পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা] বলছিলাম লেখাপড়া শিখতে ! তা যখন শিখলে না, তথন উপায় কি ? বামুনের ছেলে কচিবেল থেকে না হাটলে পা শক্ত হবে কেন ? যে বিয়ের যে মন্ত্র, বুঝলে না ? গৃহিণী কিছুই না বুঝিয়া বলিলেন,–কিন্তু— সনাতন বলিলেন,—আর ‘কিস্তু’ ‘টিস্থ নয়, কাল সকালেই রওন। তুমি আমি কিছু চিরকাল থাকবে। ন,—কচি পা শক্ত না হ’লে ভর দিয়ে দাড়াবে কিসে ? তখন শুয়ে শুয়ে আমাদেবই চতুর্দশ পুরুষ উদ্ধার করবে যে ! Ξ কয়েক মাস পরে শিষ্যবাড়ী বেড়াইয়া সপুত্র সনাতন যখন গৃহে প্রত্যাগমন করিলেন, তখন দেখা গেল, গদাধরের পুষ্ট বপু পুষ্টতর হইয়াছে এবং পথশ্ৰমজনিত অবসাদে সে মুখের সতেজ প্রফুল্লত একটুও হ্রাসপ্রাপ্ত হয় নাই। কক্ষে মস্তকে অসংখ্য দ্রব্যসামগ্ৰী বহিয়৷ আনিয়া প্রফুল্লচিত্ৰ দুই পিতাপুত্র বাটীর কয়েক মাসের ছুশ্চিন্ত দূর করিয়া দিলেন সত্য, কিন্তু গৃহে আসিয়া পুত্রের আহার লইয়। বড়ই বিপত্তি বাধিল । পূর্বের মত কড়াইয়ের ডাল ও শাকচর্চড়ি সে মুখে তুলিতে চায় না ; মোট চাউলের অগ্নও থালার পাশ্বে জড়ো হইতে থাকে। শিষ্যবাড়ীর সরস গব্যস্তৃত ও ঘন দুগ্ধের বিরহ তাহাকে বড়ই বাজিয়াছিল। স্মরণ করিয়া সদাই ম্ৰিয়মাণ হইয়৷ থাকিত । মাত এ দুশ্চিন্তার কারণ বুঝিলেন অন্তরূপ। উপযুক্ত পুত্রের অক্ষুধা ও আহারে অরুচি ! দৈহিক কোন রোগের লক্ষণ না পাইয়া মনের অন্ধকারে হাতড়াইয় দেখিলেন,–একটি মাত্র সন্দেহের উদ্রেক করে ; এবং তাহ। এই ক্রমবদ্ধিত বয়সের দোষ বা গুণ। স্কুলের পাঠ শেষ হইয়াছে, জীবিক-সংস্থানের মোটামুটি উপায়ও বিগত কয়েক মাসে আয়ত্ত করিয়া লইয়াছে, শুধু বাকী আছে–সংসারের মাঝে স্বপ্রতিষ্ঠ হইয়া মনুষ্য-জন্মের পরিপূর্ণতার আস্বাদ লওয়ার। মনুষ্যজন্মের একমাত্র চরম কামনা একটি ফুটফুটে টুকটুকে মেকী ጏbr¢ লুব্ধ রসন সেই অতীতের মুখ । ংলার-প্রবেশ-মুখে । বধু—এবং তাহার প্রতিষ্ঠা করিয়াই পিতামাতার কৰ্ত্তব্য শেষ । - এটুকু কল্পনায় অনন্ত সুখ । প্রতি সংসারের প্রত্যেক গৃহিণী ইহা কামনা করিয়া থাকেন। বধূজীবনের সায়াহ্নে শঙ্খ হুলুধ্বনির মাঝে পরম পুলকের সঙ্গে তাহারা গৃহলক্ষ্মীকে বড় আদরেই গৃহে বরণ করিয়া তুলেন। কিন্তু কামনার অবসানে কল্পনা যখন কল্পলোকে আত্মগোপন করে, তখন এই সোহাগহর্ষ আদরউচ্ছ্বাস ভাটার জলের মত দুই কুল হইতে সরিয়া গিয় শুধু তীরের কর্দম কঙ্করকেই প্রকাশ করে। সংসারী মন সে পথে চলিতে গিয়া প্রতিপদে প্রতিহত হয়, সংসারীর নয়ন সে দৃশ্যের কুীিতায় মনে মনে পীড়া অনুভব করিয়া থাকে। তার পর আরম্ভ হয়, কঠোর বাস্তবের অভিরূঢ় পদক্ষেপ, যাহার ধ্বনি প্রত্যেক সংসারীর একস্তি পরিচিত । যাহা হউক, গৃহিণী এ মনোসাধ একদ। কৰ্ত্তার নিকট প্রকাশ করিলেন । কৰ্ত্ত হাসিয়া জানাইলেন,— এ ইচ্ছা সম্প্রতি তাহারও চিত্তে জাগিয়াছে। স্বতরাং শুভস্ত শীঘ্ৰং । ম। এবং বোন একথা শুনিয়া আগ্রহ প্রকাশ করিয়া কয়েক ফোট চোখের জল ফেলিয়| জানাইলেন যে, ক্ষণস্থায়ী মানবজীবনে এই চরমস্থখকৈ চৰ্ম্মচক্ষের প্রত্যক্ষীভূত করিতে কালবিলম্ব করা মোটেই বিধেয় নহে । পৌত্রবধু যে কি অমূল্য জিনিয, তাহা একমাত্র বৃদ্ধ পিতামহীরাই জানে ইত্যাদি । সনাতন পত্রিী-অঙ্গুসন্ধানে ব্যাপৃত হইলেন। প্রথমতঃ, সুন্দরী সালঙ্কার কন্যার আকাজক্ষাই মনে জাগিয়াছিল, কিন্তু ক্ৰমে দেখিলেন তাহা একান্ত দুৰ্ল্লভ। যদি বা সুন্দরী মিলে, তো অলঙ্কার মিলে না, এবং অলঙ্কারের প্রাচুর্য যেখানে, সেখানে কন্যাকৰ্ত্তার আকাঙ্ক্ষাও উচ্চ। অবশেষে রূপ ছাড়িয়া চিত্তের দিকে মনোনিবেশ করিলেন । , - - ময়নাগাছির মাখন ভট্টাচার্ঘ্যের মধ্যম পৌত্রী নবতারার সঙ্গে সনাতন সম্বন্ধটা পাকা করিয়া ফেলিলেন। , মেয়ে দেখিলেন এবং কন্যাপক্ষের ফর্দ আদিও শুনিলেন। কালে রঙের উপর রৌপ্যের কষ লাগাতে চক্ষের পীড়া বা । চিত্তের বিমুখত কিছুই জন্মাইতে পারিল না। r