১ম সংখ্যা ] আরও কঠিন শাস্তি দিতে পারিতেন । কিন্তু একেবারে খালাস দিবার স্বাধীনত হয়ত তাহার ছিল না । যাহা হউক, এইরূপ বহুবারম্ভে লঘু ক্রিয়ায় বৰ্ম্ম৷ গবন্মেটের কি লাভ হইল ? তথাকার গবর্ণর বোক বমিলেন, সেনগুপ্ত মহাশয় অনেকট বিনি পয়সায় একটু বেড়াইয়া আসিলেন এবং পূৰ্ব্বাপেক্ষা বিখ্যাত ও জনপ্রিয় হইলেন, বিচারের সময় রেঙ্গুনের আদালতের সম্মুখে দাঙ্গা-হাঙ্গামা হইল, তথাকার নির্বাপিত বা স্তিমিতপ্রায় রাজনৈতিক আন্দোলন আবার জলিয়। উঠিল, ইত্যাদি, ত্যাদি । শুনিলাম, ম্যাজিষ্ট্রেটটি সেনগুপ্ত মহাশয়কে লঘু শাস্তি দেওয়ায় তাহার জাতভাই ইউরোপীয়দের দ্বারা লাঞ্জিত হইতেছেন । তিনি নাকি জাতিতে আইরিশ এবং যতীন্দ্রবাবুকে নিজের বাড়ীতে লইয়। গিয় চ। খাওয়াইয়াছিলেন। এই ব্যাপারে স্বসঙ্গত হইয়াছে। আগাগোড় যতীন্দ্রবাবুর আচরণ শ্ৰীমতী শস্নোদেবী পঞ্চাবের জলন্দরস্থিত কন্য। মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষয়িত্রী শন্নোদেবী প্রতিজ্ঞ કુમારી করিয়াছিলেন, যে, ঐ বিদ্যালয়ের জন্য এক লক্ষ টাকা তুলিতে না পারিলে তিনি আর জলন্দরে ফিরিয়া যাইবেন না। এইরূপ প্রতিজ্ঞ করিয়া তিনি ভারতবর্ষের নানা স্থানে চাদ আদায় २९ বিবিধ প্রসঙ্গ—বর্তমান সংগ্রামে নারীদের কর্তব্য Sున করিবার জন্য গমন করেন । কিন্তু এদেশে পয়ষট্টি হাজার টাকার বেশী তুলিতে পারেন নাই। তখন তিনি সমুদ্র পার হইয়া আফ্রিকা যাত্র করেন। সেখানে কেবল টাঙ্গানীক হইতেই পয়ত্রিশ হাজার টাকা পাইয়। তিনি দেশে ফিরিয়া আসিয়াছেন । তথাকার প্রবাসী ভারতীয়ের বেশ মুক্তহস্ত। তাহার সাহস ও পরার্থপরতায় মুগ্ধ হইয়া সেখানকার ইংরেজরাও র্তাহাকে টাকা দিয়াছিলেন । র্তাহার মত মহিলাকে দেখিয়া ভারতনারী সম্বন্ধে তাহীদের ধারণা কিছু পরিবর্তিত হইয়াছে। পঞ্জাব শ্ৰীমতী শস্নোদেবীর গৰ্ব্ব করিতে পারে, ভারতবর্ষ ও পারে। নারীশিক্ষার উন্নতি ও বিস্তুতির জন্য অল্পে অল্পে মহিলার উদ্যোগী হইতেছেন । র্তাহীদের পক্ষে শ্ৰীমতী শaোদেবীর দৃষ্টান্ত শিক্ষাপ্রদ, ও তাহার চেষ্টার সাফল্য উৎসাহজনক। বর্তমান সংগ্রামে নারীদের কর্তব্য স্বাধীনতার জন্য যে অহিংস সংগ্রাম আরম্ভ হইয়াছে, তাহাতে নারীদের কৰ্ত্তব্য র্তাহারা অনায়াসেই স্থির করিতে পরিবেন। আপাততঃ তিন প্রকার কাজ করিবার কথা হইয়াছে । পুরুষদের মত র্তাহারাও লবণআইন ভঙ্গ করিয়া লবণ প্রস্তুত করিতে পারেন । সত্য গ্রহীদের দ্বার প্রস্থত লবণ ত তাহারা নিশ্চয়ই ক্রয় করিয়৷ রন্ধনের কার্য্যে লাগাইতে পারেন । তাহ কোথা ও কিছু ময়ল বোধ হইলে জলে গুলিয়া থিতাইতে দিয়া উপরের জলটি রোদে রাখিলে বা জাল দিয়া লইলে পরিষ্কার লবণ পাওয়া যাইবে । বিদেশী কাপড় না কিনিয়া দেশী কাপড় কেন সম্পূর্ণরূপে মহিলাদের স্বেচ্ছাধীন। অনেক প্রসাধন ও বিলাসের জিনিষ, এমন কি অনেক পাদ্যদ্রব্যও, আজ কাল বিদেশ হইতে আনীত হইয়। মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র গৃহস্থদের বাড়ীতে ৫ ব্যবহৃত হয় । সুস্থ ব্যক্তিদের জন্য সে সমূদয় পরিত্যাগ মহিলাদের সাধ্যায়ত্ত। বিদেশী বস্থাদির দোকানে পিকেটিংগু র্তাহারা করিতে পারেন—বিশেষতঃ যে-সব প্রদেশে অবরোধ প্রথা নাই । র্ত্যহাদের আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে সুরা ও অন্য মাদকদ্রব্য ব্যবহার বন্ধ করিবার জন্য চেষ্টা তাহার করিতে পারেন, এবং সেই উদ্দেঙ্গে দরকার হইলে তাহারা সত্যাগ্ৰহ করিয়া উপবাস দিয়া থাকিতে পারেন। যে সব প্রদেশে অবরোধ প্রথ নাই, সেখানে মদ্যাদির দোকানে মহিলারা পিকেটিং করিতে পারেন। যে সব জায়গায় পর্দার চলন আছে,
পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৯৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।