পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

} e প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৭ ংসারটা হয়ে পড়ল একটা অত্যন্ত অনাবশ্বক ও অবাস্তর জিনিষ । নিজের মনের মধ্যে একটা বিরাট কল্পনার রাজ্য তৈরি করে তারই সিংহাসনে মশগুল হয়ে বসে রইলুম। আমাদের হালচাল দেখে প্রতিবেশীদের রসনা হয়ে উঠল ংবাদপত্রের চাইতেও তীক্ষু, আর অভিভাবকদের নির্যাতন করবার শক্তি দেখে জেলের কতৃপক্ষও হোতে লজ্জিত। কিন্তু আমাদের সে-সব দিকে ভ্ৰক্ষেপও ছিল না। আমরাও বলতুম, হে ভগবান এর। যে কি করছে তা এরা বুঝতে পারছে না—তুমি এদের মার্জনা কোরে । একদিন—সেদিন এই চাদ আর ছাতের কোণের সেই চাদমুখ অনেকক্ষণ ধরে আমাদের মনের মধ্যে প্রকাণ্ড একটা ঝড় তুলে সবেমাত্র অস্ত গিয়েছে। এমন সময় নিৰ্ম্মল বললে যে, একটি মেয়েকে সে ভালবাসে মেয়েটির বাড়ী তার মামার বাড়ীর পাশেই । মামাদের সঙ্গে তাদের খুব ভাব। সেইখানেই সেই কিশোরীর সঙ্গে তার প্রথম পরিচয়। কিন্তু পরিচয় এখন দু-পক্ষ থেকেই গভীর প্রেমে পরিণত হয়েছে। কিন্তু তার সঙ্গে মিলনের কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ মেয়েটির না-কি কোন এক জমিদারের ছেলের সঙ্গে বিয়ের একেবারে ঠিক হয়ে গিয়েছে। - নিৰ্ম্মলের এই কাহিনীটি যে ডাহা মিথ্যে কথা তা বুঝতে আমাদের কারুরই বাকী রইল না, কিন্তু কারুর মুখ দিয়েই তার একটি প্রতিবাদ বেরুলো না, কারণ ঘটনাটি মিথ্যা হলেও সেই ইতিহাসের মধ্যে এমন একটা শাশ্বত সত্য ছিল যা সমস্ত অসত্যকে ছাপিয়ে একটি অখণ্ড সত্যের মূৰ্ত্তিতে আমাদের কাছে প্রতিভাত হ’ল। নিৰ্ম্মলের কাহিনী শেষ হোতে-না-হোতে—আমাদের দীর্ঘনিঃশ্বাসগুলো পড়বার আগেই সত্যকুমার তার নিজের জীবনের একটা প্রেম-কাহিনীর বর্ণনা করলে । সত্যর পর বিমল—এমনি করে আবহাওয়াটা এমনি সংক্রামক হয়ে উঠল যে, আমিও কল্পনা থেকে নিজের জীবনের অমনি একটা কাহিনী তৈরি কোরে বলে দিলুম। t সকলেই নিজের-নিজের কাহিনী বললে বটে, কিন্তু মতিলাল কেবল দীর্ঘনিঃশ্বাসই ফেললে—বললে না [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড কিছুই। তাকে চুপ ক’রে থাকতে দেখে আমাদের মনে হ’ল যে, তারও নিশ্চয়ই একটা প্রেম-কাহিনী আছে। শুধু আছে নয়, তার মূলে কিছু সত্য আছে বলেই সেট। সে প্রকাশ করতে চায় না । আমরা তাকে চেপে ধরলুম—বলতেই হবে। মতিলালও কিছুতেই বলবে না। আপত্তি তার যতই দৃঢ় হোতে থাকে আমাদের সন্দেহও ততই ঘনীভূত হয়। শেষকালে অনেক বল|-কওয়ার পরে অত্যন্ত অনিচ্ছার সঙ্গে সে প্রকাশ করলে যে, তাদের বাড়ীর দোতলার ছাতের গায়েই আর একজনদের ছাত একেবারে লাগানো। এই বাড়ীরই একটি মেয়ের সঙ্গে তার খুব ভাব হয়েছে। তাকে সে ভালবেসেছে, প্রতিদানও পেয়েছে। তাকে সে বিয়ে করবেই—এতে যা হয় হবে। মতিলালের কাহিনীটি সংক্ষিপ্ত বটে, কিন্তু আমরা সকলেই মনে-মনে স্বীকার করলুম যে, এর মধ্যে মিথ্যার আমেজ একটুকুও নেই। চাদ ও চাদমুখ মতিলালের মত ছেলের মনেও প্রভাব বিস্তার করেছে জেনে মনে হোতে লাগল যেন সে আমাদের খুব কাছে এসে পড়েছে। মনে আছে তার পরদিন থেকে Gi to to Idioms & Phrases floors (isol বন্ধ রেখে তাড়াতাড়ি মাঠে আসতে আরম্ভ করলে। আর চাদমুখের চর্চা করবার জন্য গানের পরে আরও আধঘণ্টা আডডার সময় বাড়িয়ে দেওয়া হ’ল । এই রকম কিছুদিন যায়। দিনকয়েক মতিলালের দেখা নেই। তার বাড়ী কেউ চেনে না, কাজেই খোজ পাবারও উপায় নেই। ইতিমধ্যে একদিন সে আমাদের কাছে খুব গোপনে প্রকাশ করেছিল যে, তাদের মিলনের পথে দু-একজন লোক বাধা দেবার চেষ্টা করছে। সঙ্গে সঙ্গে এ কথাও জানিয়ে রেখেছিল যে, তাকে না পেলে সে আত্মহত্যা করবে । মতিলালের আদর্শনে আমরা উদ্বিগ্ন হ’য়ে দিন কাটাচ্ছি এমন সময় সংবাদ পাওয়া গেল যে, তার সাংঘাতিক অস্থখ, বুঝি এ যাত্রা আর বঁাচে না । মতিলালের অসুখের খবরটা যে কেমন ক’রে কোথা দিয়ে এসে পৌঁছল তা মনে নেই। খোজ পড়ল তার