পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] মহারাণ রাজসিংহ S६७१ vywvశా-గి^* কিংবা জয়দেবের কন্ধি অবতারের মত “স্লেচ্ছনিবহু নিধনে কলয়সি করবালং’ হইতেন । কবি মান ঔরঙ্গজেব-চরিত্রের একদিক বেশ ফুটাইয়া তুলিয়াছেন “রসন রটন্ত মহমদ রম্বল, ইদহ, নিবাজ, রোজ। অতুল । 家 家 গরবর বদন্ত ফারসী গুমান, প্রাসাদ তিথ্য খণ্ডে পুরাণ ॥” তাহার জিহবায় সৰ্ব্বদা মহম্মদ রন্থলের নাম ; ইদ নমাজ ও রোজা পালনে তিনি ক্রটি করেন না ; অহঙ্কারে তিনি বিড়বিড় করিয়া ফারসী কথা বলেন ; প্রাচীন দেবালয় ও তীর্থ ধ্বংস করাই তাহার কাজ । হিন্দুদের রাজনৈতিক অদুরদশিত এবং অকৰ্ম্মণ্যতার ফলে দারার পরাজয় হইল। হিন্দুসমাজের এই দুর্দশার জন্য রাঠোর কচ্ছবাহের তুলনায় হিন্দুপতি মহারাণাও কম দোষী নহেন । রাজসিংহ হতভাগ্য দারার পূৰ্ব্ব উপকারের কোন প্রতিদান দেন নাই ; আন্তরিক সহানুভূতি থাকিলেও প্রকাশ্যে ঔরঙ্গজেবের সহিত বিবাদ করিতে তিনি সাহসী হন নাই। র্তাহার এরূপ দুৰ্ব্বলতা ও অকৃতজ্ঞতা শিশোদিয়া কুলের দূরপনেয় কলঙ্ক। তিনি চতুর রাজনৈতিক কিংবা দূরদর্শী নেতা ছিলেন না ; তাহার স্বধৰ্ম্মপ্রীতি ও স্বদেশানুরাগ ক্ষুদ্র মিবার-রাজ্যেই আবদ্ধ ছিল । মহারাণ সমস্ত হিন্দুসমাজের মুখপাত্র হইয়া “জিজিয়া” বা অ-মুসলমানের মুণ্ড-করের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন নাই। এ সম্বন্ধে যে চিঠি টড রাজসিংহের নামে চালাইয়াছিলেন, স্তর যদুনাথ তাহা শিবাজী কর্তৃক লিখিত বলিয়া প্রমাণ করিয়াছেন। তাহাকে অব্যাহতি দিয়া বাকী সমস্ত হিন্দুকে নিষ্পেষিত করিলেও তিনি ঔরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করিতেন কি না সন্দেহ । হিন্দুর মন্দির এবং মূৰ্ত্তি ধ্বংস ব্যাপারেও মহারাণার ভাব এরূপই ছিল। যশোবস্তের মৃত্যুর পর ১৬৭৯ খৃষ্টাব্দের প্রথমে সমস্ত মারবাড় রাজ্য মোগল সরকারে বাজেয়াপ্ত হইল। পরস্পর-বিরোধী মুসলমান ফৌজদারগণ মারবাড়ের প্রধান প্রধান শহর ও দুর্গগুলি হস্তগত করিয়া সৰ্ব্বত্র মন্দির ও মূৰ্ত্তি ধ্বংস স্বর করিল। তখনও মহারাণ নিশ্চেষ্ট ; বরং ঔরঙ্গজেবের কোপ-দৃষ্টি যাহাতে মিবারের উপর পতিত না হয় সেজন্য এপ্রিল মাসে সম্রাটের নিকট কুমার জয়সিংহকে পাঠাইয়া দিলেন ; তবুও ঔরঙ্গজেব মিবারের উপর জিজিয়ার দাবী ছাড়িলেন না। জুলাই মাসে দুর্গাদাস অসীম বীরত্বে যশোবস্তের পরিবার এবং শিশুপুত্র অজিতকে মোগলের হাত হইতে উদ্ধার করিয়া যোধপুর পৌছিলেন। মহারাণার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করিয়া সমস্ত রাঠোর-সর্দারগণ স্ত্রীপুত্র সহিত মিবার-রাজ্যে আসিয়া বাস করিতে লাগিল ; মহারাণা তাহাদিগকে বারখানি গ্রাম দান করিলেন এবং নানা প্রকারে সম্মানিত করিলেন । ঔরঙ্গজেব দেখিলেন মিবার জয় না করিলে রাঠোরেরা দমিত হইবে না। ১৬৭৯ খৃষ্টাব্দের ৩০শে নবেম্বর আজমীঢ় হইতে সসৈন্যে মিবার অভিমুখে অগ্রসর হইতে লাগিলেন। মহারাণ রাঠোর ও শিশোদিয়া-সর্দারগণকে দরবারে আহবান করিয়া পরামর্শ করিলেন। প্রত্যেকের মুখেই দুর্জয় সাহস ও অদম্য উৎসাহের উজ্জল জ্যোতি: ; সকলেই শত্ৰু-সৈন্যের উপর নিপতিত হইবার জন্য উংস্থক। কিন্তু বৃদ্ধ কুলপুরোহিত গরীবদাস নিবেদন করিলেন, আরাবল্লীর পৰ্ব্বতশিখর আশ্রয় করিয়াই রাণা প্রতাপ যুদ্ধে জয়লাভ করিয়াছিলেন ; সন্মুখসমরে সৈন্যবল ক্ষয় না করিয়া আরাবল্পীর দুর্গম গিরিসঙ্কট এবং বনজুর্গের আশ্রয় হইতে অতকিত আক্রমণে মুসলমান-সৈন্য ধ্বংস করা যুক্তিযুক্ত। চিতোর কিংবা উদয়পুর রক্ষার জন্য বৃথা সৈন্তক্ষয় না করিয়া মহারাণা আরাবল্লীর পাৰ্ব্বত্যপ্রদেশে আশ্রয় গ্রহণ করিলেন। ১৬৮০ খৃষ্টাব্দের জানুয়ারী হইতে ৬ই মার্চ পৰ্য্যস্ত ঔরঙ্গজেব উদয়পুরের বুকে ধ্বংসলীলা প্রকট করিলেন। এ যুদ্ধের বিস্তৃত বর্ণনা এখানে অনাবশ্বক। যুদ্ধ আরম্ভ হইবার এক বৎসর পরেই ২২শে অক্টোবর মহারাণ রাজসিংহের হঠাৎ মৃত্যু হয়। তিনি উচ্চশ্রেণীর রাজনীতিজ্ঞ না হইলেও সুদক্ষ সেনাপতি ছিলেন। মোগলেরা যাহাতে সমস্ত শক্তি মিবারের বিরুদ্ধে নিয়োগ করিতে না পারে, সেজন্য তিনি রাজপুতদিগকে মালব এবং গুজরাত প্রাস্ত লুট । করিতে পাঠাইয়াছিলেন । ইহাতে যে শুধু যুদ্ধের খরচ