পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] স্বগীয় অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় মহাশয়ের কয়েকখানি পত্র ○b"○ এই চিত্র আপনি ব্যবহৃত করিবেন না, আপনাকে সেরূপ অধিকার দানের অধিকার আমার নিজেরই নাই । কেবল আপনাকে গৌড়শিল্প চিনিবার উপযোগী একটি নিদর্শন দিবার জন্য ইহা পাঠাইলাম। আপনি শিল্পী, এই চিত্র সম্বন্ধে আপনার সমালোচনা জানিবার জন্য আশান্বিত হইয়া রহিলাম। কি গুণে গৌড়শিল্প আমার মত একজন শুষ্ক ঐতিহাসিককেও রসসিক্ত করিয়াছে, ইহাতে তাহার কিঞ্চিৎ পরিচয় পাইবেন । ইতি ( ७ ) ঘোড়ামার, রাজসাহী ১৫ বৈশাখ ১৩১৯ প্রীতিনমস্কার নিবেদন আপনার উপদেশপূর্ণ পত্র পাইয়৷ আনন্দ লাভ করিলাম। আপনি সাবধান না করিলেও, আমার পক্ষে যাহা তাহ it priori সিদ্ধাস্ত ধরিয়া অভিমত প্রকাশ করিয়া, দীর্ঘকালের ইতিহাসচর্চার গৌরব ক্ষুঃ করিবার সম্ভাবনা নাই । আমার অজ্ঞতাই আমার সাবধানতার অবলম্বন । যতক্ষণ না বুঝিতে পারি, ততক্ষণ বুঝিবারই চেষ্টা করি। যবদ্বীপাদির উপনিবেশ যে হিন্দু উপনিবেশ তাহা শুনিয়া তৃপ্তি হয় না,— কাহাদের উপনিবেশ জানিতে ইচ্ছা করে। এ বিষয়ে আমি যে সকল প্রমাণের যে ভাবে আলোচনা করিতেছি, তাহা কাহারও অভিমতের প্রতিধ্বনি নহে ; আমার নিজের অভিমত এবং তাহা কেবল প্রমাণের উপরেই প্রতিষ্ঠিত ; it priori সিদ্ধাস্ত নহে । পত্রে তাহার পরিচয় প্রদান করা অসম্ভব । তাহ প্রবন্ধে ও গ্রন্থে ক্রমশঃ প্রকাশিত হইবে। খৃষ্টীয় অষ্টম হইতে স্বাদশ শতাব্দী গৌড়শিল্পের উত্থানপতনের ঐতিহাসিক কাল। এই কালের মধ্যে যে শিল্পকলা গৌড়ে উদ্ভূত, উড়িষ্যায় শক্তিপ্রাপ্ত ও ষবদ্বীপে পরিণতাবস্থায় আরূঢ় হইয়াছিল, তাহাকেই আমি "গৌড়শিল্পকলা" বলিয়াছি। তাহার মধ্যে পূৰ্ব্বকালবৰ্ত্তী শিল্পপদ্ধতির ধারা অবশুই কিছু কিছু লক্ষিত হইতে পারে, কিন্তু তাহাতে গৌড়শিল্পের নিজের অস্তিত্ব নষ্ট হয় না। গৌড়শিল্পই যে ভারতবর্ষের সকল যুগের সকল শ্রেণীর শিল্পের মধ্যে সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট, আমি এমন দাবী উপস্থিত করিতে পারি না ; কেহ করেন কিনা জানি না । গৌড়শিল্প যে ভাবটির অভিব্যক্তি, তাহাকে ইতিহাসের মধ্যেই সন্ধান করিয়া বাহির করিবার চেষ্টা করিতেছি । তর্কস্থলে যদি আমার এই সিদ্ধান্তটি মানিয়া লণ্ডয়া যায়, তাহা হইলে গৌড়ের, উড়িষ্যার ও যবদ্বীপের শিল্পনিদর্শনগুলি এই সিদ্ধান্তের অন্থকূল হয় কি না, শিল্পের দিক দিয়া আপনার তাহার বিচার করিয়া দেখিতে পারেন। সেদিকে যদি এমন কিছু দেখিতে পাওয়া যায়, যে কিছুতেই আমার সিন্ধান্তের সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষিত হয় না, তখন না হয় শিল্পসৌন্দর্য্যের প্রমাণের বলে ভিন্নরূপ সিদ্ধাস্তের অবতারণা করিবেন। একটা theory না হইলে বিচার চলে না। আপনার আপাততঃ আমার অভিমতটিকে একটা theory মাত্র মনে করিয়াও বিচার করিয়া দেখিতে পারেন। তাহার অধিক আর কিছু বৰ্ত্তমান অবস্থায় দাবি করিতে চাহি না—আমাদের সম্পাদক মহাশয় ছবি দাগাইয় যে কি অপকৰ্ম্ম করিয়াছেন তাহা আপনার পত্র হইতে র্তাহাকে. শুনাইলাম। আমাদের সংগৃহীত নিদর্শনগুলি আমাদের’, আমার নহে। সমিতির অল্পমতি না পাইলে, তাহার ফটো ইত্যাদি দিতে পারি না ও কাহাকেও দেখাইতে পারি না । সমিতি পুস্তক লিখিতেছেন বলিয়াই এরূপ সাবধানতার প্রয়োজন বুঝিয়াও আমার অধিকার অতিক্রম না করি, এই আশঙ্কায় আপনাকে পূৰ্ব্বপত্র লিখিয়াছি। আপনার পত্ৰখানি সমিতিতে পেশ করিয়া, অনুমতি লইয়া, তালিকা ইত্যাদি পাঠাইব । গৌড়শিল্পের নিদর্শনগুলি নানা দেশে চলিয়া যাইতেছে বলিয়া আমরা তাড়াতাড়ি সংগ্ৰহ করিয়া রাখিতেছি—সে কেবল আপনাদের জন্যই। যোগ্য ব্যক্তি আসিয়া তাহার আলোচনা করিবেন, ইহাই উদ্দেশু। ইহার জন্য আমরা অনাহারে অকথ্য ক্লেশে নানা স্থানে যাতায়াত করিয়া ম্যালেরিয়াগ্রস্ত হইয়াছি। ইহাও আপনাদের জন্যই। আমরা কোথায় কি পাইলাম, কেমন করিয়া পাইলাম, কাহার নিদর্শন পাইলাম,—তাহাই লিখিয়া রাখিতেছি। তারানাথ ষে ধীমানের কথা লিখিয়া গিয়াছেন,তিনি কোথায়