পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ФФ o প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩৩৭ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড বৎসর পরেও সংবেশকের আদেশ পালিত হইতে দেখা গিয়াছে, অথচ এই মধ্যবর্তী কালে সেই ব্যক্তির মনে আদেশের কোনো ধারণাই থাকে না । তাহাকে এ সম্বন্ধে কিছু জিজ্ঞাসা করিলে সে কিছুই মনে করিয়া বলিতে পারে না । আদেশ প্রতিপালন করিবার পর যদি তাহাকে জিজ্ঞাসা করা যায় যে, সে কেন ঐরুপ ব্যবহার করিল, তবে তাহারও কোনো সন্তোষজনক কারণ দেখাইতে পারে না, বলে আমার ইচ্ছা হইয়াছে করিয়াছি। এখন প্রশ্ন উঠিতেছে, কি করিয়া সংবেশিত ব্যক্তি সময়ের হিসাব রাখে এবং কি করিয়াই বা সে বুঝিতে পারে যে, নিদিষ্টকাল গত হইয়াছে । আরও একটি বিষয় লক্ষ্য করিবার অাছে। সংবেশকের আদেশ সংবেশিত ব্যক্তি নিজের স্বাধীন ইচ্ছা বলিয়াই মনে করে । সংবেশিত ব্যক্তির মনে যে কাল-গণনা চলিতেছিল এবং তাহার মনেরই কোনো অজ্ঞাত প্রদেশে যে সংবেশকের আদেশের ধারণা লুক্কায়িত ছিল তাহ মানিতেই হইতেছে। নিজ্ঞর্ণন মনেই এই ধারণা ছিল এবং নিজৰ্ণন মনই কাল নিরূপণ করিতেছিল এবং নিদিষ্ট সময় গত হইলে সেই আদেশকে ইচ্ছার আকারে সংজ্ঞানে ঠেলিয়। দিয়াছে বলিলে সৰ্ব্বাপেক্ষা সঙ্গত ব্যাখ্যা হয় । স্বপ্নতত্ত্ব বিচার করিলেও নিজ্ঞর্ণন মন মানিতে হয় । স্বপ্নে যে-সকল উদ্ভট কল্পনা দেখা দেয় তাহদের উৎপত্তিও নিজ্ঞর্শনে । নিজ্ঞর্ণনের রুদ্ধ ইচ্ছা ছদ্মবেশে ংজ্ঞানে দেখা দিয়া স্বপ্ন স্থষ্টি করে । নিদ্রণকালে আচল ও সচল মন মনোবিদ্যার ক্ষেত্রের পরিধি কতদূর বিস্তীর্ণ, এতক্ষণে তাহা বোঝা গেল। মনোবিং কেবল যে ংজ্ঞানেরই আলোচনা করিবেন তাহা নহে,– নিজ্ঞর্ণনস্থিত মানসিক ব্যাপারও তাহার আলোচ্য বিষয় । মনোবিদ্যার দুইটা দিক আছে। মনের বৃত্তি কি কি, এই সকল বৃত্তির পরস্পর সম্বন্ধ কি প্রকারের, তাহাদের স্বরূপই বা কি ইত্যাদির আলোচনা মনোবিদ্যার এক দিক । কোন প্রবৃত্তির বশে মানুষ কাজ করে, কোন প্রবৃত্তি জন্মগত, প্রবৃত্তিগুলির পরস্পর ঘাতপ্রতিঘাতের ফলাফলই বা কি, কি ঘটনায় মনে সাধু ইচ্ছা উঠে, কখনই বা মনে অসামাজিক ইচ্ছা জাগে, কেন একজন কবি হয় অপরে চিকিৎসক হয়, একই আবেষ্টনে থাকিয়াও কেনই বা বিভিন্ন মাতুষে বিভিন্ন ব্যবহার করে ইত্যাদি আলোচনা মনোবিদ্যার আর একদিক । এই দুই দিক পরস্পর বিযুক্ত নহে। প্রথমটির আলোচ্য বিষয়—মনের কাঠামো বা গঠন । ইহণকে অচল মন বলা যাইতে পারে। দ্বিতীয়টির আলোচ্য—মনের ক্রিয়া বা গতি । ইহাকে সুচল মন বলা যায়। মনকে এন্‌জিনের সহিত তুলনা করিলে বলা যাইতে পারে, প্রথমটিতে এন্‌জিনের কলকব্জার গঠন-সংস্থান ইত্যাদি বিচার করা হয় ; দ্বিতীয়টিতে এন্‌জিনের গতি, কি করিয়া এন্‌জিন দ্রুত চলে, কখনই বা আস্তে চলে, কি করিয়া বঁাশী বাজে ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা করা হয় । আমরা কয় প্রকার সংবেদন (sensation) অতুভব করিতে পারি, সংবেদনের স্বরূপ কি, প্রত্যক্ষ অন্তভূতিই (perception) বা কি, সংবেদনের সহিত প্রত্যক্ষের কি সম্বন্ধ বা প্রতিরূপের (image) সহিত প্রত্যক্ষের কি যোগ আছে, মনোযোগ কাহাকে বলে, কয়ট বিষয় একসঙ্গে অবধান করিতে পারি, দুই ব্যক্তির মধ্যে কাহার স্মৃতিশক্তি অধিক, চিন্তায় কি কি মানসিক বৃত্তি আছে, ইত্যাদি প্রশ্ন আচল মনের অস্তগত । কেন মনে রাগ হয়, বিরুদ্ধ প্রবৃত্তির সংঘর্যে মনোভাবের কি পরিবর্তন ঘটে, কেন একটা কাজ ভাল লাগে, অপরটা ভাল লাগে না, উদ্ভট চিন্তা কি করিয়া মনে উদয় হয়, কি করিয়া মাতুষ স্বপ্ন দেখে ইত্যাদি প্রশ্ন সচল মনের । বহুকাল যাবৎ মনোবিং আচল মনের তথ্য আলোচনায় ব্যস্ত ছিলেন । মাত্র অল্পদিন হইল সচল মনের দিকে তাহার দৃষ্টি পড়িয়াছে। অন্তদর্শন অচল ও সচল উভয় মনের তথ্যসমূহ অহুসন্ধান করিবার জন্য মনোবিং বিভিন্ন উপায়ের আশ্রয় গ্রহণ, করেন। এই সকল উপায়ের মধ্যে অন্তর্দশনই মনোবিদের প্রথম ও প্রধান অস্ত্র । বিভিন্ন ঘটনায় ও বিভিন্ন অবস্থায়,