পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭২ AAAA SAS A SAS SSAS SSAS SSAS SSAS SSAS SS SSAS SSAS SSAS SSASASAMAMAMAMAMMAMAAAS অপুর বুক উত্তেজনায় ও কৌতূহলে চিপ টিপ, করিতেছিল, কি বুঝি হয় ! বাবুটি বলিলেন,—জাহাজের চাকরীতে তোমাদের চলবে না হে ছোকৃর,—দ্যাথো একবার ওপরে মেরিন মাষ্টারের ঘরে খোজ করো। কিছুই হইল না। বি-আই-এস-এন তথৈবচ। নিপন ইউসেন কাইশাও তাই। টার্ণার মরিসনের আপিসে তাহদের সহিত কেহ কথাও কহিল না। বড় বড় বাড়ী, সিড়ি ভাঙিয়া ওঠা-নাম করিতে করিতে শীতকালেও ঘাম দেখা দিল । অবশেষে মরিয়া হইয়া অপু গ্ল্যাড ষ্টোন ওয়াইলির অাপিসে চারতলায় উঠিয়৷ মেরিন মাষ্টারের কামরায় ঢুকিয়া পড়িল । খুব দীর্ঘদেহ, অতবড় গোফ সে কখনও কাহারও দেখে নাই । সাহেব বিরক্ত হইয়৷ ঘণ্টা বাজাইয়া কাহাকে ডাক দিল। অপুর কথা কানেও তুলিল না। একজন প্রৌঢ় বয়সের বাঙালীবাবু ঘরে ঢুকিয়া ইহাদের দেখিয়া বিস্ময়ের স্বরে বলিল,—এ-ঘরে কি ? এস এস, বাইরে এস । বাহিরে গিয়া আনিলের মুখে আসিবার উদ্দেশ্য শুনিয়া বলিলেন,—কেন হে ছোকরা বাড়ী থেকে রাগ করে পালাচ্চ ? অনিল বলিল,—না, রাগ করে কেন পালাব ? —রাগ করে পালাচ্চ না তে এ মতি হ’ল কেন ? জাহাজে চাকুরী খুজচে, কোন চাকরী হবে জানে ? খালাসীর চাকুরী..এক বছরের এগ্রিমেণ্টে জাহাজে উঠতে হবে। বাঙালীর খাওয়া জাহাজে পাবে না.কষ্টের একশেষ হবে, গোর লস্করগুলো অত্যন্ত বদমায়েস, তোমাদের সঙ্গে বনবে না। আরও নানা কষ্ট-ষ্টোকারের কাজ পাবে, কয়লা দিতে দিতে জান হায়রাণ হবে—সে সব কি তোমাদের কাজ ?. —এখন কোনো জাহাজ ছাড় চে নাকি ? —জাহাজ তে ছড়িচে “গোলকুণ্ডা”—আর সাতদিন পরে মঙ্গলবারে ছাড়বে মাল জাহাজ-কলম্বো হ’য়ে ডারবান যাবে— দু’জনেই মহা পীড়াপীড়ি সুরু করিল। তাহাদের কোনো কষ্ট হইবে না, কষ্ট করা তাহাদের অভ্যাস আছে। প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড । দয়া করিয়া তিনি যদি কোনো ব্যবস্থা করেন ! অপু প্রায় কঁাদ কঁাদ হইয়া বলিল,—ত হোক, দিন আপনি জোগাড় করে—ওসব কিছু কষ্ট না—দিন আপনি—গার লস্করে কি করবে আমাদের ? কয়লা খুব দিতে পারবো.. কেরাণী বাবুটি হাসিয়া বলিলেন,—একি ছেলেখেল। হে ছোকরা ! কয়লা দেবে তোমরা ? বুঝতে তে৷ পারচো না সেখানকার কাণ্ডখানা ! বয়লারের গরম, হাওয়া নেই, দম বন্ধ হইয়া আসবে-চার শভেল কয়লা দিতে না দিতে হাতের শির দড়ির মত ফুলে উঠবে—আর তাতে ওই ডেলিকেটু হাত-হাফ জিরুতে দেবে না, দাড়াতে দেখলে ইঞ্জিনিয়ার সাহেব মারবে চাবুক—দশহাজার ঘোড়ার জোরের এঞ্জিনের ষ্টীম বজায় রাখতে হবে সব সময়, নিঃশ্বাস ফেলবার সময় পাবে না—আর গরম কি সোজা ! কুৰ্ত্তীপাক নরকের গরম ফার্ণেসের মুখে । সে তোমাদের কাজ ?. তবুও দুজনে ছাড়ে না । ইহার যে বাড়ী হইতে পলাইয়া যাইতেছে, সে ধারণা বাবুটির আরও দৃঢ় হইল। বলিলেন,- নাম ঠিকানা দিয়ে যাও তো তোমাদের বাড়ীর । দেখি তোমাদের বাড়ীতে না হয় নিজে একবার ঘাবো । কোনোরকমেই তাহাকে রাজী করাইতে ন পারিয়৷ অবশেষে তাহারা চলিয়া আসিল । একদিন অপু দুপুরবেলা কলেজ হইতে বাসায় ফিরিয়৷ আসিয়া গায়ের জামা খুলিতেছে,এমন সময় পাশের বাড়ীর জানালাটার দিকে হঠাৎ চোখ পড়িতে সে অার চোখ ফিরাইয়া লইতে পারিল না। জানালাটার গায়ে খড়ি দিয়া মাঝারি অক্ষরে মেয়েলি ছাদে লেখা আছে—“হেমলতা আপনাকে বিবাহ করিবে ।” অপু অবাক হইয়া খানিকট সেদিকে চাহিয়া রহিল এবং পরক্ষণেই কৌতুকের আবেগে হাতের নোটখাতাখানা মেজেতে ছুড়িয়া ফেলিয়া আপন মনে হো-হো করিয়া হাসিয়া উঠিল । পাশেই বাড়ী—তাহার ঘরট হইতে জানালাটা হাত পাচ ছয় দূরে—মধ্যে একটা সরু গলি। অনেকদিন সে দেখিয়াছে,পাশের বাড়ীর একটি মেয়ে জানালার গরাদে ধরিয়া এদিকে চাহিয়া রহিয়াছে । বয়স চোঁদ পনেরো।