পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S)ON9 প্রবাসী—আষাঢ়, ృ909 [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড শৈল, পুলিশে খবর দিলে দোষী নির্দোষী এথনি টের পাওয়া যাবে তা জানিস ? শৈল দমিল না, তেমনি নিভীক কণ্ঠে কহিল,— দু'দশ ভরি সোনার জন্যে যদি আত্মীয়স্বজনকে এমন লাস্থিত করাই তোমার ইচ্ছে হয় মেজদি, বেশ তাই কর। পুলিশ ডাক—প্রমাণ হোক । কিন্তু এ-ও ব’লে রাখছি, প্রমাণ করতে না পারলে, তার পরের ব্যবস্থা আমিই ক’রবো মনে রেখো । জনতা মুহূৰ্ত্তে সরিয়া গেল। মেজদিদি উপযুক্ত জবাব পাইয়া মুখ এতটুকু করিয়া শাসাইতে শাসাইতে গেলেন,–আচ্ছা দেখব, কার তেজ কতদূর গড়ায় ! যদি পুলিশ না ডাকি তো—ইত্যাদি। কিন্তু তিনি পুলিশ ডাকিলেন না, ডাকিলেন স্বামীকে, বলিলেন,-আর একদণ্ড নয়, এ চোরের বাড়ীতে থেকে আমার সর্বস্ব খোয়াতে পারব না-ডাক গাড়ী। নদিদি সেজবোঁয়ের মাথাটি সক্ষেহে কোলে তুলিয়া বলিলেন, চুপ কর সেজবৌদি—কেদ না। ওরা মানুষ নয়, চামার। কাল রাতে দেখলে তো একধাম লুচির জন্য বড়দিদির কি অপমানটাই না করলে ? তার দোষ নাতিনাতনীদের একটু ভালবাসেন, ম-মরা ছেলেমেয়েগুলো ! বাছার খাবে ব’লে একধামা লুচি ঠাকুরের ঠেয়ে চেয়ে নিয়ে ঘরের মধ্যে এনে রেখেছিলেন। ছোট বে অনায়াসে বল্পে কি না, বড়দি পরিবেশনের সময় সরিয়ে রেখেছে ! ছি-ছি ! ইতরের মত ওরা সামান্য জিনিষ নিয়ে কি ক’রে এমন লোক-হাসাহাসি করে আমি তাই ভাবি ! আরও একটা দুঃসংবাদ অবিলম্বে—প্রচার হইয়৷ পড়িল । জামাইয়ের হাতের হীরার আংটি পাওয়া যাইতেছে না। জামাই বাসরঘরে একবারমাত্র খুলিয়া বিছানার উপর রাখিয়া রাত্রিতে আহার করিতে গিয়াছিল, আসিয়া দেখে আংটি নাই। নূতন জামাই, কেহ রহস্ত করিয়াছে ভাবিয়া মুখ ফুটিয়া কিছু বলিতে পারে নাই। প্রাতঃকালে বরের পিতা আসিয়া আংটির খোজ করাতেই ব্যাপার প্রকাশ হইয়া পড়িয়াছে। কৌতুক পরিহাস গুরুতর আকার ধারণ করিয়াছে। ছোটবোঁ আসিয়া বড়বেীকে বলিল,—বড়দি যদি একবার ওর কাছে গুণিয়ে আসতে পার— বড়বে বাধা দিয়া গম্ভীর কণ্ঠে উত্তর দিলেন, তাতে ফল কি ছোটবোঁ । যে নিয়েছে সে এই বাড়ীরই লোক, আমাদের আত্মীয়। আমাদের জিনিষ যদিই আমরা ফিরে পাই তার লজ্জার অপমানটা ঢাকবো কি দিয়ে । চোর যেই হোক অপমানটা বিধবে গিয়ে আমাদেরই। লোকে বলবে অমুকের অমুক এই কাজ করেছে। না ছোটবেী—মাথা হেঁট আমি করাবো না, টাকার উপর দিয়ে যায় সে ভাল । উনি আংটি কিনে আনতে গেছেন । ন’দিদি অদূরে দাড়াইয়া সব শুনিতেছিলেন। দ্রতপদে সেখানে আসিয়া বড়বৌয়ের পায়ে একটা প্রণাম করিয়া কহিলেন,—মানুষ যে, সে এই কথাই বলে বড়বৌদি। ইচ্ছে করছে তোমায় পূজা করি। পরে ছোটবৌয়ের পানে ফিরিয়া হাসিমুখে কহিলেন,-আচ্ছা ছোটবে গণকেরা নিজের অদৃষ্ট গুণতে পারে না, নয় ? তা হ’লে অনেক ব্যাপারই জানতে পারা যেত।-- ছোটবেী মুখখানি কাচুমাচু করিয়া সহসা সক্রোধে বলিল,— টাকার গরমে তুমি ধরাখামা সরাখানা দেখো, না ন’দি আমরা ঘাস খাই না,—কিছু কিছু বুঝি। বলিয়া উত্তরের প্রতীক্ষণ না করিয়া দ্রুতপদে চলিয়। গেল । কনকের স্বামী বলিল,—সব দেখে শুনে মনে হয় কনক, আমরা বেশ আছি। আত্মীয়তার বালাই যার যত নেই সে তত সুখী। عي কনক কহিল,—আত্মীয়-বান্ধব নিয়েই তো সমাজ । তবে ওসব বজায় রাখতে গেলে, কিছু কিছু ত্যাগস্বীকার করতে হয়। নৈলে গণ্ডী ঘিরে কেউ কখনও পরিপূর্ণ স্বথটুকু পায় না। খোকা তাহার গালের কাছে কচি মুখখানি আনিয়া ডাকিল,—মা ! - চুকনক তাহার অধরে স্বন জাকিয়া দিতে দিতে হাসিয়৷