মানুষ বুঝিয়া শাস্তির প্রভেদ করা হইতেছে ?